নারীকে গাড়ির নিচে আটকে টেনে নিয়ে হত্যাকারী সেই শিক্ষকের কারাগারে মৃত্যু

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : গত বছরের ২ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস এলাকায় প্রাইভেটকার চাপায় রুবিনা আক্তার (৪৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাবির চারুকলা অনুষদের সামনের রাস্তা থেকে প্রাইভেটকারের নিচে আটকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান ঢাবির সাবেক শিক্ষক আজহার ওরফে জাফর শাহ (৫৬)।

কারাগারে থাকা ঢাবির সেই সাবেক শিক্ষক আজহার ওরফে জাফর শাহ ১৩ জানুয়ার শুক্রবার মারা গেছেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী মো. আল আমিন জানান, কারাগারে হাজতি হিসেবে বন্দী ছিলেন তিনি। তার হাজতি নম্বর-১১৭/২৩। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা-চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জাফর শাহর বাবার নাম মাইনুদ্দিন জাহাঙ্গীর শাহ।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কারারক্ষীরা অচেতন অবস্থায় সেই সাবেক শিক্ষককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তার মৃত্যু হয়।

মৃত জাফর শাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। ২০০৭-২০০৮ সালের দিকে নৈতিক স্খলনের অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

ঘটনার দিন নিহত রুবিনা আক্তারের আত্মীয় নুরুল আমিন জানান, রুবিনাদের বাসা হাজারীবাগ এলাকায়। তেজগাঁও স্বামীর বাসা থেকে রুবিনাকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে হাজারীবাগ যাচ্ছিলেন। পথে শাহবাগ থানাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনের রাস্তায় প্রাইভেটকারটি পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। তখন রুবিনা পড়ে গেলে প্রাইভেটকারটি তার ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে গাড়ির বাম্পারের সঙ্গে আটকে যান তিনি। তখন তাকে টেনেহিঁচড়ে প্রায় নীলক্ষেত পর্যন্ত নিয়ে যান প্রাইভেটকারের চালক জাফর শাহ। তখন লোকজন তার পিছু নেয়। ধাওয়া দিয়ে নীলক্ষেত এলাকায় গিয়ে তার গতিরোধ করে গাড়ির নিচ থেকে ওই নারীকে বের করে। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি রুবিনাকে।

তখন উত্তেজিত লোকজন ওই প্রাইভেটকার চালককে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করায়। পরবর্তীতে নিহত রুবিনার পরিবার মামলা করলে হাসপাতাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। চিকিৎসা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ঠিকানা/এনআই