ঠিকানা রিপোর্ট : ‘বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠিকেও আধুনিক শিক্ষার পথ বেয়ে তথ্য-প্রযুক্তির সাথে পরিচিত করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর সুফল হিসেবেই সামাজিক-অথনৈতিক অনেক সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে’-এমন অভিমত পোষণ করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে শিক্ষা সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ড. আফসারুল আমিন এমপি। গত ২ মার্চ শনিবার নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল কাদের মিয়া আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সাবেক গণশিক্ষা মন্ত্রী ড. আফসারুল আমিন আরো বলেন, ‘বলতে দ্বিধা নেই যে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক কলেজ, হাই স্কুল এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নেতা হয়েছেন পঞ্চম শ্রেণী পাশ লোকজন। এরফলে শিক্ষকের অনেকেই নাখোশ এবং অনেক ক্ষেত্রেই বনিবনা হচ্ছে না। এটি সামগ্রিক শিক্ষার অগ্রগতির পথে কিছুটা অন্তরায় বলে মনে করা হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া নির্দেশ রয়েছে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের মধ্যে সমন্বয় অটুট রেখে জনকল্যাণে আত্মনিয়োগ করার।’
চট্টগ্রাম-১০ আসনের এমপি ড. আফসার এ সময় চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা দূরিকরণে সরকারের সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনার আলোকে বলেন, অনেক পুরনো এই সমস্যার অবসানে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে এবং এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে। কর্ণফুলি নদীসহ বিভিন্ন নদীতে মহানগরের পানি দ্রুত সরে যাবে-এমন পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে।
আফসারুল আমিন বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম পিছিয়ে রয়েছে বলে যারা অভিযোগ করেন, তারা আসলে ভালো কাজকে সহ্য করতে চান না। কারণ, চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অনেক কাজ হয়েছে। এখনও বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। গত সপ্তাহেই বঙ্গবন্ধু কন্যা চট্টগ্রামে টানেল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন। সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ কালুরঘাট ব্রীজ হচ্ছে।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর মধ্যেও কেউ কেউ ইয়াবাসহ নানা মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দিচ্ছে। সন্ত্রাসীদের কাছে থেকে মাসোহারা নিচ্ছে। এমন অপকর্মে লিপ্তরাও যেন সময় থাকতেই নিজেদেরকে সংশোধন করে। অন্যথায় আইনের কাঠগড়ায় তাদেরকেও দাঁড়াতে হবে। কারণ, বর্তমান সরকার সবসময় চাচ্ছে পুলিশকে সর্বসাধারণের ভরসাস্থলে পরিণত করতে।
সরকারের একক চেষ্টায় এটি সম্ভব নয়। এজন্যে পুুলিশ বাহিনীকেও আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে। আফসারুল আমিন বলেন, ইয়াবা ব্যবসার দাপট কমেছে। একইভাবে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমি দস্যুদের অপতৎপরতা থেকে জনগণ রেহাই চাচ্ছেন। বর্তমান সরকার সে ব্যাপারেও সজাগ রয়েছে। সাবেক এই মন্ত্রী বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি এবং বিএনপি মিলিতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে দেশপ্রেমিক প্রতিটি প্রবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, প্রকৃত বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশ এগুচ্ছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে গোটাবিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় মূলত: চট্টগ্রামের লোকজনই কথা বলেন। নিজের এবং এলাকাবাসীর সমস্যা সমাধানে এই জনপ্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণও করেছেন। হোস্ট হাজী আব্দুল কাদের মিয়া এ সময় বলেন, জাতিরজনকের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে দীপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। এই প্রবাস থেকেও সকলকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচল আস্থাশীল থাকতে হবে। ছাড়াও মতবিনিময়ে অংশগ্রহণকারি নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন নূরল ইসলাম, লুৎফুল করিম, মোস্তফা কামাল পাশা মানিক, আশ্রাব হোসেন, জাহাঙ্গির হোসেন, কামাল হোসেন মিঠু, হাজী জাফরউল্লাহ, এম এ জলিল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘে একটি কর্মসূচিতে যোগদানের জন্যে আরো কয়েকজন এমপির সাথে নিউইয়র্কে এসেছিলেন ড. আফসারুল আমিন।