নির্বাচনে দুই সতিন, ছোট বউকে সমর্থন দিয়ে বড় বউকে তালাক দিলেন চেয়ারম্যান

বাঁ থেকে প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবি, ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক ও দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুন। ছবি : সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : আসন্ন রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে অংশ নিচ্ছেন দুই সতিন। এতে বেকায়দায় পড়েছেন তাদের ইউপি চেয়ারম্যান স্বামী। তিনি ছোট বউকে সমর্থন দিয়ে বড় বউকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে।

দুই স্ত্রীকে নিয়ে বেকায়দায় পড়া এই ব্যক্তির নাম রেজাউল হক। তিনি বাগমারার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক তার বড় ভাই। রেজাউল হক আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন।

রাজশাহীর বাগমারা, দুর্গাপুর ও মোহনপুর উপজেলা নিয়ে জেলা পরিষদের সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ড। এই আসনে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন রেজাউল হকের প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবি ও দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুন। অথচ দুজনের কেউ আগে কখনো রাজনীতি করেননি। তবে ফিরোজা খাতুন স্বামী রেজাউল হকের সমর্থন পেয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাছিমার সঙ্গে রেজাউলের ৩২ বছরের সংসার। আর ফিরোজার সঙ্গে সংসার ১৩ বছরের। নাছিমা বাগমারার শিকদারী বাজারে স্বামীর বাড়িতেই থাকেন। তবে রেজাউল বেশির ভাগ সময় থাকেন উপজেলা সদরের ভবানীগঞ্জে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ভাড়া বাসায়। বারণ করা সত্ত্বেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় রেজাউল তার ৩২ বছরের সংসার ভেঙে প্রথম স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন। বিষয়টি অবহিত করেছেন ভোটারদেরও।

বিষয়টি স্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক বলেন, ‘আমার প্রথম স্ত্রীর সন্তান আছে। নাতি-নাতনি আছে। তাদের নিয়েই থাকে। দ্বিতীয় স্ত্রীর কোনো সন্তান নেই। তাই সবাই তাকেই ভোটের জন্য সমর্থন দিয়েছে। আমার বড় ভাই এমপি সাহেবও চান যে ফিরোজা জেলা পরিষদের সদস্য হোক। কিন্তু নাছিমা নির্বাচনে এসেছে। নিষেধ করলেও শোনেনি। এখন স্বামীর অবাধ্য হলে কী করার আছে? আমি তালাক নোটিশ পাঠিয়েছি।’

নাছিমা বিবি জানান, স্বামী রেজাউল হক তালাক নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে এখনো হাতে পাননি। নাছিমা বলেন, ‘ভোটে এসেছি, আমি এর শেষ দেখেই ছাড়ব। ভোটের ফলাফলে যা হবে মেনে নেব।’

ফিরোজা খাতুন বলেন, ‘নির্বাচনে আমার স্বামীসহ সব ভোটারের সমর্থন আছে। আমিই ভোটে জয়ী হয়ে আসব বলে বিশ্বাস করি।’

জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে আজ ১৮ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের সময় ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর। আপিল নিষ্পত্তি ২২ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২৬ সেপ্টেম্বর। এরপর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শেষে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১৭ অক্টোবর।

ঠিকানা/এনআই