নারী দিবস নিয়ে ওমেনস ফোরামের অনবদ্য নিবেদন

নিউইয়র্ক: ওমেন্স ফোরামের নারী দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথি ও আয়োজকবৃন্দ। 

ঠিকানা রিপোর্ট :‘আমরা সবাই রাজা, আমাদের এই রাজার রাজত্বে’। সেদিন ১১ মার্চ, শনিবার। ১৭৮-৩৬ ওয়েক্সফোর্ড টেরেসের একটি টিউটোরিং হোমের দো’তলায় ‘বিশ্ব নারী দিবস’ নিয়ে নিউ আমেরিকান উইমেন’স ফোরামের আলোচনা। সুন্দর ছিমছাম সাজানো হল। সবকিছুতে নারীদের স্পর্শ স্পষ্ট। উপস্থিতিতেও নারীর প্রাধান্য। তবে উদযাপনে রাজা-প্রজা, উজির-নাজিরের কোন শ্রেণিভেদ নেই। কোন মঞ্চ নেই। প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সভাপতির পৃথক কোন আসন নেই! নেই কোন চেয়ার-টেবিলও। এক সারিতে সবার আসন। শ্রোতা-বক্তা একাকার।
নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার বেশ পরেই অনুষ্ঠান শুরু হয়। আয়োজকরা সেজন্য বিনয়ের সঙ্গে ক্ষমাও চেয়ে নিলেন। সুচারু পরিচালনায় ইউমেন’স ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডালিয়া চৌধুরী ও কানাডা থেকে আগত সাংস্কৃতিক সংগঠক মধুবন্তি মৌ। প্রথমে অতিথি বক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি, সমাজ সংগঠক সাঈদা আকতার লিলি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি, বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী সাবিনা নিরু এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক, প্রেজেন্টার, এনওয়াই পিডি’র কর্মকর্তা শামসুন্নাহার চৌধুরী নূপুরকে ফুলের তোড়া দিয়ে সম্মাননা জানান যথাক্রমে নিউ আমেরিকান ডেমোক্র্যাটিক ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি এবং নিউ আমেরিকান উইমেন’স ফোরামের ও নিউ আমেরিকান ইয়ুথ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা, মূলধারার রাজনীতিবিদ মোরশেদ আলম, উইমেন’স ফোরামের উপদেষ্টা, নারী নেত্রী রীনা সাহা এবং ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান।
শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে। ‘জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা’ উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর শুরু হয় বক্তৃতা। স্বাগত বক্তব্য দেন উইমেন’স ফোরামের সভাপতি রুবাইয়া রহমান। তিনি তার ফোরামের কার্যক্রম, বিশেষ করে নারী উন্নয়ন ও নারীর মর্যাদা নিয়ে কাজ করার কথা তুলে ধরেন।

নিউইয়র্ক: ওমেন্স ফোরামের নারী দিবসের অনুষ্ঠানে কেক কাটার দৃশ্য।

এরপর একের পর এক অতিথি বক্তা সাবরিনা নিরু, নূপুর চৌধুরী ও সাঈদা আকতার লিলি। তারা ৩ জনই অতি চমৎকারভাবে সমাজে নারীর অবস্থান, নারীদের করণীয় এবং ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিয়ে অনুসরণীয় কথা বলেন।
তাদের পর মূল প্রতিপাদ্য নারী দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন উইমেন’স ফোরামের নির্বাহী উপদেষ্টা অধ্যাপিকা হুসনে আরা।
নারী সমাজের ধারাবাহিক অগ্রযাত্রা নিয়ে কথা বলেন ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী আনোয়ার সোবহানী, ইয়ুথ ফোরামের প্রেসিডেন্ট, তরুণ-মেধাবী ও প্রতিশ্রুতিশীল নেতা আহনাফ আলম, সংগীত শিল্পী মেহেরুন আহমেদ, উইমেন’স ফোরামের নির্বাহী সম্পাদক রুপা খানম, নিউ আমেরিকান ডেমোক্র্যাটিক ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাব্বী সাঈদ, উইমেন’স ফোরামের উপদেষ্টা রীনা সাহা, জুডিশিয়াল ডেলিগেট ও ইয়ুথ ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট নুসরাত আলম।

নিউইয়র্ক: নারী নেত্রী সায়ীঈদা আকতার লিলিকে ফুলেল সংবর্ধনা জানান ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান।

সবশেষে সমাপনী বক্তব্যে নারী দিবস পালনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন মূলধারার রাজনীতিবিদ মোরশেদ আলম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উইমেন’স ফোরামের উপদেষ্টা রীনা সাহা। সঙ্গীত পরিবেশন করেন মুহম্মদ হাসান মাসুদ ও রোজি সাঈদ। অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় ছিলেন ডালিয়া চৌধুরী। সঙ্গীত পরিবেশন ও সাউন্ডে ছিলেন উদীপ্ত চৌধুরী। সার্বিক সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে উইমেন্স ফোরামের নির্বাহী উপদেষ্টা সালেহা মোরশেদ ও উৎপল চৌধুরী।
বক্তারা সবাই সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর পূর্ণ সম্মান ও মর্যাদা এবং সব অধিকার প্রতিষ্ঠায় যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।
তারা বলেন, নারীর পূর্ণ বিকাশের পথে সব বাধা দূর করতে হবে এবং তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকে নেয়ার অধিকার দিতে হবে।
সবশেষে কেক কেটে এবং ঘরের রান্না ডিনার আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।