প্রবাসীদের জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ফ্রেশ ফুডের রুটি

ঠিকানা রিপোর্ট : নিউইয়র্কে বাংলাদেশি আমেরিকান মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান ফ্রেশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। প্রবাসীদের জনপ্রিয়তা অর্জন কোম্পানিটির যাত্রা শুরু গত জানুয়ারিতে। যাত্রা শুরুর মাত্র চার মাসের মাথায় এর উৎপাদিত পণ্য প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
জ্যামাইকা অ্যাভিনিউতে এই ফ্যাক্টরি স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে তিন ধরনের রুটি তৈরি করা হচ্ছে-সাদা আটার রুটি, ময়দার রুটি ও লাল আটার রুটি। রুটির পাশাপাশি রয়েছে পরোটাও। তিন ধরনের রুটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে লাল আটার ডায়াবেটিস রুটি। এসব রুটির রেসিপি দিয়েছেন বিখ্যাত শেফ টমি মিয়া। ইংল্যান্ডে থাকলেও এই কোম্পানির কনসালট্যান্ট পার্টনার তিনি। ইংল্যান্ড থেকে টমি মিয়া মাঝেমধ্যে এখানে আসেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ দেন। প্রতিষ্ঠানটি শুরু করার আগেও তিনি এখানে এসেছেন। কীভাবে রুটি তৈরি করতে হবে এর পুরো রেসিপি তিনি দেন। সেই সঙ্গে এখানে যারা কাজ করছেন, তাদেরকে দক্ষ হাতে প্রশিক্ষণ দিয়ে যান। তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তার রেসিপি অনুযায়ীই এসব রুটি তৈরি হচ্ছে।
কোম্পানির চেয়ারম্যান আল আমিন রাসেল বলেন, রুটিতে আমরা কোনো প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করি না। ফলে এতে কোনো কেমিক্যাল থাকে না। কেমিক্যাল কিংবা প্রিজারভেটিভ ছাড়াই এটি রাখা যায় এক মাসের মতো। ফ্রোজেন করা হলে রাখা যায় তিন মাসের মতো। সব মিলিয়ে এটি একটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা চাইলে এটি নিতে পারেন।
তিনি বলেন, জ্যামাইকা অ্যাভিনিউতে নিজস্ব কারখানাতেই আমরা এই রুটি তৈরি করছি। প্রতিদিন ১০ হাজার পিস রুটি উৎপন্ন ও বিক্রি করা হচ্ছে। আমরা মানুষের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি। আমরা গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
রাসেল জানান, ফ্রেশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ নিউইয়র্কে এফডিএ অনুমোদিত একটি প্রতিষ্ঠান। আমরা সব আইটেম তাদের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েই করছি। তাদের সার্টিফিকেট নেওয়া বাধ্যতামূলক। সেটি আমরা নিয়েছি। সেই সঙ্গে এটি ল্যাব টেস্টেও পাঠাতে হয়। সম্পূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরই বাজারে আসার অনুমতি মিলেছে। এখন আমরা আরো বেশ কয়েকটি আইটেমের অমুমোদন পেয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে সমুচা, শিঙাড়া, ডালপুরি, স্প্রিং রোলসহ বিভিন্ন আইটেম। শিগগিরই এগুলো বাজারে আসছে।
তিনি বলেন, নিউইয়র্কে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি, যারা এফডিএর অনুমোদন নিয়ে খাবারের প্রতিষ্ঠান করেছি। রুটি হোম মেইডের মতোই বলা যায়। কারণ আমরা ফ্রেশ রুটি, ফ্রেশ পরোটা তৈরি করার পর ফ্রেশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজের নামে দিনে দিনে ডেলিভারি দিই। প্রখ্যাত শেফ টমি মিয়া আমাদের সঙ্গে আছেন কনসালট্যান্ট পার্টনার হিসেবে। আমাদের পুরো রেসিপি তার দেওয়া। সেই অনুযায়ী সবকিছু তৈরি করছি। মার্কেটিং পলিসিও তিনি দিয়েছেন। বলা চলে, তার রেসিপি ও মার্কেটিং পলিসি বেশ সফল। মানুষ আমাদের খাদ্যপণ্যের খুবই প্রশংসা করছে। তিনি বলেন, টমি মিয়া ছাড়াও আমি আছি, আর আছেন আলী আহসান। আমি আছি চেয়ারম্যান হিসেবে আর প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন আলী আহসান। তিনি রিয়েল স্টেট ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। রুটির প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ট্রাভেল ব্যবসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত আছি। সেই সঙ্গে আমি বাংলাদেশ থেকে ব্যাগ এনে এখানে বিক্রি করি। সেটির নাম তন্দ্রা এন্টারপ্রাইজ। এটি দেশে করা হয়েছে। আড়াই লাখ পিসের ব্যাগের কন্টেইনার আসে দেশ থেকে। বাজার করার পর নন-ওভেন শপিং ব্যাগ যেগুলো দেওয়া হয়, সেগুলোর কথা বলছি। এখানে বিভিন্ন দোকানেই আমরা তা সরবরাহ করি। আমেরিকা ছাড়া কানাডাতেও এটি আসে।
তিনি বলেন, আমাদের রুটিগুলোর সুবিধা হচ্ছে ফ্রাইপেন, তাওয়াতে যেমন ভেজে খাওয়া যায়, তেমনি ওভেনে দিয়েও খাওয়া যায়। তাওয়া কিংবা ফ্রাইপেনে ভাজলে আলাদা মজা। ওভেনে দিলে ৪৫-৫০ সেকেন্ড দিতে হবে। এতে করেই এটি সাধারণ রুটির মতো হবে। খেতে খুবই সুস্বাদু। তবে তাওয়াতে ভেজে খেলে মজা একটু বেশিই লাগে।
তিনি বলেন, আমরা নিউইয়র্ক সিটির পাঁচ বরোতেই ডেলিভারি দিচ্ছি। জ্যামাইকায় ফাতেমা গ্রোসারি, মান্নান সুপার মার্কেট, প্রিমিয়াম সুপারমার্কেটসহ বিভিন্ন দোকানেই পাওয়া যায়। চেষ্টা করছি এর পরিসর আরো বাড়ানোর। রমজানে চাহিদা একটু কম থাকলেও এখন অনেক বেশি। আমরা চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় রেখেই এটি তৈরি করছি। এ ছাড়া আমাদের কাছ থেকে ক্রেতারা সরাসরিও রুটি কিনতে পারবেন। আমরা ১০০ পিসের প্যাকেট হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকি। আমরা হোম ডেলিভারির জন্য কোনো চার্জ নিচ্ছি না। দিন দিন আমাদের রুটির চাহিদা বাড়ছে। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আমরা রুটি তৈরি এবং সরবরাহ করছি।