ঠিকানা রিপোর্ট : জেল হত্যা দিবসে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এইচএম কামরুজ্জামানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে গত ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। সভা পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ।
সভাপতির বক্তব্যে ড. সিদ্দিকুর রহমান জাতীয় চার নেতার স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমরা যেন ত্যাগের ইতিহাস ভুলে না যাই। ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য বৃহত্তর স্বার্থকে যেন জলাঞ্জলি না দেই। জাতীয় চার নেতার প্রতি তিনি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম, সামছুদ্দিন আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, প্রচার সম্পাদক দুলাল মিয়া এনাম, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক মো. সোলায়মান আলী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান টুকু, কার্যকরী সদস্য শাহানারা রহমান ও জহিরুল ইসলাম, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহিন আজমল, সহ-সভাপতি শেখ আতিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সম্পাদক স্বীকৃতি বডুয়া, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন, বাংলাদেশ আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাখাওয়াত বিশ্বাস, ব্রুকলিন আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক- ইঞ্জিনিয়ার বাহার খন্দকার সবুজ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ নেতা সেবুল মিয়া, ইমরুল কায়েস, ,আতিকুর সুজন, কামাল হোসেন মিঠু, একরামুল হক সাবু, শাহীন আহমেদ, নিরলব নিতাই, নুরুল নব্বী, রাসেল আহমদ, সাইফুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নুরুজ্জামান সরদার, সহ সভাপতি জাফর আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিকুর রহমান তুরান, এইচ এম ইকবাল, সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, প্রচার সম্পাদক সাইফুল আলম, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর এইচ মিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. ফাহিম আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন ইমাম কাজী কাইয়্যুম।
জেলহত্যা দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি : জেলের অভ্যন্তরে মর্মান্তিক, করুণ, মর্মস্পর্শী শোকাবহ জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে জাতীয় চার নেতা স্মরণে ‘শোকার্ত হৃদয়ের শ্রদ্ধা’ শিরোনামে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী অংগসংগঠনের উদ্যোগে গত ৬ নভেম্বর রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের মামুন টিউটরিয়াল মিলনায়তনে এক শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা মঞ্চের উপদেষ্টা ড. প্রদীপ করের সভাপতিত্বে এবং দপ্তর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত শোকসভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা মঞ্চের উপদেষ্টা হাকিকুল ইসলাম খোকন, উপদেষ্টা রমেশ নাথ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর-ই আজম বাবু।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ বখতিয়ার, সদস্য ও শেখ হাসিনা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কায়কোবাদ খান, সদস্য আসাফ মাসুক, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা আখতার হোসেন, খসরুল আলম, শেখ হাসিনা মঞ্চের সভাপতি জালাল উদ্দিন জলিল, সহ সভাপতি টি মোল্লা, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুমানা আক্তার, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম,খন্দকার জাহিদুল ইসলাম ও একে চৌধুরী।
সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের এবং জেলে নিহত জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা। এই সকল হত্যাকাণ্ড থেকে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারী পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। জেলের মতো একটি সুরক্ষিত জায়গায় জাতীয় চার নেতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে খুনিরা চেয়েছিল জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে। তারা বাংলাদেশের ইতিহাস পাল্টে ফেলার চেষ্টা করেছিল।
খুনি মোশতাক-জিয়াই তাদের হত্যা করেছে বলে উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, মানবতার এই হত্যাকারীদের যারা পেছন থেকে কুশিলবের কাজ করেছে তাদের এখনো খুঁজে বের করা হয়নি। এই সকল কুশীলবের বিচারের আওতায় আনার জন্য বক্তারা সরকারের কাছে আহ্বান জানান।
ফ্লোরিডায় জেলহত্যা দিবস পালিত : ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে গত ৪ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্র্যাজি মারিয়ো রেস্টুরেন্টে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নান্নু আহমদ।
সভা পরিচালনা করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিব উদ্দিন। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ফজলুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন স্টেট আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি নাফিজ আহমেদ জুয়েল, ইমতিয়াজ হাসান, রানা খান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ইকরামুল ইসলাম ভূঁইয়া, ওসমান চৌধুরী অপু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার খান দিপু, তৌহিদুল ইসলাম খান, সাজ্জাদুর রহমান, আমিনুল ইসলাম বাবু, শেখ মাসুদ, টিপু আলম, লেয়কত চৌধুরী, যুব মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চেমন আরা উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক এরিনা খান, সহ-সভাপতি মিম খান, মহিলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি ডলি আহমেদ, নাজমুন নাহার ইওনা, ড. আসমা আক্তার রুবি।
নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- সাজ্জাদুর রহমান বাপ্পি, জহিরুল ইসলাম, তৌফিক রহমান ভূঁইয়া, আতিক, তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান বক্তা এম ফজলুর রহমান জাতীয় চার নেতার সাথে তার স্মৃতিবিজড়িত সময়ের রাজনীতি নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় চার নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অতি বিশ্বস্ত সহকর্মী। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তারা স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনায় নেতৃত্বদান করেন।
তিনি আরো বলেন, আমি শহীদ তাজউদ্দিনের সহচর ছিলাম। তাকে কাছে থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, জাতীয় চার নেতা খুবই সাধারণ জীবন-যাপন করতেন। এক কাপড়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করেন। ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর শহীদ তাজউদ্দীন হতে জেলখানা থেকে গোপন চিরকূট আদান-প্রদানের স্মৃতিচারণও করেন তিনি। এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।