‘দ্য স্পাই ক্রনিক্যালস’ নিয়ে উন্মাদনা চলছেই

ভারত ও পাকিস্তানের দুই গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক দুই প্রধানের লেখা ‘দ্য স্পাই ক্রনিক্যাল : র’ আইএসআই এন্ড দ্য ইল্যুশন অব পিস’ নিয়ে উন্মাদনা থামছেই না। চরম প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র দুটির গোয়েন্দারা একসঙ্গে বই লিখতে পারেন- এমনটিই অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। গোপনীয়তা ভঙ্গ হয়েছে কি না এ নিয়ে এরই মধ্যে দুই দেশেই তুমুল বিতর্ক চলছে।
‘স্পাই ক্রনিক্যাল’ বইটি গত মাসে প্রকাশিত হয়েছে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান জেনারেল (অব.) আসাদ দুররানি ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ এন্ড এ্যানালিসিস উইংয়ের (র’) সাবেক প্রধান এ এস দুলাতের সঙ্গে দেশটির সাংবাদিক আদিত্য সিনহার আড্ডার নির্যাস উঠে এসেছে বইটিতে। এই আড্ডাগুলো ইস্তাম্বুল, ব্যাংকক ও কাঠমা-ুতে অনুষ্ঠিত হয়। পুরো প্রকল্প শেষ হতে মোটামুটি আড়াই বছর লেগেছে। আসাদ দুররানি ১৯৯০-৯২ সময়কালে এবং দুলাত ১৯৯৯-২০০০ সালে নিজেদের সংস্থার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
সমন্বয়কারী আদিত্য সিনহা বলছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সঙ্গে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির যোগাযোগ ছিল; এমনকি চরম স্নায়ুযুদ্ধের সময়ও। কিন্তু আইএসআই ও সিআইএর মধ্যে কোনো যোগাযোগ ছিল না।’
সিনহা আরো বলেন, ‘আমরা ওভারকোট কিংবা চশমা পরিনি। তবে দুই সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান স্বভাবসুলভ কারণেই সতর্ক ছিলেন। আমরা একে অন্যের হোটেলকক্ষে সাক্ষাৎ করেছি।’
২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেনকে ধরার সময় দুররানি আইএসআইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তিনি ওই ঘটনা নিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দারা সম্ভবত জানতেন, লাদেন কোথায় লুকিয়ে ছিলেন।
দুররানি ও দুলাত বিতর্কিত কাশ্মির অঞ্চল নিয়েও আলোচনা করেছেন। দুলাত ভারত সরকারের কাশ্মির নীতির সমালোচনা করলেও বলেন, বিদ্রোহে পাকিস্তানের হাত আছে। তবে দুররানির বক্তব্য পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। গত মাসের শেষ দিকে তাকে তলব করে ব্যাখ্যা নিয়েছে সেনাবাহিনী। এ ছাড়া তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দুররানি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। তবে দুলাত বলছেন, এ নিয়ে উন্মাদনার কারণ তিনি ‘বুঝতে পারছেন না’। তার মতে, বইটি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়নের জন্য লেখা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া সেই স্বপ্ন বিনষ্ট করছে। সূত্র : এএফপি।