ঠিকানা অনলাইন : নরসিংদীর মনোহরদীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে পুলিশ। এতে আটজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এ ছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হন।
২৮ আগস্ট রোববার দুপুর ২টার দিকে নরসিংদীর মনোহরদীর হাফিজপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত বিএনপির নেতাকর্মীদের পার্শ্ববর্তী শিবপুর ও কিশোরগঞ্জের ভাগলপুরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গুলিবিদ্ধদের কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন যুবদলের সদস্যসচিব মাসুদুর রহমান সোহাগ, জেলা ছাত্রদলের সদস্য মনিরুজ্জামান ছোটন, ছাত্রদল নেতা মাহবুব ও মনির। আহতদের মধ্যে রয়েছেন পৌর কমিশনার বাবুল আকন্দ, মহিলা কমিশনার শামসুন্নাহার।
জানা যায়, খুন, গুম ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম ও জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের মৃত্যুর প্রতিবাদে রোববার দুপুরে মনোহরদী উপজেলার হেতেমদীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। অপরদিকে একই সময় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চন্দনবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দোয়া, মিলাদ ও গণভোজের আয়োজন করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি দুটি সভা হওয়ায় সহিংসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বেলা একটার দিকে হাফিজপুর গ্রাম থেকে বিএনপির সাবেক এমপি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
মিছিলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইন বিদ্যুৎ, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুর রহমান দোলনসহ জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় মিছিলের সামনের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এগোতে থাকেন। মিছিলটি কিছুদূর গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। ওই সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের সাথে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের নিবৃত্ত করতে রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছোড়ে। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠানসহ ১০ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আটজন গুলিবিদ্ধ হন।
সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল দাবি করেন, মিছিল নিয়ে বের হওয়ার পরই পুলিশ অতর্কিত আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ২৭ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩৮ জন আহত হয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান জানান, মানুষের জানমাল রক্ষায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা, দা-সহ মিছিল বের করেন। তাদের বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করা হয়। বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের ১০ জন সদস্য আহত হন। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঠিকানা/এনআই