নিষ্ফল খুঁজে ফেরা

(প্রিয় শ্রদ্ধাভাজন মনির ভাইকে)

নন্দিনী মুস্তাফী :

তোমার শহরে যেয়ে আঁতিপাঁতি করে খুঁজেছি তোমায়,
তোমার থমকে যাওয়া শ্বাস-প্রশ্বাস-
আনমনে হেঁটে যাওয়া বিহ্বল পদক্ষেপ,
আর স্বেচ্ছায় রামের নির্বাসন
এ তুমি কাকে সামনে রেখে!
স্বভিমানে হয়েছিলে আত্মপ্রবঞ্চক!

যদিও জেনে গেছি তুমি নাই-
এই ধরার পরে, জলে স্থলে,
মঞ্চে, ভাষণে, আড্ডায়, চায়ের টেবিলে
আবৃত্তির আসরে,
সাহিত্যের পাতার ভাঁজে ভাঁজে!
বেদনাক্লিষ্ট বিষণ্ন মুখখানি
দেখব না কখনো বহমান নদীর কাকচক্ষু জলের আর্শিতে।

পৌষের রাতের আকাশপানে
জবুথবু হয়ে মুখোমুখি চাঁদের
জলভরা নয়ন আর বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে ঠাকুরের হৃদয়ের সবটুকু নীল রং
যতনে তুলে নিলে শুষ্ক ঠোঁটের ভাঁজে!
আমি জানি কতটা নীরব অভিমানে
বড্ড অসময়েই;
তোমার চলে যাওয়ার তোড়জোড় করে তৈরি হওয়াটা কতটা বেদনার্ত ভীতিকর!
এবং স্বাক্ষরিত সাক্ষী হয়ে গেলাম
তোমার চলে যাবার গল্পের লেখনীতে।

অবশেষে তুমি হারালে-
গভীর শূন্যতা বুকে নিয়ে,
মন খারাপের ধূসর মেঘের আর্তনাদ
ক্লান্ত হাত দু’খানা প্রসারিত করে-
শত সহস্র রাতের নির্ঘুম ক্লান্ত চোখের,
না ভাঙা গভীর ঘুমের ভেতর দিয়ে:
জানলেও না বা জানবেও না কোনো দিন
কী নিদারুণ অপেক্ষায় জেগে আছে মা!
তুমি হেঁটে যাবে বলে স্মিত হেসে
মায়ের চোখে চোখ রেখে অপলক!
যেভাবে এসেছিলে তিরিশ বছর আগে!