দেখতে দেখতে ৩৪তম বছরে পদার্পণ করল ঠিকানা

ফারহানা হোসেন
আমি ঠিকানা পত্রিকার একজন নিয়মিত পাঠক ও শুভাকাক্সক্ষী। প্রায় জন্মলগ্ন থেকেই ঠিকানা পত্রিকার সঙ্গে আমার এই ঘনিষ্ঠতা। একজন নগণ্য লেখক হিসেবেও পত্রিকাটির সঙ্গে আছি বেশ অনেক দিন হলো। প্রতি মাসে পত্রিকাটির সাহিত্য সংখ্যাটির জন্য প্রতীক্ষায় থাকি চাতকের মতো। প্রতীক্ষার প্রহর যেন শেষ হতে চায় না, যেন কী প্রতীক্ষার ঠিকানা পত্রিকা! যেন কী ভালোবাসার ঠিকানা পত্রিকা! তবে এই ভালোবাসাময়তা যে শুধু নিজের লেখা প্রকাশ পাবে বলে, তা নয়। এই ভালোবাসাময়তা মাটির গন্ধ, দেশি নির্যাস শুষে নেওয়ার আকাক্সক্ষার, যার জন্য আমি চাতকের মতো প্রতীক্ষায় থাকি।
ঠিকানা পত্রিকা আমার প্রাণের স্পন্দন। ভালোবাসার টান। এই বিদেশ বিভুঁইয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ মাতৃভূমির এক অমোঘ আবেশ মাতিয়ে রেখেছে আমাকে।
অভিজাত ইংলিশে যখন আমার মায়ের শেখানো বুলিগুলো ফ্যাকাশে ঘাসের মতো মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই ত্রাতা হয়ে সবুজ প্রাণের সঞ্চারে আবর্তিত হলো ঠিকানা পত্রিকা। তার ছোঁয়ায় প্রাণে ফিরে এল সবুজের আভা। ঠিকানা পত্রিকা আমার ভালো থাকা।
সেই থেকে ঠিকানা পত্রিকার কাছে আমি ঋণী। তাই অসীম কৃতজ্ঞতায় কামনা করি, মহিমান্বিত হোক তাদের পথচলা। ঠিকানা পত্রিকা যে শুধু আমার হৃদয়ঘটিত আবেগমথিত ব্যাপার, তা একেবারেই নয়। এটা আমার ক্ষুদ্র লেখকসত্তার বিকশিত হওয়ারও আঁতুরঘর। আমি পত্রিকাটির অতি সিরিয়াস একজন পাঠক। আমি এখান থেকে অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারি। এটা নিউইয়র্ক তথা পুরো আমেরিকার বহুল পঠিত সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা বলে পুরো বাঙালি কমিউনিটির সম্মিলনস্থল হওয়ায় আলটিমেটলি বাংলা ভাষাভাষীদের ভেতরে বৃহৎ সংযোগস্থলও বটে। তাই ঠিকানা পত্রিকাকে অকপটে বলা যায় বাংলা কমিউনিটির হৃদ্যতা বিকাশের একমাত্র চারণভূমি।
একজন নগণ্য শুভাকাক্সক্ষী থেকে সময়ের পরিক্রমায় কখন যে ঠিকানা পত্রিকা আমার ভালোবাসার স্পন্দন হয়ে উঠেছে, বুঝে উঠতে পারিনি। যা-ই হোক, হৃদয়লালিত ভালোবাসার এই স্পন্দনকে বুকে ধারণ করে নিউইয়র্ক তথা পুরো নর্থ আমেরিকার জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বাংলা ঠিকানা পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঠিকানা পত্রিকা পরিবারকে জানাই অকৃত্রিম ভালোবাসা, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জয়তু ঠিকানা পত্রিকা।
-নিউইয়র্ক প্রবাসী লেখিকা।