ঠিকানার কবিতাগুচ্ছ

গুণ বিচার করে না কেউ আর

দেওয়ান নাসের রাজা

এমন হতেই পারে গোলকীপারের ভুলে
বাংলাদেশ গোল খাবে,
এমন হয়েছে তো সব পথ থেমে থেমে
স্টেশনে ঐ গাড়ি আসে।
তবু যদি বারেবারে একই ভুল কেউ
করে-
কোচ তো ফেঁসে যাবে।

মিথ্যার বড়াই করে জগতের মাঝে
চলে যায় কবরে,
হুঁশ নেই কেন যে-ব্যবসায়ী নেতা হলে
টাকা জমে ঘরে।

পাতি নেতা আরো বড় নেতা হলে
বাড়ি গাড়ি সব হবে তার,
মালতী রাগ করে, সেই নেতা চোখ তুলে
বাছবিচার নেই নেতার।
গুণ বিচার করেনা কেউ আর
চাঁদাবাজও দলের বাহার।
কেন মানুষে ভোঁ দেয় চিহ্নের ?
চিহ্নটা হয়ে গেছে ধর্মের।
নিউইয়র্ক।

ছোট ছোট আশা

লাবলু কাজী

আমার ছোট্র সেই গ্রাম
ছোট ছোট আশা,
নেই কোন ঝামেলা
মায়া ডোরে বাঁধা পড়েছে জীবন!
ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দু
আমার ষোল বছরের যৌবনা প্রেয়সীর
নাকের ডগায় জমে থাকা ঘামেরই যেন সৌরচিত্র।
তার হরিণী নয়ণা আঁখি যূগল দেখতে যেন ক্লিউপেট্রা
শরীর যেন মোনালিসার ছবির মতো
দন্ডায়মানে রোমাঞ্চে শিহরণ খেলে।
অপলক নেত্রে অবলোকনে আমার আঁখি
জহুরীর মত পরখ করছে, মনপ্রাণ সমস্ত
হ্রদয় আবেগে জ্বলে উঠে বহে ঝড়
যেন ভিসুবিয়াসের অগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের মতো
প্রলয়ঙ্কের তান্ডব আত্মার বিধ্বস্ততায়
সেই সব স্মৃতির মায়া জ্বালে আমি আবদ্ধ ।
সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলো
ভুলি কিবা সনে কিসেরও লাগিয়া….!
নিউ ইয়র্ক।

দুঃস্বপ্ন

আব্দুল আজিজ

নিঝুম রাতে ঘুমের ঘোরে
উড়ে বেড়াই নিতি,-
মনের সুখে বেড়াই ঘুরে
আনন্দে গাই গীতি।

একদা যখন শূন্যে আমি
ভাসছি মাঝ রাতে,-
ঠিক তখনই ধাক্কা লাগি
কালো মেঘের সাথে।

শো – শাই – শাই যাচ্ছি পড়ে
অচিন কোন দেশে,-
প্রভুর নামটি স্মরি আগে
প্রাণ বুঝি যায় শেষে।

ধপাস শব্দে জেগে দেখি
আমি খাটের নিচে,-
কী ভয়ানক স্বপ্নরে ভাই
একটুও নয় মিছে।
নিউ ইয়র্ক।

বিড়ম্বিত জীবন

রুনু হক

একজনের দুঃখ
বোঝেনা আরেকজন
যদি না হয় ভুক্তভোগী।
একজনের অর্ধ পঙ্গু
সন্তান।
অন্যজনের চক্ষুশূল।
দয়াহীন নিষ্ঠুর মানুষ
ভাবে ওরা করুণাকামী,
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যই প্রাপ্ত ওদের।
কিন্তু মূর্খরা জানেনা
আজকের সুখ
কতোুঁকু স্থায়ী।
পৃথিবীর সব কিছুই
ক্ষণস্থায়ী, তাদের প্রাসাদ।
তাই মনে-প্রাণে
ভালোবাসার বীজ
বুনে যাও সর্বত্র।
নিজের আনন্দের
সাথী করে নাও
দুঃখী জনে।
অসুস্থ শোক-কাতর
মানুষকে করোনা
অবহেলা।
নর্থ ক্যারোলিনা।