তিব্বতে পাহাড় ধস আটকে গেছে ব্রহ্মপুত্র

বিশ্বচরাচর ডেস্ক : তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদ পথজুড়ে বিশাল পাহাড় ধস হয়েছে। তার জেরে আচমকা নেমে আসা পানির তোড়ে ভেসে যেতে পারে ভারতের অরুণাচল প্রদেশের একটি বিস্তীর্ণ এলাকা। চীনের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের কাছ থেকে এই ধসের খবর পাওয়ার পরই সতর্কতা জারি করল অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সিয়াং জেলা প্রশাসন। খবর এনডিটিভির।

অরুণাচল প্রদেশের আপার সিয়াং এবং পূর্ব সিয়াং জেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত সিয়াং নদীর জলস্তর গত কয়েক দিনে দুই মিটারেরও বেশি কমে গেছে। আপার সিয়াংয়ের জেলা শাসক ডুলি কামডুক বলেন, টুটিংয়ের কাছে জলস্তর দুই মিটারের বেশি নেমে যায়। তখনই আমরা সন্দেহ করেছিলাম, নদীর উজানপথে কোথাও বাধার সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৮ অক্টোবর চীনের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের কাছ থেকে রিপোর্ট এসেছে, ধসে নদীর গতিপথ আটকে গিয়েছে।

চীনের পাঠানো ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপো নদীর গতিপথ বিশাল পাহাড়ি ধসে আটকে গেছে। তার ফলে আচমকা তৈরি হয়ে গেছে বিশাল এক হ্রদ। প্রায় ১৩০ ফুট উঁচু হয়ে পানি জমে রয়েছে সেখানে। প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে জলস্তর। যেকোনো সময় সেই বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে দিতে পারে অরুণাচল প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা।

তিব্বতের এই ইয়ারলুং সাংপোই অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নামে প্রবাহিত। সিয়াং আরও নিচে নেমে এসে আসামে নাম নিয়েছে ব্রহ্মপুত্র। অরুণাচল প্রদেশের বিধায়ক নিনং এরিং বলেন, নদীর দুপারে গ্রামগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে, অধিবাসীরা যেন নদীর কাছে না আসেন। টুটিং, ইংকিয়ং এবং পাসিঘাটের মতো শহরগুলোকেও সতর্ক করা হয়েছে। বন্যার আশঙ্কার পাশাপাশি পরিস্থিতি সঙ্গীন হয়েছে নদী দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ায়।

চীনের ইমার্জেন্সি সার্ভিসেস জানিয়েছে, ওপর থেকে পানি নামছে। অথচ সেই পানি নদীপথ ধরে নিচে নামতে পারছে না। ফলে ক্রমেই বাড়ছে ওই হ্রদের জলস্তর। গত ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই লেকের জলস্তর দাঁড়িয়েছে ৪০ মিটার বা ১৩০ ফুটেরও বেশি।

কিন্তু ধসের ওই আলগা দেয়াল যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। সেই সময় বিশাল জলরাশি ধেয়ে আসবে নিচের দিকে। সেই বিপদের আশঙ্কাতেই ইয়ারলুং ছাংপো নদীর দুই তীর এবং আশপাশের প্রায় ছয় হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে তিব্বতের স্থানীয় প্রশাসন। নদীসংলগ্ন এলাকায় যাতায়াতের ওপর জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

পাহাড় ধসের সঙ্গে সে অঞ্চলে ভূমিকম্পের আশঙ্কাও বাড়ছে। কারণ, এ বছরের গোড়ার দিকে একইভাবে নদীপথ ধসে আটকে যাওয়ার পর তিব্বতে একের পর এক ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছিল।