ঠিকানা রিপোর্ট : যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করেছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন অব এনওয়াই (জেবিবিএ)। ৫ নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে বিপুল প্রবাসীর সমাগম ঘটে।
মাহফিল শুরুর আগে জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক আহমেদ তারেক হাসান খানের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেবিবিএ’র সভাপতি ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ।
আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা নিউ কার্ক ব্রুকলিনের বেলাল মসজিদের খতিব ড. মুফতি সৈয়দ আনসারুল করিম আল-আজহারী ও প্রধান মেহমান মাওলানা ড. সাইয়্যিদ এরাশাদ আহম্মেদ আল বুখারী মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনী নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা করেন।

বক্তারা বলেন, ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) মুসলমানদের জন্য এমন একটি আনন্দোৎসব, যার কোনো তুলনা হয় না। মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর দুনিয়ায় আগমন উপলক্ষে মক্কায় তাঁর জন্মোৎসব পালন করার প্রথাটি পালন করেন খোদ রসূলুল্লাহ (সা.) এর মহান দাদা মহাত্মা আব্দুল মোত্তালেব। আব্দুল মোত্তালেব তাঁর পবিত্র জন্মোৎসবের সূচনা করে গেলেও মহানবী (সা.) এর জীবদ্দশায় তাঁর পবিত্র জন্মোৎসব উদযাপনের খবর জানা যায় না। তাই রসূলুল্লাহ (সা.) এর জন্মোৎসব পালন করার সময় তাঁর জীবনচরিত, আদর্শ ও শিক্ষা আলোচনা করা একান্ত আবশ্যক। তবে এরূপ আলোচনা বা মীলাদ মাহফিল কেবল তাঁর জন্মদিবস বা জন্মমাসেই সীমাবদ্ধ নয়, সর্বদাই তা করা উচিত।
ইউটিউবভিত্তিক যেসব মাওলানা ঈদে মিলাদুন্নবীকে ‘বেদাত’ বলে উল্লেখ থাকেন, তাদের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, পবিত্র কোরান ও হাদিসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করা যাবে না এমন কথা কোথাও উল্লেখ নেই, কেউ দেখাতে পারবেন না। তাই এসব বিষয় ওয়াজ করা থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। মানবজাতির শিরোমণি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত। পৃথিবীবাসীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহানবী (সা.) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।
আইয়ামে জাহেলিয়াতের সেই যুগে মানুষকে আলোর পথ দেখিয়ে ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। দিনটি মুসলিম উম্মাহ বিশেষ তাৎপর্যসহকারে পালন করে আসছে।

বক্তারা বলেন, সীরাত গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জন্মের সুসংবাদে আব্দুল মোত্তালেব অসীম আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে মক্কায় আনন্দ প্রকাশার্থে অনেক লোকের মধ্যে তৎকালীন প্রথা অনুযায়ী, খাওয়ার দাওয়াতের আয়োজন করেছিলেন। হযরত মওলানা সৈয়দ মুফতী মোহাম্মদ আমীমুল এহসান মোজাদ্দেদী বরকতী (র.) এর বর্ণনা অনুযায়ী, বৃদ্ধ সর্দার আব্দুল মোত্তালেব পৌত্রের জন্মের সংবাদ শ্রবণ করে গৃহে আগমন করেন এবং নবজাতক শিশুকে খানা-ই-কাবায় নিয়ে যান ও দোয়া করেন। সপ্তম দিবসে আকীকা করে মোহাম্মদ (সা.) নাম রাখেন এবং সমগ্র কোরেশকে দাওয়াত করেন। তিনি বলেন, ‘আমার এই সন্তান সমগ্র বিশ্বে প্রশংসার অধিকারী হবে’। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)এর মিলাদ মাহফিলে আগত অতিথিদের চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান এর মাধ্যমে আপ্যায়ন করা হয়।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধান বক্তা নিউ কার্ক ব্রুকলিনের বেলাল মসজিদের খতিব ড. মুফতি সৈয়দ আনসারুল করিম আল আজহারী, প্রধান মেহমান মাওলানা ড. সাইয়্যিদ এরাশাদ আহম্মেদ আল বুখারী, মুফতি আব্দুল মালেক, হাফেজ রফিকুল ইসলাম,আল আমিন মসজিদের সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সেলিম হারুন, ফাহাদ সোলাইমান ও কর্নেল ফরিদ আকবর। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অনুষ্ঠান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন কমিটির আহবায়ক মোল্লা এম এ মাসুদ, সদস্য সচিব মফিজুল ইসলাম মফিজ, সাহাদাত হোসেইন রাজু ও আকাশ প্রমুখ।