ছলিম উল্লাহ মেজবাহ : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন ১৫ মে আপিল বিভাগেও বহাল থাকার পর দলের নেতারা মুক্তির আভাস দেখছেন। কবে নাগাদ মুক্তি পাচ্ছেন নির্দিষ্ট করে কিছু না জানালেও বিএনপির সিনিয়র নেতাদের আশাবাদ শিগগিরই মুক্তি পেতে যাচ্ছেন ম্যাডাম। তারা বলেন, আমাদের বিশ্বাস মূল মামলার জামিন হয়েছে।
বাকি মামলাগুলোতে গ্রেফতারি পরোয়ানা হলেও তা সহজে জামিন দেবেন আদালত। তারা আরো মনে করেন, এ ব্যাপারে সরকার জামিনে বাধা না দিলে, কেবল প্রক্রিয়া শুধু তার বের হওয়ার। তৃণমূল নেতাদের মধ্যে একই আভাস দেখা গেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চোখে একই আভাস। তারা মনে করেন সাজাপ্রাপ্ত মামলায় বেগম জিয়ার জামিন হলে বাকি সাধারণ মামলাগুলোতে তাকে আদালত জামিন দিতে পারেন। বিদেশিরা বেগম জিয়ার জামিন বিষয়ে আপাতত স্বস্তিবোধ করছেন। তারা মনে করেন দেশে একটি সুষ্ঠু গণতন্ত্র ফিরে আসবে। আগামীতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন গঠনের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খুবই আন্তরিক হবেন।
এদিকে সরকারের আগ্রাসী ভূমিকার মোকাবিলা করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিতেও দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয় বিএনপির পক্ষ থেকে। খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি যে কোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। সে প্রস্তুতির কথা কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত বার্তা দেন তিনি। তার বার্তা পাওয়ার পর দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের মধ্যে নির্বাচন প্রস্তুতির প্রতি নজর দেখা গিয়েছিল। কিন্তু জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দ-িত হয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর নির্বাচনের অবস্থান থেকে সরে শুধু খালেদার মুক্তির আন্দোলনের প্রতি নজর দেন দলটির নেতাকর্মীরা।
কিন্তু ১৫ মে আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিন বহান রাখলে বিএনপির নেতাদের মধ্যে হতাশার চাপ কমে নির্বাচনমুখী হওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। দলটির নেতারা আরো মনে করেন, ম্যাডামের মুক্তির ব্যাপারে আমরা শতভাগ বিশ্বাসী। কবে মুক্তি পাচ্ছেন সে ধরনের নির্দিষ্ট করে সময় না বললেও তাদের আশাবাদ শিগগিরই বেগম জিয়া মুক্তি পাবেন। তবে দলটির একাধিক নেতা মনে করেন আন্দোলন ছাড়া সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেবে না। যদি স্বাভাবিকভাবে তিনি মুক্তি পান, তাহলে দেশবাসীকে নিয়ে একাদশ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজানো হবে। আর স্বাভাবিকভাবে মুক্তি না দিলে আন্দোলনের বিকল্প কিছুই ভাবছেন না তারা।
এ ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। বিচারের নামে যা খুশি তাই করছেন। দেখুন কত সংকীর্ণ এরা (সরকার)। মামলাগুলো মিথ্যা। ৩৬টি মামলা করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে তাতে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছিল বাসে আগুন দিয়েছেন, গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে ইত্যাদি। তিনি বলেন, এই মামলাগুলো যখন হাইকোর্টে জামিনের জন্য এসেছে সেখানে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বাধা প্রদান করেছেন।
খালেদার অন্যতম আইনজীবী মওদুদ আহমদ বলেন, আমি স্বীকার করি যে, একমাত্র আইন-আদালত করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভবপর নয়। তবুও আমরা আশাবাদী শিগগিরই খালেদা জিয়াকে সরকার মুক্তি দেবে। যদি মুক্তি না দেয়, তার একমাত্র পথ হলো রাজপথ। কোনো আন্দোলন ছাড়া জনগণের কোনো দাবি আদায় করা সম্ভবপর হয় নাই। তিনি বলেন, যে পথে দাবি আদায় করা যাবে সেই পথ আমাদের বেছে নিতে হবে। রমজান মাসের পরে কঠোর কর্মসূচির পথ আমাদের সেই পথ বেছে নিতে হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আন্দোলন ঘোষণা দিয়ে হয় না। কোটা আন্দোলন দেখুন। কোনো নেতাও ছিল না। সময় আসছে। জনগণ আর আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে না। নিজেরাই রাস্তায় নেমে নিজেদের অধিকার আদায় করে নেবে। তিনি বলেন, সরকার তখন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। আর বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি এবং ২০ দল ছাড়া দেশে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না।
অপরদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে দলের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ দিলেও তিনি জেলে যাওয়ার পর সেই প্রস্তুতিতে কিছুটা ভাটা পড়ে। কিন্তু নির্বাচন খুব কাছাকাছি সময় হওয়াতে শীর্ষ নেতারা কি খালেদার মুক্তি নিয়ে আন্দোলন করবে, না নির্বাচনের প্রস্তুতি নেব, অর্থাৎ শ্যাম রাখি না কুল রাখি এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের সময় বেশি বাকি না থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জোট পুরোপুরি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে অবস্থান করছে।
অন্যদিকে বিএনপি তার বিপরীতমুখীতে অবস্থান করছে। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এখনো নির্বাচনের ঢেউ না তুললে সব দিক খোয়া যেতে পারে দলটির। এমনটি মনে করছেন তৃণমূল বিএনপির নেতারা। তারা মনে করেন, এখন থেকে পুরোপুরি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করতে হবে।
অন্যদিকে দলীয় প্রার্থী বাছাই, ইশতেহার তৈরি ও নির্বাচনকেন্দ্রিক সাংগঠনিক প্রস্তুতির কাজ চলমান দলটির। তবে নির্বাচনের মাঠ সবার জন্য সমান থাকবে কিনা, তা নিয়ে দলটির নীতিনির্ধারকদের শঙ্কা রয়েছে। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, মাঠে সমান সুযোগ পেলে ক্ষমতাসীনরা যত কৌশলই নিক, খেলার জন্য প্রস্তুত আছে বিএনপি। বিএনপির সূত্র জানায়, শক্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় বাছাইয়ের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে গেল বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে ৭৭টি সাংগঠনিক দল মাঠপর্যায়ে সফর ও কর্মিসভা করেছে। স্থানীয়ভাবে বিবাদ মিটিয়ে নেতাদের মিলমিশ করিয়ে দেয়া। প্রয়োজনে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে রমজানের পর আন্দোলনে নামার জন্য দলকে প্রস্তুত থাকা।
খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছিলেন, আমরা নির্বাচন-আন্দোলন দুটিরই প্রস্তুতি নিচ্ছি। নেতাকর্মীরাও কাজ শুরু করেছেন। স্থানীয়ভাবে জনগণ থেকেও প্রচুর সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। মাঠপর্যায়ে সফরকারী একাধিক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে সরকার নানা লোভ ও টোপ দিয়ে বিএনপিতে বিভেদ তৈরি করতে পারে। এ আশঙ্কা থেকে নেতাকর্মীদের যে কোনো পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপিকে আদালতের বারান্দায় রেখে আবার একতরফা নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের জন্য শুভ হবে না।
বিএনপি একটি নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে আসছে। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, সহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। নেতারা বলছেন, উপযুক্ত সময়ে এই রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। সহায়ক সরকারের রূপরেখা প্রস্তুত করার পাশাপাশি একাদশ সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরির কাজও শুরু করা হয়েছে। দলের শুভাকাক্সক্ষী বুদ্ধিজীবীদের একটি অংশ এর সঙ্গে যুক্ত আছে। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ‘ভিশন ২০৩০’ শিরোনামে যে খসড়া পরিকল্পনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেছিলেন, সেটির অবলম্বনে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করা হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, জরিপ ও গবেষণার কাজে পেশাদার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েও বিএনপি সারাদেশে মাঠপর্যায়ে ভোটারদের মনোভাব জানার পদক্ষেপ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে দুই দলের সম্ভাব্য জনপ্রিয় প্রার্থীর পাশাপাশি ভোটারদের চাহিদা জানা, তারা কেমন প্রার্থী চান, নির্বাচনী ইশতেহারে কী কী আসা উচিত ইত্যাদি প্রশ্ন থাকছে বলে জানা গেছে। এদিকে কয়েক দফায় উদ্যোগ নিয়েও মাঠপর্যায়ে বিএনপির কমিটি গঠনের কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি। ৮১টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৫১টির আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা গেছে। আরো পাঁচ-ছয়টি জেলার কমিটি গুছিয়ে আনা হয়েছে। খালেদা জিয়া জেল থেকে বের হওয়ার পর বাকিগুলো ঘোষণা করা হবে। ছাত্রদল, কৃষক দলসহ কয়েকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মহিলা দল, যুবদল ও মুক্তিযোদ্ধা দলের কমিটি হয়েছে। সব অঙ্গসংগঠনকে দ্রুত মাঠপর্যায়ে কমিটি করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে দলের একাধিক সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ প্রাথমিকভাবে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৫টির মতো আসনে প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত, যাদের রদবদলের সম্ভাবনা কম। এই তালিকায় দলের শীর্ষস্থানীয় ও সিনিয়র নেতারা আছেন। এর বাইরে আরো শতাধিক আসনেও প্রাথমিক প্রার্থী বাছাই হয়েছে। তবে সেটা চূড়ান্ত নয়। তাদের যোগ্যতা ও স্থানীয় জনপ্রিয়তা যাচাই করা হবে। ২০-দলীয় জোটের শরিকদের পাশাপাশি জোটের কিছু আসন ফাঁকা রাখা হবে। আবার জোটের বাইরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে যদি সমঝোতা হয়, তাদের সঙ্গে সমন্বয় করারও চিন্তা আছে। দলটির আরো একাধিক সূত্রগুলো বলছে, এবারের নির্বাচনে বিএনপি আরো উদার রাজনীতির পরিকল্পনা নিয়েছে। সরকারবিরোধী নির্বাচনী পাল্লা ভারী করতে এবার প্রয়োজন হলে ২০-দলীয় জোটের বাইরের দলকেও ছাড় দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের একাধিক নেতা বলেন, একাধিক নেতা মনে করছেন সরকার বিএনপিকে আবারো নির্বাচনের বাইরে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা করবে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপিকে আরো চাপে রাখতে সব ধরনের কৌশল প্রয়োগ করবে। মাঠপর্যায়ে কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাজাহান বলেন, আমরা যে কোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। ভয় এক জায়গায়, সমতল মাঠ পাব কিনা। দরকার পরিবেশ। নির্বাচনের তফসিলের পর কেউ যেন এককভাবে মাঠ দখলে নিতে না পারে, সে পরিবেশ সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, আমাদের সব কিছুর আগে এখন ম্যাডামের মুক্তির বিষয় প্রথম। তারপর ধীরে ধীরে সব কিছু করা হবে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, কর্তৃত্ববাদী শাসন থেকে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরানোর জন্যও আগামী সংসদ নির্বাচন জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখনই মাঠ দখল করে আছে। নির্বাচনের মাঠ দখলে রাখার অভিপ্রায় থেকেই সংবিধান সংশোধন করে মেয়াদপূর্তির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বিধান করেছে। অর্থাৎ এক সংসদ বহাল রেখে আরেক সংসদ নির্বাচন কোথাও নেই। অবশ্য প্রায় এক যুগ ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির জন্য আগামী সংসদ নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা-না থাকার লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রতিরক্ষা চুক্তিসহ নানা গোপন চুক্তির মাধ্যমে যে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশ বিক্রি করে দিতে পারেন তার কাছে গণতন্ত্রই বা কী আর অবাধ নির্বাচনই বা কী, কোনোটিরই কোনো দাম নেই।
তিনি বলেন, ক্ষমতার আমলকী করতলে ধরে রাখার জন্য তারা এহেন অনাচার নেই যেটি তারা করছেন না। ক্ষমতার সোনার হরিণের পেছনে ছুটতে প্রধানমন্ত্রীর কোনো ক্লান্তি নেই। যিনি জনসমর্থন ছাড়া ক্ষমতাকে যক্ষের ধনের মতো আগলে রাখেন তার কাছে গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন কোনোই বহন করে না।
রিজভী আরো বলেন, দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে আর বেগম খালেদা জিয়াকেও মুক্ত করা হবে। বেগম খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচন এদেশে হবে না, হতে দেয়া হবে না। আর আন্দোলন সম্পর্কে বিশ্বনন্দিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে চাই- আন্দোলন সহিংস হবে, নাকি অসহিংস হবে তা নির্ভর করে সরকারের নীতির ওপর।
অপরদিকে ক্ষমতসীন আওয়ামী লীগের সরকারের আগ্রাসী ভূমিকার জন্যও বিএনপির শীর্ষ নেতারা প্রস্তুত রয়েছে। তারা বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুরো জাতিকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় নিয়ে যাচ্ছে। বিএনপিকে ধ্বংস করতে নানারকম ফন্দি-ফিকির করেও পারছে না। তাই এ সরকারের একরোখা বক্তব্যকে মোকাবিলা করতে হবে। কৌশলে খালেদা জিয়াকে প্রথমে মুক্ত করে তারপর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থার পর একাদশ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা যদি এই সরকারের পতন ঘটাতে না পারি তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না, শেখ হাসিনাও আমাদের নেত্রীকে মুক্তি দেবে না। জেলগেটে তার লাশ ফেরত দেবে। আমাদের নেত্রীর লাশের জন্য জেলগেটে অপেক্ষা করতে হবে।