‘তাহলে আমি কি ৮ বছর বয়সে বিয়ে করেছি’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : নবীনগরের কাইতলার আবু হানিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ১৯৭৪ সালে জন্ম নিয়েও তিনি মুক্তিযোদ্ধা। জাল-জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন এমন অভিযোগে সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়।

এরই প্রতিবাদে গত ২৪ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন আবু হানিফ। এতে তিনি জানান, তার জন্ম ১৯৫৬ সালের ৯ অক্টোবর। ১৯৮২ সালে বিয়ে করেছেন তিনি। তার প্রশ্ন জন্ম যদি ১৯৭৪ সালে হয়ে থাকে তাহলে আমি কি ৮ বছর বয়সে বিয়ে করেছি।

নিজেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে আবু হানিফ জানান, মুক্তিবার্তা লাল বইয়ের ০২১২০৩১৩৫৫ ক্রমিকে ২০১১ সালের ১২ জুলাই প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটের ৪৯১৬ ক্রমিকে এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন-২০১৪’র ভোটার তালিকায় ১৩৬৫ নম্বর ক্রমিকে তার নাম রয়েছে। তার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইডি নং ০২০২০৩০৫১০ এবং এনআইডি নং ১৯৫৬২৬১০৪৫৭০৫৫৭৬৩তে তার জন্ম তারিখ ৯ই অক্টোবর ১৯৫৬ইং লিপিবদ্ধ রয়েছে।

গ্রাম্য দলাদলির কারণে বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে তাকে হয়রানি করার পাল্টা অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ভগ্নিপতির বাড়িতে থাকার সুবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কাছাইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাবলা উচ্চবিদ্যালয়ে আমি পড়াশুনা করেছি। তিনি অভিযোগ করেন তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনকারী এ্যাডভোকেট আখতার হোসেন সাঈদ ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে তিনি এবং সহসভাপতি আবু জাহের মেম্বার যোগসাজশে আবু জাহেরের চাচাতো ভাই লিয়াকত আলীকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।

তার মাধ্যমেই ভর্তি রেজিস্ট্রারে আমার জন্ম তারিখ ১৯৭৪ সালে লিপিবদ্ধ করানো হয়। এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরে তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেয়। আবু হানিফ জানান, মুক্তিযোদ্ধা নয় বলে তার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে একই গ্রামের আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা মো. হানিফের স্ত্রীর করা মামলা থেকেও ২০১১ সালে তিনি বেকসুর খালাস পান। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নানসহ এই মামলার অন্য আসামিরাও একই সঙ্গে বেকসুর খালাস পান। আবু হানিফ বলেন আমি প্রকৃত মৃক্তিযোদ্ধা নই এমন প্রমাণাদি তারা আদালতে যদি পেশ করতেন তাহলে বিজ্ঞ আদালত নিশ্চয় আমাকে সাজা দিতেন। আমার প্রশ্ন একই গ্রামে আবু হানিফ ও মো. হানিফ নামে দু-জন মুক্তিযোদ্ধা থাকা কি অপরাধ। মো. হানিফের পিতার নাম আবদু মিয়া।

আর আমার পিতার নাম আবদুর রহমান। মো. হানিফের পিতার নাম ব্যবহার করে যদি কিছু করা হতো তাহলে সেটা জালিয়াতি হতো। আমি মো. হানিফের এফএফ নং ৪৫৬ ও কল্যাণ ট্রাস্ট নং ৩৩১১২ ব্যবহার করে কোনো সুযোগ-সুবিধা নেইনি। আমার গেজেট ও মুক্তিবার্তা নাম্বার ব্যবহার করেই আমি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কাইতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান, মকবুল হোসেন, মো. আবদুল মজিদ, সৈয়দ হারুনুর রশিদ, সহিদ মিয়া ও গাজী আবদুল হাই।