ট্রাম্পের নির্বাচন কার্যক্রমের সাবেক প্রধান ম্যানাফোর্টের ৪৭ মাস দন্ড

ঠিকানা রিপোর্ট: শান্তিতে নেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজেই জন্ম দিচ্ছেন নানা বিতর্কের আবার তার পাশে পাশে যারা ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে চলছে নানা তদন্ত। এই সব তদন্তের মধ্যে ট্রাম্পের ছেলে- সন্তানসহ তার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরাও রয়েছেন। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রমের সাবেক প্রধান পল ম্যানাফোর্টকে জালিয়াতির দায়ে ৪৭ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। কর ফাঁকি, ব্যাংক জালিয়াতি ও বিদেশি অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থের সঠিক হিসাব না দেয়ার অভিযোগে একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার ডলার আর্থিক জরিমানাও গুনতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে প্রায় আড়াই কোটি ডলার। গত ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার ভার্জিনিয়ার আলেক্সান্দ্রিয়া আদালত তার এই শাস্তি ঘোষণা করে।

বিভিন্ন মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের তদন্ত করতে গিয়ে পল ম্যানাফোর্টের এই আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। দেখা যায়, ম্যানাফোর্ট রাশিয়াপন্থিদের কাছ থেকে কোটি কোটি ডলার গ্রহণ করেছেন। ইউক্রেনে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চালানোর সময় তিনি এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে গত বছর তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আটটি অভিযোগ উত্থাপন করে প্রসিকিউটর। তবে ম্যানাফোর্টের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, এর কোনোটির সঙ্গেই মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের যোগসূত্র নেই। মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলার রাশিয়া কানেকশন ইস্যুতে দীর্ঘ ২২ মাসের তদন্ত শেষ করতে চলেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি হুমকির মুখে পড়বে। এরই মধ্যে তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতারণা করার দায়ে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রমের সাবেক প্রধান ম্যানাফোর্টকে ৪৭ মাসের কারাদন্ড দেয়া হলো। যদিও ম্যানাফোর্টের যে সাজার আবেদন করা হয়েছিল, প্রাপ্ত সাজা তার চেয়ে অনেক কম। তবে শুধু এই সাজাতেই নিস্তার পাচ্ছেন না ম্যানাফোর্ট। আগামী সপ্তাহে অবৈধ তদবিরের আরেকটি মামলাতেও তার সাজা দেয়া হতে পারে।

বৃহস্পতিবার ম্যানাফোর্টকে ভার্জিনিয়ার আলেক্সান্দ্রিয়া আদালতে তোলা হয়। সেখানে তিনি বলেন, গত দুই বছর ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়। সত্যি বলতে, আমি বিব্রত ও লজ্জিত। এ সময়ে পেশাগত ও আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। এসব বিবেচনায় নিয়ে বিচারককে সহানুভূতিশীল হওয়ার আহ্বান জানান ম্যানাফোর্ট। পরে রায় দিতে গিয়ে বিচারক টিএস এলিস বলেন, ভুল কাজের জন্য ম্যানাফোর্ট অনুতাপ প্রকাশ করেননি। এতে তিনি বিস্মিত। সাজার বিষয়ে বিচারক এলিস বলেন, প্রসিকিউটর তার সাড়ে ১৯ থেকে ২৪ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড চেয়েছে। কিন্তু এই ধরনের অপরাধের জন্য এই সাজা অনেক বেশি। তবে ম্যানাফোর্টের ৪৭ মাস কারাদন্ড দেয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন ডেমক্রেট রাজনীতিকরা।