ঠিকানা আপন আলোয় উদ্ভাসিত

মুক্তারা বেগম নদী :

এই ব্যস্ত শহরে শীতের বিকেলে হিম হিম ঠান্ডা বা বরফাচ্ছাদিত সকালে কাজে যাওয়ার সময় কিংবা কোনো এক বসন্ত বিকেলে এমনকি খটখটে রোদ্দুরে কাজের ফাঁকে বা পরে এক কাপ চায়ের সঙ্গে বাঙালির অন্যতম প্রিয় পত্রিকা ঠিকানা হলে কেমন হয়? ভালো হয় নিশ্চয়।

রাজনীতি, সমাজ, সাহিত্য, সংস্কৃতির আলোচনা, সেই সঙ্গে চাকরি বা বাসার খোঁজে সবার মতো আমারও আপন ‘ঠিকানা’ পত্রিকা। নিউইয়র্ক আমার কাছে এক নির্মম নিষ্ঠুর শহর। এই শহরে ‘লোক আছে মানুষ নেই, জন আছে মন নেই’। জানি, অনেকেই আপত্তি করবেন, তা করতেই পারেন। এ আমার একান্ত অভিজ্ঞতা। তো এই ইট-কাঠের শহরে হাজার হাজার বাঙালির মতো আমারও প্রিয় ‘ঠিকানা’ পত্রিকা।

তার সঙ্গে পরিচয়ের শুরুটা হয়েছিল ‘ঘর’ খুঁজতে গিয়ে। লাখো কোটি মানুষের মতো আমিও এই শহরে এসেছিলাম ‘ঘর’ বাঁধতে, ঘর খুঁজতে। সেই খোঁজ করতে গিয়ে ‘ঘর’ না পেলেও ঠিকানা পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাগুলোর মধ্য দিয়ে বাঙালি লেখক পরিবারের একজন মানুষ হিসেবে কিছুটা পরিচিতি হয়েছে হয়তো।
তবে এতটা পরিচিত নয় যে লোকে পথ চলতে থামিয়ে জিজ্ঞেস করবে, আপনি কি ‘লেখিকা মুক্তারা বেগম নদী?’ শুধু একদিন ছাড়া।

তখন কুইন্সে কাজ করতাম, সারা দিন কাজের পর ট্রেনের জন্য অপেক্ষারত আমি কিছুটা অন্যমনস্ক আর ক্লান্ত ছিলাম। এক বাঙালি ভাই বেশ কিছুক্ষণ মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কি ঠিকানা পত্রিকায় লেখেন?’ স্বভাবতই ভালো লেগেছিল। ঠিকানা আপন আলোয় উদ্ভাসিত। নতুন করে আমি কী-ইবা লিখব। তা ছাড়া লেখালেখির সঙ্গে আড়ি চলছে আমার। ঠিকানার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে পত্রিকার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সকল লেখক-পাঠকের জন্য অবিরাম শুভকামনা। ঠিকানার অগ্রযাত্রা আরও উজ্জ্বল, সুন্দর ও দীপ্তময় হোক।

লেখক : কবি ও কথাসাহিত্যিক।