ঠিকানা অনলাইন : পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ স্টেশন থেকে এক যুবককে অপহরণ করে হত্যা করেছে। শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পাঞ্জাবের নানকানা সাহিব শহরে এ ঘটনা ঘটে। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
পাকিস্তান পুলিশের মুখপাত্র মুহাম্মদ ওয়াকাস জানান, নিহতের নাম মোহাম্মদ ওয়ারিস (২০)। মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কোরানের অবমাননার অভিযোগে হামলার শিকার হলে পুলিশ তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়।
কিন্তু উত্তেজিত জনতা থানায় হামলা চালায় এবং ওয়ারিশকে থানা থেকে বের করে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। এমনকি তারা তার শরীরে আগুন দেওয়ারও চেষ্টা করেছিল। পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে থামাতে পারেনি।
কারণ ওই সময় থানায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরে থানায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হলে তারা লাশে আগুন দেওয়া থেকে উত্তেজিত জনতাকে থামাতে সক্ষম হয়। এই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওটি সত্য বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তিকে পা ধরে রাস্তার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তার কাপড় ছিঁড়ে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। ব্লাসফেমির অভিযোগে হামলা পাকিস্তানে নতুন কিছু নয়। ২০২১ সালে একই ধরনের অভিযোগে দেশটিতে একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিককে হত্যা করা হয়েছিল।
এ ঘটনায় পাকিস্তান ও দেশের বাইরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে পাকিস্তানের আদালত এই হত্যার দায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, ধর্ম অবমাননার নামে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে পাকিস্তানি পুলিশ যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে না।
বরং এ ধরনের ঘটনার সময় তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে থাকে। পাকিস্তান পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মুহাম্মদ ওয়ারিসকে হত্যার ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ঠিকানা/এসআর