ঢাকা ছাড়ছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট

ঠিকানা রিপোর্ট : বাংলাদেশে তিন বছর আট মাস দায়িত্ব পালন শেষে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট চলে যাচ্ছেন। আগামী মাসে ঢাকা ছেড়ে যাবেন তিনি। নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে ট্রাম্প প্রশাসনের মনোনীত সেই ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের শুনানির মুখোমুখি হতে হবে। পেশাদার কূটনীতিক মার্শা বার্নিকাটকে বাংলাদেশে পঞ্চদশ রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তিনি বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নেন। বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে চরম অস্থিতিশীল এক পরিস্থিতিতে বার্নিকাট এখানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বিরোধী দলের বর্জনের মুখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক সুখকর ছিল না। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনাকে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দের অপমানজনক মন্তব্য হজম করেই বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎকারটিও তার হয়নি। রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ অনুমোদন করতে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে পররাষ্ট্রবিষয়ক মার্কিন সিনেট কমিটিতে বার্নিকাটের দেয়া বক্তব্যও বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। বার্নিকাট সেখানে বলেছিলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন অনস্বীকার্যভাবে ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং একটি অধিকতর প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের জন্য বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে জরুরিভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে বসা প্রয়োজন।
সম্প্রতি খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মসংক্রান্ত বার্নিকাটের মন্তব্য নিয়েও তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ। তবে বার্নিকাট তার অবস্থানে অনড় রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ৩ জুলাই মঙ্গলবার রাতে মার্কিন দূতাবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি আবারো অহিংস, অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। বক্তব্যের নির্বাচনসংক্রান্ত অংশটিতে জোর দিতে তিনি একবার বাংলা ও পরে ইংরেজিতে তা পড়ে শোনান। এতে বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনের শেষলগ্নে এসে আমি বাংলাদেশ সরকার ও এ দেশের জনগণকে বলতে চাই, আমাদের সমর্থন করতে হবে অহিংস, অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন; যাতে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন থাকবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে আমার কষ্ট হবে। তবে আমি এরই মধ্যে এখানে আবার আসার পরিকল্পনা করে ফেলেছি। আবার যখন আসব তখন একেবারেই ভিন্ন একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশা করি আমি আরো অগ্রসর, আরো উন্নত এক বাংলাদেশ। সে বাংলাদেশে থাকবে স্বাধীনতার জন্য সঙ্কল্প ও আবেগ, যা ১৯৭১ সাল থেকে এ দেশের মানুষের মনে জাগরুক।