
ঠিকানা রিপোর্ট : ফেব্রুয়ারি মাস এলেই বাঙালিরা যে যেখানেই থাকুক, মেতে ওঠে ভাষা আন্দোলন নিয়ে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা নিয়ে। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ে ২১ ফেব্রুয়ারি যে সব ছাত্র-জনতা পাক পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন তাদের স্মরণে গেয়ে ওঠে ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করে ভাষা শহীদ বরকত, সালাম, রফিক, শফিক, জব্বারসহ নাম না জানা আরও শত সহ¯্র শহীদকে। সময়ের ¯্রােত বেয়ে একুশের সেই অভিঘাত এখন প্রবাসী বাঙালি সমাজেও অনুরণন তুলেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় এখানে প্রতিবছর একুশ নিয়ে নানা আয়োজনে মেতে ওঠে নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন এবং প্রবাসের মাদার সংগঠন হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটি। ঢাবির এ সম্মিলিত আয়োজনে যোগ দেয় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন এবং আর অনেক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন। তাদের মূল অনুষ্ঠান হবে ২০ ফেব্রুয়ারি বধুবার রাত ১২টা ১ মিনিটে সেখানে থাকবে নানা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, আলোচনা এবং শেষে অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্প অর্পণ। তার পূর্বে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতার।

এ ছাড়াও বাঙালির চেতনা মঞ্চের উদ্যোগে জাতিসংঘের সামনে ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশনের উদ্যোগে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার সিটি প্লাজায়, সম্মিলিত ব্রঙ্কসবাসীর আয়োজনে ব্রঙ্কসে, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে জালালাবাদ অফিসে, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির উদ্যোগে স্টার কাবাবে এবং বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং কন্স্যুলেটের উদ্যোগে স্থায়ী মিশনে এবং বাংলাদেশী অন্যান্য অধ্যুষিত এলাকায় একুশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই’র শিশু- কিশোর প্রতিযোগিতা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে অনুষ্ঠিত হয় জ্যাকসন হাইটসের পিএস ৬৯ তে। প্রতিযোগিতার মধ্যে ছিল কবিতা। কবিতা আবৃত্তি হয় প্লে থেকে দ্বাদশ গ্রেড পর্যন্ত ক, খ, গ, ঘ বিভাগে। এছাড়া একইভাবে হস্তলিখন, স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ লিখন, উপস্থিত বক্তৃতা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। ঢাবি এলামনাইয়ের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক সম্পাদক সাবিনা শারমিনের উপস্থাপনায় বিপুল সংখ্যক ছেলেমেয়ে প্রবল উৎসাহে অংশ নেয়।

তবে প্রতিযোগীদের চেয়েও অধিক উৎসাহ ও আগ্রহ লক্ষ করা যায় তাদের পিতা-মাতাদের মধ্যে। প্রতিযোগিতাকালীন ঢাবি এলামনাই এসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি স্বপন বড়–য়া, উপদেষ্টা মনিরুজ্জামান মিয়া, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন খান এবং সোসাইটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলমসহ সংগঠনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বিচারকম-লীতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ উল্লা, মুহম্মদ ফজলুর রহমান, অধ্যাপিকা হুসনে আরা, কৌশিক আহমেদ, শান্তা শ্রাবণী, আনোয়ারুল লাবলু, টিপু আলম ও আলমা ফেরদৌসি লিয়া।
বিজয়ী সবাইকে পুরস্কার দেয়া হবে ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে একুশের মূল অনুষ্ঠানে।