দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ‘ব্রাইড অব বেলসেন’ জিনা টার্জেলের চিরবিদায়

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চারটি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরা জিনা টার্জেল গত ৯ জুন ৯৫ বছর বয়সে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে অ্যানা ফ্রাঙ্কের শুশ্রূষা করেন তিনি। খবর বিবিসি।
বন্দীশিবির মুক্ত করা এক ব্রিটিশ সেনাকে বিয়ে করে ‘ব্রাইড অব বেলসেন’ বা ‘বেলসেনের বধূ’ হিসেবে পরিচিতি পান জিনা টার্জেল। ১৯২৩ সালে পোল্যান্ডের ক্রাকোয়ে জন্মগ্রহণকারী জিনা ১৯৩৯ সালে জার্মান আক্রমণে পরিবারের প্রায় সব সদস্যকেই হারান। তার মৃত্যুতে হলোকাস্ট এডুকেশনাল ট্রাস্ট জানায়, গণহত্যার ভয়াবহতা যেন কখনো ভুলে যাওয়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে অক্লান্তভাবে নিজের গল্প শুনিয়ে গেছেন জিনা।
নাৎসি বাহিনীর পোল্যান্ড আক্রমণের সময় মাত্র ১৬ বছরের জিনা ছিলেন নয় ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। যুদ্ধ শুরু হলে মা ও চার ভাই-বোনের সঙ্গে ক্রাকোয়ের ইহুদি মহল্লায় আশ্রয় নেন তিনি। এখানে দুই ভাইকে হারান তিনি।
পরে অবশিষ্ট পরিবারসহ ক্রাকোয়ের শেষসীমায় প্লাজা শ্রমশিবিরে পাঠানো হয় তাকে। সেখান থেকে ১৯৪৪ সালে এ কুখ্যাত আউসভিতজ বন্দীশিবিরে পাঠানো হয় জিনাকে। ১৯৪৫ সালে জিনা আরেক বন্দীশিবির বুসেনভাল্ডে চার সপ্তাহ কাটান। এরপর জিনা ও তার মাকে বার্জেন-বেলসেন শিবিরে পাঠানো হয়।
বেলসেন শিবিরের হাসপাতালে কাজ করার সময় টাইফয়েডে আক্রান্ত ১৫ বছরের অ্যানা ফ্রাঙ্কের শুশ্রূষা করেন তিনি। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সে অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন জিনা টার্জেল।
১৯৪৫ সালের ১৫ এপ্রিল বার্জেন-বেলসেন শিবির মুক্ত করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। ছয় মাস পর ব্রিটিশ সেনা নর্ম্যান টার্জেল বিয়ে করেন জিনাকে। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর প্যারাশুট দিয়ে তৈরি তার বিয়ের পোশাক লন্ডনের ইম্পেরিয়াল ওয়ার মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে।