সুব্রত চৌধুরী : নিউইয়র্ক, নিউজার্সিসহ সমগ্র উত্তর আমেরিকা জুড়ে হিন্দু ধর্ম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় দুর্গাপূজা মহা সাড়ম্বরে শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের দিব্যধাম, বাংলাদেশ হিন্দু মন্দির, জ্যাকসন হাইটসে বেলাজিনো পার্টি হলের অস্থায়ী মন্ডপে ইতোমধ্যে ধুমধামের সাথে শুরু হয়েছে। তাজমহল পাটিসহ আরো বেশি কিছু স্থানে ১৯ অক্টোবর থেকে দুর্গাপূজা পালনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
এদিকে শারদোৎসবের বার্তা পেয়ে নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটির প্রবাসী বাংগালি হিন্দুরা মেতে উঠেছে দুর্গোৎসবের হরেক আয়োজনে।
আটলান্টিক সিটিতে গত ১৫ অক্টোবর, সোমবার বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা, শারদীয় দুর্গোৎসব। আটলান্টিক সিটির ফ্লোরিডা এভিনিউর শ্রী শ্রী গীতা সংঘের প্রার্থনা হলে দশভুজা দেবী দুর্গার ষষ্ঠীবিহিত পূজা, কল্পারম্ভ, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠীপূজা সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য, শ্রী শ্রী গীতা সংঘের দুর্গোৎসবে তিথিমতে পূজার যাবতীয় শাস্ত্রীয় কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করা হয়।
দুর্গতিনাশিনী দুর্গা এসেছেন বিশ্ব শান্তির জন্য তথা সবার মঙ্গলের তরে। কিন্তু অসুরবিনাশিনী জগজ্জননী দেবী দুর্গা বাঙালী গৃহে আসেন অন্যভাবে। কৈলাশ ছেড়ে প্রতিবছর তিনি কন্যারূপে আসেন বাবার বাড়িতে। দেবী দুর্গার সঙ্গে প্রতি শরতে মর্ত্যে আসেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ। এই চালচিত্রে দেবাদিদেব মহাদেবও (শিব) বাদ যান না। লক্ষ্মী সমৃদ্ধি ও সরস্বতী জ্ঞানের প্রতীক। কার্তিক দেব সেনাপতি, শত্রু বিনাশকারী। আর গণেশ হচ্ছেন সর্বসিদ্ধিদাতা অর্থাৎ মানুষের কামনা পূরণকারী। বাঙালী হিন্দুরা যে কোন শুভ কাজে ইষ্টনাম হিসেবে দেবী দুর্গাকে স্মরণ করে থাকেন।
হিন্দুশাস্ত্রীয় প-িত এবং সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যলোকে এসেছেন ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে। অর্থাৎ ফসল ও শস্যহানি। দেবী স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন দোলায় (পালকি) চড়ে। যার ফল মড়ক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ, মহামারীর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে। দুর্গোৎসব এর প্রথম দিন থেকেই গীতা সংঘের প্রার্থনা হলে প্রবাসী হিন্দুদের বেশ সরব উপস্থিতি ছিল। দুর্গোৎসব এর আগামী তিন দিনের ব্যাপক আয়োজনে প্রবাসী সনাতনী হিন্দুদের অংশগ্রহন যে আরো বাড়বে তা বলাইবাহুল্য। আনন্দলোকের মঙ্গলালোকে অন্যরকম অনুভূতি আর ভিন্নতর ভালোবাসায় উদ্বেলিত হোক সকল প্রবাসী হিন্দুর মনপ্রাণ – এই ছিল শারদোৎসবে অংশগ্রহনকারী সবার অন্তরের কামনা। ম-পে পুণ্যার্থীদের ভীড়ও বেড়ে চলেছে।