নাসায় গবেষণার সুযোগ পেলেন আদিবা সাজেদ

ঠিকানা রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) অর্থায়নে পড়ালেখার পাশাপাশি নাসার নিজস্ব ল্যাবে রিসার্চের সুযোগ পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির মেধাবী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আদিবা সাজেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনাটিকস (এআইএএ) আয়োজিত সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফোরামে অংশ নেন আদিবা। ফোরাম থেকে বিশ্বের ১৩ জন শিক্ষার্থীকে নাসার ল্যাবে রিসার্চের পাশাপাশি পড়ালেখার জন্য অর্থায়ন করা হয়। নির্বাচিত ১৩ শিক্ষার্থীর একজন হলেন আদিবা।
আদিবার মা নিউইয়র্কের পরিচিত মুখ, লেখক ও সাংবাদিক রওশন হক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, আদিবা সাজেদ বিশ্বের ১৩ জনের মধ্যে একজন হিসেবে সিলেক্ট হয়ে এই প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। কর্নেল ইউনিভার্সিটি তাদের ইউনিভার্সিটিকে রিপ্রেজেন্ট করতে একমাত্র আদিবাকেই মনোনীত করে ওই প্রোগ্রামে পাঠিয়েছে। গত ২ বছর ধরে আদিবা পড়াশোনার পাশাপাশি নাসার মনোনীত কর্নেল ইউনিভার্সিটির অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবরেটরিতে কাজ করছিলো। গত দুই বছরের ভালো রেজাল্ট এবং কর্মদক্ষতার কারণে কর্নেল ইউনিভার্সিটি আদিবাকে এই সুযোগ দেয়। এর আগে ওই পোগ্রামে জয়েন করার জন্য তাকে অনেকগুলো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়েছে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে পাগলের মতো পড়ে নাসার সব পরীক্ষা ভালোভাবে পাস করে। এবার নাসার গবেষণা ল্যাবে জগদ্বিখ্যাত সব বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আদিবা নির্বাচিত হয়েছে।

মা-বাবা ও বোনের সাথে আদিবা সাজেদ

রওশন হক আরও লিখেছেন, এআইএএ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফোরাম এবং এক্সপোজিশন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং এ সংক্রান্ত নীতিগুলো কভার করে। যা মহাকাশের ভবিষ্যৎকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছে। ফোরামটি মহাকাশ গবেষণা, উন্নয়ন এবং প্রযুক্তির জন্য বিশ্বের বৃহত্তম ইভেন্ট। যারা ১১টি স্বতন্ত্র প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো একত্রিত করে। এআইএএ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফোরামের প্রতিনিধিদের মধ্যে ৪৩টি দেশের প্রায় ১ হাজার করপোরেট, অ্যাকাডেমিক এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি স্নাতক এবং স্নাতক ছাত্র এবং মহাকাশ পেশাদাররা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আদিবার বিষয়ে তার মা রওশন হক জানান, আদিবা ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে ফিজিক্সে ভর্তি হন। সেখানে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তৃতীয় সেমিস্টারে পড়াশুনা করছে। প্রথম বর্ষ শেষ করার পর সে অ্যারোস্পেস ইনিজিনিয়ারিংয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
কর্নেল ইউনিভার্সিটির একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে এ বছর আদিবা এআইএএ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফোরামে অংশ নেয় উল্লেখ করে রওশন হক বলেন, আদিবা কর্নেল ইউনিভার্সিটির একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ওই ফোরামে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হয়েছে, এটা বাবা-মা হিসাবে আমাদের জন্য খুবই গর্বের।
তিনি জানান, আবিদা নাসা ও বোয়িংসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অফার পেয়েছে। কিন্তু সে চাচ্ছে নাসার অধীনে থেকে পড়ালেখা ও গবেষণা করবে। তিনি জানান, আদিবার জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুলে পড়লেখা করে। এরপর পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসে।
তিনি বলেন, ‘আদিবা ভালো পড়াশোনার জন্য এইট গ্রেড ও টুয়েলভ গ্রেডে দুইবার ভেলোডিকটেরিয়ান হয়। এছাড়া ২০১৯ সালে (স্যাট) পরীক্ষায় ১৬০০ নম্বরের মধ্যে ১৫৮০ নাম্বার পেয়ে ১২টি আইবিলিগ কলেজে পড়াশোনার সুযোগ পায়।’
আদিবা বিভিন্ন ধরনের এক্সট্রা ক্যারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসের সঙ্গে যুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে জাপানি শিক্ষা ব্যবস্থা ‘কুমনের’ ম্যাথের হেড ছিল। নিউইয়র্কের কয়েকটি ব্র্যাঞ্চে কাজ করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আদিবার।

অন্যান্যদের সাথে আদিবা সাজেদ (ডান থেকে দ্বিতীয়)