নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীনকে অভিনন্দন

যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ

ঠিকানা রিপোর্ট : নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দীনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মুক্তিযুদ্ধের মূল নিয়ামক চেতনা, অর্থাৎ ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র এবং শোষণ ও বৈষম্যহীন দেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি ও আদর্শকে সমুন্নত রাখতে সদা সচেষ্ট থাকবেন।
এক বার্তায় তারা ঠিকানাকে জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক শহরের উডসাইডে ৩৭-০১ ৬১ স্ট্রিটে অবস্থিত রুমা’স কিচেনে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সদস্য, কার্যকরী কমিটি ও পরিচালনা পরিষদের এক যৌথ সভার পক্ষ থেকে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দীনকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয় এবং তার কাছে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যাশার কথা বলা হয়।
সংগঠনের সভাপতি ডা. টমাস দুলু রায়ের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য ও যুগ্ম সম্পাদক বিষ্ণু গোপের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় ঐক্য পরিষদের নেতারা বঙ্গবন্ধুর হাতে প্রগতিশীল রাজনীতিতে হাতেখড়িপ্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করায় আনন্দ ও স্বস্তি প্রকাশ করেন। সভার পক্ষ থেকে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীনকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, তিনি ২০০১ সালের নির্বাচন এবং তৎপরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াতের যেসব লোক সারা দেশের প্রগতিশীল মানুষকে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্তদের খুন-জখম-ধর্ষণ, তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে দেশত্যাগে বাধ্য করেছিল, তাদের ২৬ হাজারেরও অধিককে অপরাধী শনাক্ত করে বিচার করার সুপারিশ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ২০১১ সালে ১১০০ পাতার যে রিপোর্ট পেশ করেছিলেন, সেটি এখনো হিমাগারে রয়েছে, বিচারের কাজ আজও শুরু করা হয়নি। বক্তারা গভীর দুঃখের সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশে সব অপরাধেরই বিচার হয়, শুধু সংখ্যালঘু নির্যাতকদের কখনো বিচার হয় না। সরকার সংখ্যালঘু নির্যাতনের অপরাধকে বিচার ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করে না বলেই ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী-মৌলবাদী-চরমপন্থী শক্তি যৌথভাবে সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশকে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ও আদিবাসীশূন্য করে আফগানিস্তান/পাকিস্তানের মতো একটি জঙ্গী ধর্মীয় একনায়কতন্ত্রে রূপান্তরিত করার ঘোষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। সভায় নতুন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীনের উদ্দেশে অনুরোধ জানানো হয়, তিনি যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার প্রদত্ত রিপোর্টে চিহ্নিত সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার-প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু করার তাগিদ দেন।
বক্তারা আরো বলেন, অবিলম্বে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ না করলে রামু, নাসিরনগর, সাঁথিয়া, নন্দীরহাট, শাল্লা, নানুয়ার দিঘীর পাড় কিংবা ঠাকুরগাঁওয়ের মতো বর্বরতা চলতেই থাকবে। তারা বলেন, সরকার চাইলেই সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ করতে পারে। কেন্দ্রীয় ঐক্য পরিষদের ন্যায্য আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপনপূর্বক যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদ সমস্যার একটি চিরস্থায়ী, টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন পাস করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানায়। সভায় বক্তব্য দেন অবিনাশ আচার্য্য, ডা. টমাস দুলু রায়, রণবীর বড়ুয়া, চন্দন সেনগুপ্ত, সুশীল সাহা, রূপকুমার ভৌমিক, ভজন সরকার, প্রদীপ মালাকার, দিলীপ নাথ, শুভ রায়, সুশীল সিনহা, ভবতোষ মিত্র, রণজিৎ ভাদুড়ী, নিতাই নাথ, মনোজ সরকার, দিলীপ চক্রবর্তী, শিবু পোদ্দার, সঞ্জিৎ ঘোষ, প্রদীপ সূত্রধর, প্রদীপ কুন্ডু, পিটার মোল্লা, বর্ণা সরকার, এডওয়ার্ড যোসেফ হলসানা, বামেশ রায়, হরিগোপাল বর্মণ, তপন দেবনাথ, সুমন মিত্র, প্রণব রায় রনো, অসীম দে, পরেশ ধর, মৃন্ময় ব্যানার্জি, রুমা সরকার, বিষ্ণু গোপ, ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।