প্রধানমন্ত্রীকে জেএমসির প্রধান খতিবের চিঠি

ঠিকানা রিপোর্ট : প্রবাসীরা বাংলাদেশে গেলে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন। পদে পদে সমস্যার সম্মুখীন হন। প্রবাসীরা
দেশে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে সম্পদ কেনার পর সেগুলো নানা উপায়ে দখল করে নেয় সুবিধাভোগীরা। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হয়। কিন্তু দীর্ঘসূত্রতার কারণে সমস্যার সমাধান সহজে হয় না। এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত ও কার্যকর পদপেক্ষ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবর আবেদন জানিয়েছেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের (জেএমসি) প্রধান খতিব ও ইমাম, মসজিদ আল মামুরের মাওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ। সম্প্রতি তিনি গণভবনের ঠিকানায় প্রধানমন্ত্রীর বরাবর পাঠানো চিঠিতে লেখেন, প্রবাসীরা নানাভাবে দেশে হেয়প্রতিপন্ন হন। তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি, তাদের জায়গা-জমি জালিয়াতি করে অন্যরা দখল করে নেয়। প্রবাসীরা আর্থিক নিরাপত্তার প্রশ্নে, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের নিরাপত্তার প্রশ্নে সংকট ও দুশ্চিন্তায় থাকেন। এ ব্যাপারে সরকার এবং রাজনৈতিক দলের সুস্পষ্ট ভূমিকা দেখি না। দেশে প্রবাসীদের জমি বা অন্য সম্পদ বেদখল হয়ে যাচ্ছে। দখলকৃত সম্পদ উদ্ধারে সময় ও অর্থের ব্যাপক অপচয় হয়, কিন্তু সরকার বিষয়টাকে সেভাবে দেখে না। স্থানীয় প্রশাসনিক জটিলতা এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার অনেক রকম ঝামেলার মুখে ফেলে দেয়। প্রবাসীদের দেশের সম্পদ দখল করতে তাদের স্বাক্ষর নকল করে অবৈধভাবে নিয়ে নিচ্ছে। এর কোনো সমাধান নেই। তাই প্রবাসীরা যে দেশেই অবস্থান করবেন, সেখান থেকেও তার স্বাক্ষরকে সত্যায়িত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রবাসীদের সম্পদ রক্ষার প্রশ্নে মামলা-মোকদ্দমার দ্রুত সমাধান করার ব্যবস্থা করলে প্রবাসীরা সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, এসব সমস্যার সমাধানে সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলে দেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো দুই পৃষ্ঠার চিঠিতে আবু জাফর বেগ উল্লেখ করেছেন, আমরা বাংলাদেশকে ভালোবাসি। শুধু গরিব হওয়ার কারণে আমরা দেশ থেকে বিদেশে এসে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করি। জীবনের সবচাইতে মধুর সময়গুলো কোরবানি দিয়ে প্রবাসীদের বিদেশের মাটিতে কঠোর পরিশ্রম করে জীবনযাপন করতে হয়, যাতে করে নিজের এবং পরিবারকে আর্থিকভাবে সচ্ছল রাখা যায়। অনেকে বিদেশে পড়াশোনা করার জন্য আসে। কিন্তু বেশির ভাগ প্রবাসীই অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতা লাভের জন্য বিদেশে পাড়ি জমান এবং কঠোর পরিশ্রম করে দিন যাপন করেন।
তিনি লিখেছেন, প্রবাসীরা তাদের উপার্জিত বেশির ভাগ অর্থই দেশে পাঠিয়ে দেন, যাতে তাদের পরিবার-পরিজন সুুখে-শান্তিতে থাকতে পারে। কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে দেশে কেউ জমি কেনে কেউবা নিজের বা পরিবারের জন্য ঘর তোলেন দেশের মাটিতেই। কেউবা আবার ব্যবসায় অর্থ লগ্নি করেন। কিন্তু দেখা যায়, প্রবাসীরা নানাভাবেই দেশে হেয়প্রতিপন্ন হন।
তিনি আরো লিখেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো থাকুক। বাংলাদেশ ভালো থাকলেই আমরা ভালো থাকি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দেশের মাটিতে প্রবাসীদের নানাভাবে হয়রানি হতে হয়। তাই সকল হয়রানি প্রতিরোধের জন্য প্রবাসীদের পক্ষ থেকে আমি আপনার দরবারে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।