ট্রাম্পের কঠোর হুঁশিয়ারি: নো ওয়াল, নো ইমিগ্রেশন বিল

ঠিকানা রিপোর্ট: নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে ভিনদেশী অবৈধদের অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছেনা। মরণ সাগর ও শ্বাপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দিয়ে মেক্সিকোর অরক্ষিত সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন অগণিত ভিনদেশি ভাগ্যান্বেষী যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বানের জলের মতোই ঢুকছে। এমনতর বাস্তবতার পটভূমিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কঠোরতর ইমিগ্রেশন আইন প্রণয়ন ও মেক্সিকো সীমান্ত প্রাচির নির্মাণের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের এক বছর পরও মেক্সিকো সীমান্তে কাক্সিক্ষত প্রাচির নির্মাণের কাজ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে না যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষোভ ও রাগ চরমে উঠেছে।
তাই বিক্ষুব্ধ কণ্ঠে ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন- যেকোনো ইমিগ্রেশনে লেজিসলেশনে (অভিবাসন আইনে) মেক্সিকো সীমান্তে প্রকৃত প্রাচির এবং ভেরি স্ট্রং বর্ডার সিকিউরিটি (অত্যন্ত বলিষ্ঠ সীমান্ত নিরাপত্তা) স্থান পাবেনা, তা নিয়ে কোনোক্রমেই আলোচনা শুরু হবেনা।
ফক্স এন্ড ফ্রেন্ডসকে ট্রাম্প গত ২৬ মে বলেন, সীমান্ত প্রাচীরের উন্নয়ন না করা অর্থাৎ বাস্তব প্রাচির নির্মাণ না হওয়া এবং বলিষ্ঠ সীমান্ত নিরাপত্তার উন্নয়ন না করা পর্যন্ত আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি যে অভিবাসনের কোনো আইনে আমি অনুমোদন দেবো না। তিনি জোর বলেন, ড্রিমার লেজিসলেশনে তিনি ফিরবেন না। তার ভাষায় ওই আইন দ্বারা বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বাজে অভিবাসন আইন-কানুনকে নিয়মতান্ত্রিকতায় আনা যাবেনা।
ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
লং আইল্যান্ড, বেথপেজের মরেলি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেন্টারের অভ্যন্তরে সিফোর্ড থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান দলীয় রিপ্রেজেনটেটিভ পিটার কিঙ, শার্লির রিপাবলিকান রিপ্রেজেনটেটিভ লি জেলডিন ও স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে রিপাবলিকান রিপ্রেজেনটেটিভ ডান ডনোভান; সাফক পুলিশ কমিশনার জেরালডাইন হার্ট ও নাশাউর পুলিশ কমিশনার প্যাট্রিক রাইডার এবং অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে রাউন্ডটেবিল সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই সভায় ট্রাম্প এমএস-থার্টিনের মতো কুখ্যাত চক্রের মূলোচ্ছেদ এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোরতম অভিবাসন আইন প্রণয়ন ও কার্যকরের সপক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্টপ প্লেইং পলিটিকস উইথ আওয়ার লাইফ (আমাদের জীবন নিয়ে রাজনৈতিক খেলা বন্ধ করুন) সেøাগান ও নানা ধরনের পোস্টার ব্যানারসহ প্রায় ৬৫ জন বিক্ষোভকারী বেথপেজে দুই ঘণ্টারও অধিক সময় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এদিকে বিক্ষোভকারীদের থেকে কয়েক গজ দূরে প্রায় এক ডজন ট্রাম্প সমর্থক ট্রাম্পকে স্বাগত জানানোর উদ্যোগ নিয়েছিল বলে জানা যায়। এছাড়াও ম্যানহাটানের লটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের এক ফান্ডরেইজিং অনুষ্ঠানে অপরাহ্নে ট্রাম্প যোগ দিলে এর বাইরে কয়েক ডজন লোক জড়ো হয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। লং আইল্যান্ড কমিউনিটি অর্গানাইজার ফর এ সিভিল রাইটস গ্রুপ ইন ম্যানহাটানের এ্যাক্টিভিস্ট এ্যাঞ্জেল রিইস বলেন, নিজের অভিবাসনবিরোধী এজেন্ডা এগিয়ে নেয়া এবং সব কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে ট্রাম্প এমএস-থার্টিনকে একটি এক্সিকিউ বা অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছেন। ড্যাকা তালিকাভুক্ত রিইস আরো বলেন, এমএস-থার্টিনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু সফল অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তাই এর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের যুদ্ধঘোষণার কোনো প্রয়োজন নেই। পেরুতে ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেয়া রিইস বলেন, মূলত এমএস-থার্টিনের সাথে আদৌ সম্পৃক্ত নয়, এমন সব অনেক কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীকেও ওই অভিযানের পাকড়াও করা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হবে।
হেম্পস্টিড এবং ব্রেন্টউডের ইমিগ্র্যান্ট রাইটস লিগ্যাল গ্রুপের খ্যাতনামা এ্যাটর্নি এলিসে ডামাস বলেন, ট্রাম্পের বারম্বার অভিবাসীদের নিন্দাবাস মূলত তার অভিবাসনবিরোধী গোঁড়ামিরই বহিঃপ্রকাশ বটে। তিনি আরো বলেন, আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করতে যাওয়া লোকজনকে ট্রাম্প এ্যানিমল বা পশু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ ধরনের আচরণ প্রেসিডেন্টের মুখে বেমানান বলেও দাবি করেন তিনি। ব্রেন্টউন্টের বাসিন্দা সিলভিয়া গার্সিয়া বলেন, নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ট্রাম্প স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের পরিস্থিতিকে মূলধন হিসেবে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। গার্সিয়া বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লং আইল্যান্ডে এসেছেন আমাদের স্থানীয় ব্যথা-বেদনার ওপর ভিত্তি করে তার প্রোফাইল তৈরি করতে এবং হেইট এজেন্ডাকে গতিশীল করতে।