পাল রাজবংশের উত্তরাধিকার

(শেষ অংশ)

শামসাদ হুসাম : সিলেটের শেষ হিন্দু রাজা গৌড় গোবিন্দের শাসনামলের শেষের দিকে পঞ্চখণ্ডে তখন পর্যন্ত পাল রাজত্ব বহাল ছিল। তখন রাজা ধর্মপালের অধীনে শাসিত ছিল ঐ অঞ্চল।
রাজা কালিদাসের পর সপ্তম পুরুষ পর্যন্ত ‘রাজা’ উপাধি ধারণ করে তারা ঐ অঞ্চলে শাসনকার্য পরিচালনা করে গেছেন স্বাধীনভাবে। সেই সময়ে কাউকেই রাজস্ব দিতে হয়নি।
পঞ্চখণ্ডে পাল শাসনের সময়কাল ছিল প্রায় একশ বছরের মত। পরিবর্তীতে ১৩০৩ খৃষ্টাব্দে হযরত শাহজালাল (র.)-এর সিলেট বিজয়ের মধ্য দিয়ে ঐ জনপদ মুসলিম শাসনের আওতাভুক্ত হয়। হযরত শাহজালাল (র.)-এর সফরসঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার মধ্য থেকে খাজা আদিনা (র.) তার কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশে পঞ্চখণ্ড এলাকায় বসতি স্থাপন করেছিলেন। ঐ সাধক পুরুষের সমাধি রয়েছে বিয়ানীবাজারের ‘চারখাই’তে।
ঐ এলাকাটির পরিবর্তীতে নামকরণ হয়েছিল আদিনাবাদ হিসেবে। তবে ‘বিয়ানীবাজার’ নামকরণের পিছনেও পাল রাজাদের অবদান রয়েছে। গহীন জঙ্গল আর টিলাবেষ্টিত ঐ জনপদে তখন প্রচুর হিংস্র প্রাণির বিচরণ ছিল। সিলেটের প্রথম ‘রায়বাহাদুর’ খেতাবপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব হরেকৃষ্ণ রায় বাহাদুরের পুত্র কৃষ্ণকিশোর পাল চৌধুরী একটি এলাকাকে জঙ্গল মুক্ত করে বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। সকাল বেলা কেনাকাটা করে সন্ধ্যায় আগেই সবাইকে ঘরে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিলে মানুষের মুখে মুখে বাজারটির নামকরণ হয়ে যায় ‘বিহানের হাট’। সেই থেকে বিয়ানীবাজার।
রাজা কালিদাস পালের পুত্রদের মধ্যে প্রথম ছিলেন রাজা হরধন এবং ২য় পুত্র ছিলেন রাজা হরপ্রসাদ। হরপ্রসাদের তিন পুত্র ছিলেন। ১ম রাজা বারনসী পাল, ২য় রাজা রতিরাম এবং ৩য় রাজা বিশ্বনাথ। এই তিন রাজার শাসনামলের সময় রাজ্যের ভৌগলিক সীমানার যেমন বিস্তৃতি ঘটেছিল, একই সাথে তারা প্রজাদের সুযোগ-সুবিধার দিকেও লক্ষ্য রেখেছিলেন।

নানা ধরণের সংস্কার সাধন করা ছাড়াও রাজা বারানসী পাল স্থানীয়ভাবে জলসংকট মোকাবেলায় পঞ্চখণ্ড এলাকারভেতরে যে সুবৃহৎ দীঘি খনন করেছিরেন, তার নাম বারপালের দীঘি। ঐ দীঘির পারে ছিল পাল রাজাদের বসতি গ্রাম। কালক্রমে সেই গ্রামের নাম ‘দীঘির পাড়’ হয়ে গেল।
পাল রাজাদের কয়েকজনই জলসংকট মোকাবেলায় কয়েক জায়গাতে এই ধরণের আরো কয়েকটি বৃহৎ আকারের দীঘি খনন করেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম হলো- ঘুঙ্খদিয়া গ্রামে খননকৃত দীঘিটি, যার নাম ‘গদাপালের দীঘি’। এই দীঘি ছাড়াও পরবর্তী রাজা শম্ভুপাল ও ভবানী নারায়ণ পাল আরো দুইটি বৃহৎ আকারের দীঘি খনন করে প্রজাদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
পঞ্চখণ্ডের প্রাচীন বিগ্রহ এবং বাসুদেবের রথ সবকিছুর মূলে ঐ পাল রাজাদের আনুকূল্য ছিল। পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে ননীপাল চৌধুরী, গৌরনারায়ণ পাল এবং হরনারায়ণ পাল চৌধুরীরা বংশের কৃর্তিমান পুরুষ ছিলেন। পরবর্তীদের মধ্যে হরেকৃষ্ণ পাল চৌধুরী কলেক্টরির দেওয়ান ছিলেন। তাঁর অপর ভাই কৃষ্ণরায় চৌধুরীর জনহীতকর কাজের জন্য বৃটিশ সরকারের কাছ থেকে ‘রায়বাহাদুর’ খেতাবপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
এ বংশের উত্তরপুরুষদের মধ্যে রাধানাথ পাল চৌধুরী ফার্সি ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন। ‘গোলে বাকাওয়ালী’ গ্রন্থের বাংলায় অনুবাদ করা ছাড়াও কয়েকটি গ্রাম্য গীতিনাট্য রচনা এবং মঞ্চায়নে নিজে প্রধান ভূমিকা পালন করেন তিনি।
এছাড়াও পঞ্চখণ্ড অঞ্চলে ‘চতুষ্পাঠী’ ও ‘টোল’ প্রতিষ্ঠায় তাদেও ভূমিকা স্মরণযোগ্য হয়ে আছে। বিয়ানীবাজারের প্রথম একটি মধ্য ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কৃষ্ণকিশোর পাল চৌধুরী। যা অত্র অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। পরবর্তীতে ঐ স্কুল হরগোবিন্দ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে পরিণত হয়ে জ্ঞান-শিক্ষার দুয়ার খুলে দিয়েছিল।
পঞ্চখণ্ডের ‘বৈরাগী বাজার’ ঐ পাল বংশের আনুকূল্যে স্থাপিত হয়েছিল। মূলত পঞ্চখণ্ডের ১নং থেকে ১৮ নম্বর পর্যন্ত তালুকগুলি ঐ পালবংশের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বদের নামেই বন্দোবস্ত দেয়া ছিল। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে পালবংশের উত্তর-পুরুষদের অবদানও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
এই বংশের পুরুষেরা যেমন স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, একইভাবে মহিলারাও সমান তালে অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সুধীর পাল চৌধুরী। তিনি ছিলেন পালবংশের ২৩তম প্রজন্ম।
সুধীর পাল চৌধুরীর ভাই স্বদেশ রঞ্জন পাল চৌধুরীও একজন স্বদেশী ছিলেন। এছাড়া ২৫তম প্রজন্মের সুরথ পাল চৌধুরী ও ২৬তম প্রজন্মের প্রশান্ত জ্যোতি পাল চৌধুরী ও পুর্ণেন্দু পাল চৌধুরী ছিলেন বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম।
এছাড়া বিপ্লবী তরুণ সংঘের সংগঠক ছিলেন স্বদেশ পাল চৌধুরী, আর অনুশীলন দলের বিপ্লবী ছিলেন সুরথ পাল চৌধুরী।
নানকার বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুরথ পাল চৌধুরী ছাড়াও বিপ্লবী নারী অর্পণা পাল চৌধুরী। তারা দুজন স্বামী-স্ত্রী ছিলেন।
১৯২৪ সালে বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানার মান্দারকান্দি গ্রামে অর্পণা পাল চৌধুরীর জন্ম। তার পিতার নাম ছিল গিরিশচন্দ্র ধর। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অবস্থায় তিনি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। হাইস্কুলে উঠে ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দিলেন। বামধারার রাজনৈতিক এক কর্মী হিসেবে অনেক বড়মাপের নেতাদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয় তার। বৃটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৪৭-এর স্বাধীনতা আন্দোলন ও পরবর্তী কৃষক আন্দোলনের অগ্রগামী নেতা হিসেবে জমিদারী উচ্ছেদ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অপরাধে দীর্ঘদিন কারাবাস করেছেন। এবং পুলিশের নির্মম অত্যাচারের অন্তঃসত্ত্বা অর্পণা পাল চৌধুরীর গর্ভের সন্তান পর্যন্ত আলোর মুখ দেখতে পায়নি। ১৯৪২ সালের দুর্ভিক্ষের সময় গণনাট্য সংঘে যোগ দিয়ে এর সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের সদস্য হিসেবে সারা আসামজুড়ে দুর্ভিক্ষের মোকাবেলায় গান গেয়ে চষে বেড়িয়েছেন প্রত্যন্ত জনপদ। তার বিয়ে হয়েছিল বিয়ানীবাজার অঞ্চলের প্রখ্যাত জমিদার পরিবারের সন্তান সুরথ পাল চৌধুরী সাথে। কিন্তু তা সত্ত্বেও জমিদার পরিবারসমূহের সামন্তবাদী ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন জমিদারী উচ্ছেদের সপক্ষে সংগঠিত আন্দোলনে। দীর্ঘ কারাবাস শেষে ১৯৫৪ সালে মুক্তিলাভের পর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে স্থায়ীভাবে তিনি ভারতে চলে যান। তার এসব আন্দোলনে স্বামী সুরথ পাল চৌধুরী ছাড়াও স্বামীর আপন বোন অমিতা পাল চৌধুরী (সেনগুপ্ত)-ও অন্যতম সহযোদ্ধার ভূমিকা পালন করেছিলেন।
বিয়ানীবাজারের পালবংশের আরো একজন কূলবধূর নাম সুখদা পাল চৌধুরী। জন্মসূত্রে তিনি ইটা পরগণার গয়গড় গ্রামের সন্তান। ১৮৯০ সালে তার জন্ম।
মাত্র নয় বছর বয়সে তার বিয়ে হয় বিয়ানীবাজারের পাল পরিবারের প্রমোদচন্দ্র পাল চৌধুরীর সাথে।
কৈশর-উর্ত্তীণ বয়সের সময়েই তিনি স্বদেশী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। আসলে পাল চৌধুরী পরিবারের রাজনৈতিক আবহাওয়া তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
সর্বভারতীয় নেত্রী সরোজিনী নাইডুর গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিয়ানীবাজারে যে প্রতিবাদ সভাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেছিলেন সুখদা পাল চৌধুরী। সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে এই বিষয়টি একটা অবিস্মরণীয় ঘটনা ছিল। পরিবর্তীতে তিনি মহিলা রাষ্ট্রীয় সংঘের সভানেত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তার সন্তানদের মধ্যে পুর্ণেন্দু পাল চৌধুরী ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। ১৯৪৭-এর দেশভাগের পরে সুখদাপাল চৌধুরী আসামের শিলচরে চলে গেলেও সেখানে অবস্থান করেও তিনি তার রাজনৈতিক সত্ত্বা বহাল রেখেছিলেন।
শিলচরের যে পল্লীতে বাস করতেন তিনি, সেই পাড়ার নামকরণ হয়েছিল ‘সুখদা পল্লী’। স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা পালন করায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী তাকে তাম্রফলকে খোদাই করা প্রশংসাপত্র দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন।
১৯৮৪ সালে ৯৮ বছর বয়সে সুখদা পাল চৌধুরী শিলচরে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তার এক পুত্র প্রশান্ত জ্যোতি পাল চৌধুরীও ছিলেন একজন রাজনৈতিক কর্মী। ভারত সরকার তাকেও তাম্রফলকে খোদাই করা প্রশংসাপত্র দিয়ে সম্মানিত করেছিল।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতাসংগ্রামী এই বীর রমণী ১৯৪২ সালে কারাবরণ করেছিলেন। একইভাবে তার পুত্র প্রশান্ত জ্যোতি পাল ছাত্রকালীন সময়েই ১৯৩২ সালে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের সক্রীয় কর্মী হিসেবে গ্রেফতারবরণ করে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন।
এছাড়া সুখদা পাল চৌধুরীর কন্যা হেনা পাল চৌধুরী ছিলেন পেশায় একজন শিক্ষক। কিন্তু শিক্ষকতাকে সমাজসেবায় উন্নীত করে বিশেষ এক কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় ১৯৯২ সালে ভারত সরকার তাকেও বিশেষ সম্মাননা স্মারকে ভূষিত করেছিল।
স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা পালন করার অপরাধে ঐ বংশের যে কয়েকজন ত্যাগী কর্মী বিভিন্ন সময়ে কারাবরণ করেছিরেন, তারা হলেনÑ সুধীর পাল চৌধুরী, স্বদেশ রঞ্জন পাল চৌধুরী, প্রশান্ত জ্যোতি পাল চৌধুরী ও পূর্ণেন্দু পাল চৌধুরী।
১৯৪৭-এর দেশভাগের পর ঐ পরিবারের ২৪তম অধঃস্তন পুরুষ হরেন্দ্রনাথ পাল চৌধুরী এবং তার ভাতিজা ভূপতি ভূষণ পাল চৌধুরী ছাড়া সবাই শিলচরসহ আসামের বিভিন্ন এলাকায় অভিবাসন গ্রহণ করেন।
হরেন্দ্রনাথ পাল চৌধুরীর দুই পুত্র ছিলেন মিহির পাল চৌধুরী ও তিমিরবরণ পাল চৌধুরী। মিহির পাল চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স পাস করে ১৯৭২ সালে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়ে পরবর্তীতে ২০০২ সালে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে অবসরগ্রহণ করেছিলেন। তার অপর ভাই তিমিরবরণ পাল চৌধুরী ছিলেন ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে মাথিউরা দ্বিপাক্ষিক হাইস্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন। ২০২০ সালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
ঐ পাল বংশের অধঃস্তন পুরুষ, বংশ তালিকার দশ নম্বরে অবস্থান করা প্রতাপ চন্দ্র পাল যে কোন কারণেই হোক জন্মসূত্রে পাওয়া সনাতন ধর্ম পরিত্যাগ করে যখন মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করলেন, তখন তার পক্ষে পঞ্চখণ্ডের পৈত্রিক বাড়িতে বাস করা সম্ভব ছিল না। সেই কারণে তিনি বিয়ানীবাজারের অদূরে লাউতা বাহাদুরপুরে বসতি স্থাপন করেন। তার স্থায়ী নিবাস হয়ে ওঠার শুরুর সেই সময়ে তিনি নিজের নামকরণ করেছিলেন ‘প্রচণ্ড খাঁ’। এরই ফলশ্রুতিতে নূতন সেই আবাসস্থল ‘বাগে প্রচন্ড খাঁ’ বা ‘প্রচণ্ড খাঁর বাগান’ নাম ’ধারণ করে নূতন একটি তালুকের জন্ম হয়।
কিèতু তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও তবে স্ত্রী তার সাথে ধর্ম পরিবর্তনে রাজি ছিলেন না। তিনি প্রতাপ চন্দ্রের অপর ভাই গদাধর পাল চৌধুরীর সাথে ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামে বাস করতেন। কিন্তু প্রতাপ চন্দ্র ধর্ম পরিবর্তন করলেও স্ত্রীর প্রতি মমত্ববোধ ত্যাগ করতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে ভাই গধাধর পাল চৌধুরীর কাছে স্ত্রীকে এক নজর দেখার আবেদন জানালে, কথিত ঘুঙ্গাদিয়ার সেই বিখ্যাত বারপালের দীঘির একপ্রান্তে তার স্ত্রী এসে দাঁড়ালে মাঝখানে পুকুরের বিশাল জলরাশিকে স্বাক্ষী রেখে অন্য পাড়ে মুসলিম যুবক প্রচন্ড খাঁ এক নজর স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে জাগতিক জীবনের সব সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন।
তারপরের ইতিহাস বাহাদুরপুরের চৌধুরীর বংশের সূচনাকাল। তবে পরে প্রচণ্ড খাঁ কোন পরিবারে বিবাহ করেছিলেন। ইতিহাস সেই বিষয়ে আগাগোঁড়াই নীরবতা পালণ করেছে।