ডজন ব্যাংকে লেনদেন বন্ধ

ঠিকানা রিপোর্ট : মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে দুটি ব্যাংক বন্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার জেরে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ব্যাংকের শেয়ারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
গত ১৩ মার্চ সোমবার সকালে ইউরোপের দেশ স্পেনের স্যানটানডার ও জার্মানির কমার্জ ব্যাংকের শেয়ারদর ১০ শতাংশের বেশি পড়েছে।
তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোর। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোর বাজার মূলধন কমেছে ৯০ বিলিয়ন বা ৯ হাজার কোটি ডলার। এ নিয়ে গত চার দিনে তাদের বাজার মূলধন হ্রাসের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯০ বিলিয়ন বা ১৯ হাজার কোটি ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোর মধ্যে আবার সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে আঞ্চলিক ব্যাংকগুলো। সার্কিট ব্রেকার ট্রিগার করায় ডজন খানেক ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের শেয়ারদর ৭৫ শতাংশের বেশি কমেছে। এমনকি সে ব্যাংকে নতুন বিনিয়োগ আসছে, এমন খবরও বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে পারেনি। তবে এ ক্ষেত্রে ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিসের ভূমিকা আছে। কারণ, তারা এ ব্যাংকের ঋণমান হ্রাসের জন্য পর্যালোচনা করছে।
এছাড়া উটাহ-ভিত্তিক জিয়নস ব্যানকর্প প্রায় ২০ শতাংশ, কমেরিকা প্রায় ৩০ শতাংশ, ইস্ট ওয়েস্ট ব্যানকর্প ৩০ শতাংশ এবং বার্মিংহাম, আলাতে সদর দফতর রিজিয়ন ফাইন্যান্সিয়াল প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে।
বড় ব্যাঙ্কগুলোর শেয়ারগুলো কম প্রভাবিত হয়। সিটি গ্রুপ এবং ওয়েলস ফার্গো ৪ শতাংশের বেশি, ব্যাংক অফ আমেরিকা ৩ শতাংশের বেশি এবং জেপিমরগান চেজ প্রায় ১ শতাংশ কমেছে। কেবিডব্লিউ ব্যাঙ্ক সূচক ১০ শতাংশ কমেছে।
এছাড়া ইউরোপের স্টক্স ব্যাংকিং সূচকের পতন হয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ ও ক্রেডিট সুসির পতন হয়েছে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এশিয়ায় জাপানের ব্যাংকিং উপসূচক ডটআইবিএনকেএস ডটটির পতন হয়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
এই পরিস্থিতিতে বাজারে আরেক গুজব সৃষ্টি হয়েছে। সেটা হলো, বাজারের এই অনিশ্চয়তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ হয়তো নীতি সুদহার বৃদ্ধির ধারা থেকে বেরিয়ে আসবে।
মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে গিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ও বিশ্বের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বাড়িয়েছে। তবে এটা যে আর্থিক ব্যবস্থা ও বিশ্বজুড়ে বাজারের ওপর কতটা চাপ তৈরি করেছে, তার নজির হচ্ছে সিলিকিন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ হওয়া। নীতি সুদহার বৃদ্ধির কারণে প্রবৃদ্ধির চাকা শ্লথ হয়েছে। সেই ধাক্কায় এখন ব্যাংক বন্ধ হচ্ছে। ফলে বিষয়টি গুরুতর রূপ নিয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, ফেডারেল রিজার্ভ যেহেতু এখনো সুদের হার বাড়িয়ে চলেছে, তাই ব্যাংক খাতের ঝুঁকি শেষ হয়ে যায়নি।