ঠিকানা অনলাইন : জামালপুরে সাত সন্তানের জনক ৮৫ বছরের বৃদ্ধের সঙ্গে ১১ বছরের মাদ্রাসাপড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণির এক কিশোরীর বিয়ে নিয়ে তোলপাড় চলছে।
জানা গেছে, অশীতিপর এই বৃদ্ধ নিজের ইচ্ছায় বিয়েটা করেননি। বরং এলাকার মাতব্বররা তার ওপর এই বিয়ে চাপিয়ে দিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার আমখাওয়া ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলের বয়ড়াপাড়া গ্রামে। স্থানীয়রা জানান, এলাকার মহিলা মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সঙ্গে ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের ছেলে সুরমান আলীর বখাটে ছেলে শাহিনের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। শাহিন নানা প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে আসছিল।
একপর্যায়ে ১১ বছরের ওই মাদ্রাসাছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে ছাত্রীর গর্ভের সন্তানটি নষ্ট করে ফেলে শাহিন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ছাত্রীর পরিবার এলাকার ইউপি মেম্বার নাদু, গফুর মাস্টার, কুদ্দুস মাস্টারসহ এলাকার মাতব্বরদের কাছে ঘটনার বিচার দাবি করে।
এ নিয়ে এক সালিস বৈঠক বসে। সালিসে বৃদ্ধ মহিরের নাতি শাহিনের সকল অপরাধ চাপানো হয় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ দাদার ওপর। সালিস বৈঠকে বৃদ্ধের সঙ্গে ১১ বছরের কিশোরীকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, বয়সের কারণে ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না মহির। চোখেও ঠিকমতো দেখেন না। সাত সন্তানের বাবা মহিরের দুই স্ত্রী মারা গেছেন অনেক আগেই। তৃতীয় বিয়েও করেছেন ২৭ বছর আগে।
বৃদ্ধ মহির উদ্দিন বলেন, ‘এলাকার মেম্বার নাদু, গফুর মাস্টার, কুদ্দুছ মাস্টার মিলে আমার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিয়ে করিয়েছে। আমি নির্দোষ।’
বৃদ্ধের মেয়ে আবেদা বলেন, ‘আমার বাবা কোনো অপরাধ করেননি। তিনি চলাফেরাই তো করতে পারেন না। লাঠিতে ভর করেন চলে। ভালোমতো চোখে দেখেন না।’ তবে পঞ্চম শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্রীটির গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে বলে আবেদা জানান।
ছেলের ঘরের নাতির অপকর্মের দায়ভার জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ওই বৃদ্ধের ওপর চাপিয়ে কিশোরীটিকে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
ঠিকানা/এনআই