ঠিকানা অনলাইন : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। নির্বাচনের পরে আন্দোলন ও অনাস্থা প্রকাশ করে তারা অনির্বাচিত সরকার আনার পরিকল্পনা করছে। আমি বিশ্ববাসীকে কথা দিয়েছি, চ্যালেঞ্জ দিয়েছি— অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করব। সেই চ্যালেঞ্জ আমাদের ওভারকাম করতে হবে। সংসদ নির্বাচনে প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হবে।
২২ জুন বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠকে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, শেখ হাসিনা তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘শুধু আমেরিকা নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী। তাদের সবাইকে দেখিয়ে দিতে হবে, আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।’
বিএনপিসহ কিছু দল নির্বাচনকে পণ্ড করার চেষ্টা করছে বলে বৈঠকে নেতাদের জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এটা মোকাবিলা করা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। এর বিপরীতে আমাদের কাজ হলো সুষ্ঠু নির্বাচন করা।’
নেতাদের উদ্দেশে দলীয় সভাপতি বলেন, ‘আগের ভোট হবে না। যারা আগের ভোটের স্বপ্ন দেখছ, তাদের ভোট করার দরকার নাই। আগের এমপি এবারও মনোনয়ন পাবে, সেই চিন্তা বাদ দাও। রিপোর্ট দেখলেই আমি বুঝি কীভাবে করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমেরিকা আমাকে উৎখাত করতে চায়।’ সিটি নির্বাচনের মতো প্রয়োজনে সংসদ নির্বাচনেও কেন্দ্রে ক্যামেরা থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপি ও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসবে না বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কিন্তু নির্বাচন করতে হবে। সেই নির্বাচন অনাস্থা প্রকাশ করে অনির্বাচিত সরকার বসাতে চায় তারা। তবে আমাদের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে সেটা ওভারকাম করতে হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, দলীয় সভাপতি তাদের জানান, ভোটের মাধ্যমে তাকে সরানো সম্ভব হবে না জেনেই এখন তাকে এবং তার সরকারের অর্জনকে ‘পচাতে’ একটি পক্ষ মাঠে নেমেছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর জবাব দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের অর্জন এবং বিএনপি জোটের অপকর্মের কথা তুলে ধরতে বলেন।
বৈঠকে বরিশাল সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি সে ব্যাপারে বলেন, ‘আমি যখন প্রার্থী দিয়েছিলাম তখন মনোনয়ন বোর্ডের কেউ সমর্থন করেনি। কিন্তু বিজয়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আমি ঠিক ছিলাম।’
এ সময় স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নেত্রী, আমি মনে মনে সমর্থন করেছিলাম। তখন শেখ হাসিনা বলেন, যে লোক মনোনয়ন বোর্ডে বসে মনে মনে কথা বলে তাদের তো বোর্ড মেম্বার করাও ঠিক হয় নাই!’
এ সময় কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘গণভবন খাওয়া ও বসার জন্য বানানো হয় নাই। নিজের এলাকায় যাও। সরকারের উন্নয়ন চিত্র মানুষের ঘরে ঘরে তুলে ধরো।’
দলের তৃণমূলকে আরও সুসংগঠিত করার নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। তিনি আওয়ামী লীগ সরকার যেসব উন্নয়ন কার্যক্রম করেছে সেগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরার নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে বিএনপির সময় তারা কীভাবে দেশ পরিচালনা করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, সেগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরার পরামর্শ দেন।
ঠিকানা/এনআই