ট্রাম্প-যুগের অভিবাসন নীতি পুনর্বহাল করার বিল পাস

ঠিকানা রিপোর্ট : মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানরা সীমান্ত সুরক্ষা প্যাকেজের মাধ্যমে ট্রাম্প-যুগের অভিবাসন নীতি পুনর্বহাল করার একটি বিল পাস করেছেন। লাখ লাখ অভিবাসীকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে ব্যবহৃত মহামারি-যুগের জনস্বাস্থ্য জরুরি ব্যবস্থা অবসানের জন্য বাইডেন প্রশাসনকে চাপে রাখার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নেয় জিওপি। গত ১১ মে বৃহস্পতিবার হাউস ২১৯-২১৩ ভোটে বিলটি পাস করে। মাত্র দুইজন রিপাবলিকান বিপক্ষে ভোট দেন। এরা হলেন কেনটাকির প্রতিনিধি টমাস ম্যাসি এবং ক্যালিফোর্নিয়ার জন ডুয়ার্ট। তবে ডেমোক্র্যাট পার্টির সবাই এর বিপক্ষে ভোট দেন।
এইচ.আর-২ নামের প্রতীকী আইনটির সিনেটে কোনো ভবিষ্যত নেই। তবে এটি বাইডেন প্রশাসনের টাইটেল-৪২ বন্ধ করার বিপক্ষে জিওপির প্রতিরোধকে প্রদর্শন করে। টাইটেল-৪২ করোনাভাইরাসের মতো জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সময় অভিবাসীদের আশ্রয় দাবি করতে বাধা দেয়।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা করেছেন, জিওপি অভিবাসন প্যাকেজটি অপরিবর্তিত অবস্থায় তার ডেস্কে পৌঁছালে তিনি ভেটো দেবেন।
ক্যালিফোর্নিয়া রিপাবলিকান, হাউস স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি বিলটি পাস হওয়ার পর এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজ যেহেতু বাইডেন প্রশাসন টাইটেল-৪২ এর মেয়াদ শেষ করার অনুমতি দিয়েছে, তাই হাউস রিপাবলিকানরা আমাদের দেশের সীমান্তে বিশৃঙ্খলা মোকাবেলা করার জন্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এই আইন আমাদের সীমান্ত টহল এজেন্টদের সমর্থন করবে, আমাদের দেশে ফেন্টানাইলের প্রবাহকে বাধা দেবে এবং বাইডেন-সীমান্ত সংকটের অবসান ঘটাবে।’
কেভিন ম্যাকার্থি বলেন, ‘এটি ছিল এ দেশের এযাৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী সীমান্ত নিরাপত্তা বিল।’
টাইটেল-৪২-এর মেয়াদ গত ১১ মে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেষ হয়। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কোভিড-১৯ জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সমাপ্তি ঘোষণা করায় এর মেয়াদ শেষ হলো।
ফ্লোরিডার রিপাবলিকান প্রতিনিধি মারিও দিয়াজ-বালার্ট জিওপি বিলটি হাউসে উত্থাপন করেন। এই বিল অনুযায়ী মেক্সিকো সীমান্তে শত শত মাইল সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু করা হবে, অলাভজনক তহবিল থেকে অভিবাসীদের সহায়তায় অর্থপ্রদান বন্ধ করবে, বর্ডার পেট্রোল এজেন্টদের কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধি করবে এবং প্যারোল প্রোগ্রামের ব্যবহার সীমিত করবে। বাইডেন প্রশাসন হাইতি, কিউবা, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ীভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য এই প্যারোল প্রোগ্রাম ব্যবহার করে।
দিয়াজ-বালার্ট বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত করার কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই টাইটেল-৪২ অবসান করার অনুমতি দেওয়া কেবল অবহেলাই নয়, এটি আমাদের দেশের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থকে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে।’
শীর্ষ হাউস ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি হাকিম জেফ্রিস বলেন: ‘এই আইন এমন শিশুদের বের করে দেবে যারা পালিয়ে যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে চরম সহিংসতা ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এটি একটি মধ্যযুগীয় সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণ করবে- যা ২১ শতকের সমস্যার ১৪ শতকের সমাধান।’
টেক্সাসের প্রতিনিধি সিলভিয়া গার্সিয়া ওবামা আমলের অভিবাসীদের ছবি দিয়ে বলেন, ‘এই বিলটি চরম ও ভুল। এই বিল কোনোভাবেই সীমান্তকে সুরক্ষিত করে না। আসলে এটি কেবল নিরাপত্তাকে আরও খারাপ করে তুলবে। এটি আশ্রয়প্রার্থী এবং সঙ্গীহীন কিশোর ও শিশুদের সঙ্গে পরিবারসহ যারা দারিদ্র, ক্ষুধা ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে বেড়ায় তাদের উপর একটি আক্রমণ। এটা রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্য আমাদের সীমান্তে চ্যালেঞ্জকে কাজে লাগায় এবং যারা নিরাপত্তা ও উন্নত জীবনের খোঁজে আমাদের দেশে আসছে তাদের দুর্ভোগ বাড়ায়।’
একদিকে কেন্দ্রীয় সরকার যখন তার অভিবাসন বিল নিয়ে কাজ করছে, তখন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস গত ১০ মে বুধবার একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন। এ বিল অবৈধ অভিবাসীদের ফ্লোরিডায় কাজ করা কঠিন করে তুলেছে।