ঠিকানা অনলাইন : পণ্য বিপণনের জন্য র্যাম্প শো এখন বহুল প্রচলিত বিষয়। সাধারণত এসব শোতে মডেলরা পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে নজরকাড়া সাজে ক্রেতাদের সামনে হাজির হন। তবে এবার পণ্য বিপণন নয়, আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ব্যতিক্রমী এক র্যাম্প শো হয়েছে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের নবাব হলে।
এতে মডেল হিসেবে হাজির হয়েছে পোষা প্রাণী বিড়াল। কয়েকজন পশুপ্রেমী এই প্রথমবারের মতো দেশে বিড়ালের এ ধরনের আয়োজন করেছেন।
যেমন খুশি তেমন সাজো, ক্যাট র্যাম্প শোসহ আরও নানা রকম খেলার আয়োজন করা হয়। ওই সময় সবাই তাদের পোষ্য বিড়ালকে ভিন্ন রকম বাহারি পোশাকে সাজিয়েছেন। কেউ চশমা পরিয়েছেন, কেউবা মাইকেল জ্যাকসনের টুপি পরিয়েছেন, আবার অনেকেই নিজের হাতে জামা বুনে তাদের পোষ্যকে সাজিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কণ্ঠশিল্পী মেহরিন মাহমুদ, চিকিৎসক ও অভিনেত্রী নাইলা নাঈম, সাবেক জাতীয় ফুটবলার কায়সার হামিদ, প্রাণী গবেষক আফজাল খান। প্রধান অতিথি ছিলেন বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মোহাম্মদ আবদুল খালেক খান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্য ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব নাদের চৌধুরী।
আয়োজক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘পশুদের প্রতি মানুষের যে সহাভূতি বা ভালোবাসার সম্পর্ক, সেটাকে তুলে ধরার জন্যই এই আয়োজন। প্রতিবার এ আয়োজন করা হয়তো সম্ভব হবে না। তবে আমাদের উদ্দেশ্য মানুষের কাছে এ বার্তা পৌঁছে দেওয়া যে পোষ্য প্রাণী ছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য সম্ভব হবে না।’
কীভাবে মাথায় এল এমন একটি আয়োজনের—প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে বন্ধুরা মিলে ইভেন্ট ক্রিয়েট করি। তারপর ধীরে ধীরে এখানে আসি। প্রায় তিন হাজার মানুষ এসেছেন বিড়াল নিয়ে। প্রায় ছয় হাজার মানুষের ভিড় হয়েছে।’
কুকুরের কামড় খেয়ে ড্রেনে পড়ে ছিল একটি বিড়াল। সেখান থেকে তাকে তুলে এনে চিকিৎসা করালেও এখনো পেছনের দিকটা অবশ হয়ে আছে। এত কষ্ট পেয়েছে বলে তার নাম রাখা হয়েছে দুখু মিয়া। আট মাস আগে উত্তর বাড্ডা থেকে দুখু মিয়াকে উদ্ধার করেন হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সোহেল সরকার। সোহেল জানান, এমন অনেক বিড়াল তিনি উদ্ধার করেছেন, যেগুলোর কোনো হিসাব নেই। ওকে যত দিন পারব সঙ্গেই রাখব। যেহেতু ও প্রতিবন্ধী, তাই কোথাও দিতে চান না তিনি। তিনি বলেন, ‘যা-ই হোক, ওকে তো ফেলে দেওয়া সম্ভব নয়।’
কুড়িয়ে পাওয়া টুনটুনিকে নিয়ে র্যাম্প শোতে হাঁটেন উফফাত আলম জয়া। তবে শব্দে ভয় পাচ্ছিল বলে কোল থেকে কিছুতেই নামছে না বিড়ালটি। জয়া বলেন, টুনটুনি তার জীবনে প্রথম প্রায়োরিটি। পশুরা কথা বলতে পারে না, ওদেরকে বুঝে নিতে হয়, সন্তানের মতো ওকে আগলে রাখেন তিনি।
এমন একটি আয়োজনকে সাধুবাদ জানান, মোহাম্মদপুর থেকে আসা গৃহিণী ফারহানা জাহান। ছেলেমেয়েসহ এসেছেন তার দুই বিড়াল টোকিও ও কিটিকে নিয়ে। তিনি বলেন, মানুষের তো মিলনমেলা হয়, বিড়ালের জন্য এমন আয়োজন হয় না। টোকিওকে নিয়ে র্যাম্প শোতে হেঁটেছেন। পরিয়েছেন বাহারি পোশাক। কিটিকে পরিয়েছেন গোলাপি রঙের সুন্দর জামা।
ঠিকানা/এনআই