নারী ইউপি সদস্যকে লাঞ্ছিত করায় ইউপি চেয়ারম্যান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা

চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিম

ঠিকানা অনলাইন : ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের এক নারী সদস্যকে চুলের মুঠি ধরে জুতাপেটা করার ঘটনায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিমের নামে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য মোছা. রোখসানা খাতুন। তিনি উচাখিলা ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য। ৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) দিবাগত মধ্যরাতে ওই নারী ইউপি চেয়ারম্যানসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামী করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঈশ্বরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত বন্দে আলী মিয়া মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে প্রকল্পের কাজ ভাগাভাগি ও ওই নারী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আরেক সদস্য রফিকুল ইসলাম রাকিবুলকে মোবাইলে গালাগাল করার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সালিশ ডাকেন চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিম। এ সময় অন্যসব ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সালিশে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ওই নারী সদস্যের বিচার চান। পরে চেয়ারম্যান আনোয়ার সেলিম নারী সদস্যকে ভর্ৎসনা করেন এবং ক্ষমা চাইতে বলেন। তিনি একতরফা দোষারোপ না করতে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে সবার সামনেই নারী সদস্যের চুলের মুঠি ধরে জুতাপেটা করেন এবং কিলঘুসি দিয়ে দিয়ে রক্তাক্ত করেন। পরে ইউপি সদস্যরা ওই নারীকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

অভিযোগের বিষয়ে রোখসানা খাতুন জানান, অন্য একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান তাকে ইউপি কার্যালয়ে ডাকেন। চেয়ারম্যান তার কাছে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেন। এ সময় দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হলে একপর্যায়ে চেয়ারম্যান উত্তেজিত হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন।

ওই সময় ইউপি ভবনে উপস্থিত ছিলেন উচাখিলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আবুল বাশার। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান রোখসানাকে লাঞ্ছিত করেন। তবে একজন নারীর ওপর হাত তোলা খুবই লজ্জাজনক কাজ।’

আরেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল ইউনিয়ন পরিষদে যা ঘটেছে তার জন্য আমরা লজ্জিত। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীর বিচার হোক।’

এই ঘটনা পর ওই দিন রাত ১১ টার দিকে নারী সদস্য উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিমকে অভিযুক্ত করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান সেলিমের মোবাইলে কল করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শোনার পরই লাইন কেটে দেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) বন্দে আলী মিয়া বলেন, তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঠিকানা/এসআর