ঠিকানা অনলাইন : পুলিশ কঠোর হলে আওয়ামী লীগের টিকে থাকা কঠিন হতো বলে মন্তব্য করেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তিনি বলেছেন, ‘আমি দেখেছি তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শেল্টার দেওয়া বা সহযোগিতা করার প্রবণতা বেশি।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ২০ আগস্ট শনিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ চিন্তা রয়েছে। আপনাদের প্রতি তার দুর্বলতা লক্ষ করেছি। আপনাদের সহযোগিতা আমরা সব সময় পেয়েছি। সামনের দিনে আরও সহযোগিতা চাই। তবে আমি কোনো অন্যায় সহযোগিতা চাই না। জনগণকে আপনারা একটু ভালো সার্ভিস দিন, যাতে জনগণ একটু ভালোভাবে থাকতে পারে।’
পুলিশকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা ভালো কাজ করছেন। আরও ভালো কাজ করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে আপনাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আপনাদের অনুরোধ করব, দেশকে ভালোবাসতে হবে, জনগণকে ভালোবাসতে হবে এবং জনগণকে শান্তিতে রাখতে হবে। কিছু কিছু জায়গায় এখনো কিন্তু হয়রানি আছে। অনেক থানায় হয়রানির শিকার হচ্ছে মানুষ। ওখান থেকে বেরিয়ে আসুন।’
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক থাকলেও তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শেল্টার দেওয়া বা সহযোগিতা করার প্রবণতা বেশি বলেই আমি দেখেছি। পুলিশ প্রশাসন যদি কঠিন হতো কিংবা আরও মারমুখী হতো, তাহলে আওয়ামী লীগের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে যেত। টিকে থাকতে আওয়ামী লীগকে অনেক বেশি কষ্ট করতে হতো। দুঃসময়ে আপনারা প্রমাণ করেছেন। বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য ছিলেন। কিন্তু আমরা সব সময় খেয়াল করেছি যে আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের সবারই দুর্বলতা কাজ করেছে। পুলিশ আমাদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে।’
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘সাধারণত যে দল ক্ষমতায় থাকে, দেশের পুলিশ বাহিনীকে তাদের দিকনির্দেশনায় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়। কিন্তু বরাবরই দেখা গেছে যে আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের এক ধরনের দুর্বলতা আছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হতো আমার বাড়িতে। ঢাকা থেকে বড় বড় নেতারা সে সময় আমার বাবার সঙ্গে আলোচনা করতে চট্টগ্রামে আসতেন। আমরা ছিলাম মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি। সে কারণে আমাদের প্রতি পুলিশের আচরণ ছিল অনেক নমনীয়।’
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী যদি সেদিন বিদেশে না থাকতেন, তাহলে তার ক্ষেত্রেও একই পরিণতি হতো। তাহলে আজ যে বাংলাদেশ আমরা দেখছি, যে ভুল তথ্য দিয়ে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল, তা আর সংশোধন হতো না। দেশের উন্নয়ন হতো না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, তখন থেকে ধীরে ধীরে বই-পুস্তকে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। পরবর্তী প্রজন্মকে কেউ চাইলেও এখন আর জোর করে ভুল পথে নিতে পারবে না।’
দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে মাল্টিপারপাস ড্রিল শেডে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত জেলা কমান্ডার এ কে এম সরোয়ার কামাল প্রমুখ।
ঠিকানা/এনআই