ঠিকানা অনলাইন : সুপার টুয়েলভে পাকিস্তানের প্রথম দুই ম্যাচ দেখে হয়তো কেউ কল্পনাও করেনি, বাবর আজমরা সেমিফাইনাল খেলবেন। ভাগ্যের ছোঁয়ায় সেই ‘অসাধ্যসাধন’ তো তারা আগেই করেছে, এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালও নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। ৯ নভেম্বর সিডনিতে বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত ব্যাটিং জুটিতে সেমিতে কিউইদের ৭ উইকেটে হারিয়েছে তারা।
এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করল পাকিস্তান। ২০০৭ সালে প্রথম আসরে ফাইনাল খেললেও শিরোপা জেতা হয়নি। সেই আক্ষেপ তারা ঘোচায় দুই বছর পর। এবার ১৩ বছর পর ফাইনালে উঠল পাকিস্তান। গত বিশ্বকাপে বাবররা ঘরে ফিরেছিল সেমির মঞ্চ থেকে। আর টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ হারাল নিউজিল্যান্ড। গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে শিরোপা-স্বপ্ন বিসর্জন দিতে হয় কেন উইলিয়ামসনদের।
এবারের সুপার টুয়েলভে প্রথম দুই ম্যাচে হেরে খাদের কিনারে গিয়ে পড়ে পাকিস্তান। সেখান থেকে টানা তিন জয়ের সঙ্গে ভাগ্যের ছোঁয়ায় সেমিতে ওঠে তারা। আর সেখানেই বাজিমাত। গ্রুপ-১ থেকে প্রথম দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করা নিউজিল্যান্ডকে হারাল দাপটের সঙ্গে। কিউইদের দেওয়া ১৫৩ রানের লক্ষ্য ৫ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় তারা। নিজেদের নামের সঙ্গে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ শব্দটি যে জুড়ে আছে, তারই যেন আরেক প্রমাণ এই আসরে দিচ্ছে পাকিস্তান। ১৯৯২ সালে ইমরান খানের নেতৃত্বে খুব কষ্টের সঙ্গে ফাইনালে উঠে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল তারা। এবার যেন ঠিক ৩০ বছর আগের স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনছেন বাবররা।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টসে জিতে শুরুতেই বিপদে পড়ে নিউজিল্যান্ড। দলীয় ৩৮ রানে দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন (৪) ও ডেভন কনওয়েকে (২১) হারায় তারা। বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি গ্লেন ফিলিপসের (৬) ইনিংস। এরপর এক প্রান্ত আগলে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন উইলিয়ামসন। শাহিন আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার হয়ে শেষ উইকেট হিসেবে সাজঘরে ফেরা কিউই অধিনায়ক ৪৬ রান করেন ৪২ বলে। নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে ১৫২ রানের পুঁজি এনে দেন ড্যারিল মিচেল। ৩৫ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন জিমি নিশাম।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকে এবার পাকিস্তানের টপ-অর্ডারদের নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঠিকই জ্বলে উঠলেন বাবর-রিজওয়ান। দুজনের ব্যাটেই দলীয় শতক পেরোয় পাকিস্তান। ১০৫ রানে থামে তাদের জুটি, যা এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানের উইকেটজুটিও। ট্রেন্ট বোল্টের ওভারে ৪২ বলে ৫৩ রান করে বাবর এবং ৪৩ বলে ৫৭ রান করে রিজওয়ান ফিরলেও জয় পেতে আর কোনো বিপদের মুখে পড়তে হয়নি পাকিস্তানের। ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান করে তারা। তিনে নামা মোহাম্মদ হারিস ২৬ বলে করেন ৩০ রান। শান মাসুদ ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন রিজওয়ান।
আগামী ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল। আগামীকাল দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার ম্যাচে বিজয়ী দলটাই প্রতিপক্ষ হবে পাকিস্তানের।
ঠিকানা/এনআই