পাসপোর্ট সংশোধনে লাগবে এনআইডি বা জন্ম সনদ

ঠিকানা রিপোর্ট : বাংলাদেশে কিছু কিছু মানুষের পাসপোর্টে তথ্য অনেক সময় জন্মনিবন্ধন সনদ কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) মতো হুবহু হয় না। কারো কারো পাসপোর্টে নামের বানান, জন্মতারিখসহ কিছু তথ্য গরমিল থাকায় তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে জটিলতায় পড়তে হয়। ফলে তাদের পাসপোর্ট সংশোধন করা জরুরি হয়ে পড়ে। পাসপোর্ট সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন এনআইডি। কিন্তু বেশির ভাগ প্রবাসীর এনআইডি নেই। তাদের এই সমস্যার সমাধানে পাসপোর্ট রি-ইস্যু করা হবে জন্মনিবন্ধনের ভিত্তিতে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার পাসপোর্টে তথ্যের গরমিল সংশোধনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্য বিবেচনায় নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। গত ১৩ ডিসেম্বর এ-সংক্রান্ত বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করা হয়।
পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের মধ্যে তথ্যের গরমিল হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য (নাম, পিতা-মাতার নাম, বয়স ইত্যাদি) অনুযায়ী পাসপোর্ট রি-ইস্যু করতে হবে। আরো বলা হয়েছে, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ বিবেচনা করতে হবে। প্রয়োজনে জেএসসি/জেডিসি/এসএসসি/দাখিল/কারিগরি/উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও সমমানের যেকোনো একটি সনদপত্র বিবেচনা করা যেতে পারে।
পাসপোর্টের তথ্য সংশোধন করার বিষয়ে আরো বলা হয়েছে, কারো তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হলে লিখিত আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে অধিদফতরের ওয়েবসাইট/সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে প্রদর্শিত নমুনা অনুযায়ী আবেদনকারীকে একটি অঙ্গীকারনামা যথাযথভাবে পূরণ ও স্বাক্ষর করে দাখিল করতে হবে।
সর্বশেষ জারি করা পরিপত্রটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এরপর তা কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের মহাপরিচালক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক, পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, জন্ম-মৃত্যু রেজিস্ট্রার জেনারেল, ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক।
সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত আগের পরিপত্রগুলো বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে এর আগে মোট তিনটি পরিপত্র জারি করেছিল সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এর আগে ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর জারি করা পরিপত্রে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীদের এনআইডি ও পাসপোর্টের মধ্যে তথ্যের গরমিল হলে যথা প্রমাণকের ভিত্তিতে এনআইডিতে প্রদত্ত তথ্য (নাম, পিতা-মাতার নাম, বয়স ইত্যাদি) অনুযায়ী পাসপোর্ট দেওয়া যাবে। অন্যদিকে গত ৩ নভেম্বর জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীদের এনআইডি ও পাসপোর্টের মধ্যে তথ্যের গরমিল হলে এনআইডিতে প্রদত্ত তথ্য (নাম, পিতা-মাতার নাম, বয়স ইত্যাদি) অনুযায়ী পাসপোর্ট দেওয়া যাবে।