প্রাণের উচ্ছ্বাসে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাইর বর্ষবরণ

ঠিকানা রিপোর্ট : নব রূপ, আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে এবং বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন আয়োজিত বাংলা বর্ষবরণ (১৪২৫) ও ফ্যামিলি রি-ইউনিয়ন গত ২১ এপ্রিল জ্যাকসন হাইটসের বেলামিনো পার্টি হলে অনুষ্ঠিত হয়। মহিলাদের নতুন সাজ, শিশু-কিশোরদের হাসির জোয়ার এবং বৈদ্যুতিক আলোর ঊর্মিমালায় সৃষ্টি হয় অভাবনীয় পরিবেশ । প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও ফ্যামিলিদের পুনর্মিলন ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠেছিল অন্যরকম ব্যতিক্রমী । অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতিরোমন্থন ও পারস্পরিক মত বিনিময়ে মেতে উঠেন অনেকে। সেই সাথে অনেক দিন পর সাক্ষাতের স্মৃতিকে চিরঞ্জীব করে রাখার জন্য ক্যামেরাবন্দি, সেলফি। বর্ষবরণ ও ফ্যামিলি রি-ইউনিয়ন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ শওকত আনওয়ার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কৃষিবিদ সুভাষ চন্দ্র ম-ল। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিবিদ ড. ফেরদৌস আলী, বিশেষ অতিথি কৃষিবিদ মুজাহিদুর রহমান, আব্দুল কাদের মিয়া, ডাচ-বাংলা ব্যাংকেরা এমডি আবুল কাশেম শীরিন, অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক কৃষিবিদ ড. এম এ বারী, অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক কৃষিবিদ এ এস এম ইমদাদুল ইমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ সুলতান মাহমুদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক কৃষিবিদ গণেশ বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কৃষিবিদ ড. ফেরদৌস আলী বলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ২০১২ সালে শত বছর পূর্ণ করে। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিবিদ বিজ্ঞানী বের হয়ে দেশে-প্রবাসে অবস্থান করছেন এবং দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একসময় খাদ্য ঘাটতি ছিল। বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হতো। এখন বাংলাদেশ খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে খাদ্য রফতানি করছে। এটি সম্ভব হয়েছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিদ ও বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে। তিনি বলেন, আমি ঐতিহ্যবাহী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে নিজকে গর্বিত মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, পূর্বে যেখানে একরে ১০ মণ ধান উৎপাদিত হতো সেখানে বর্র্তমানে ১০০ মণ ধান উৎপাদিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিদগণই উৎপাদনের জগতে এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়ন করেছে । তিনি বলেন, বিশ্বমানের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞানী তৈরি করছে। ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন বিশ্ববিদ্যালয়য়ে পড়াশুনা করে সারা বিশ্বে বিজ্ঞানী হিসেবে ঠাঁই করে নিতে পারে সে ব্যাপারে তিনি অভিভাবকদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ। তিনি অতীতে যারা প্রয়াণ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
সভার প্রারম্ভে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক এম এ বারী। গীতাপাঠ করে ছোট্ট কিশোর সুপর্ণ কুন্ড। পরে বাংলাদেশের ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রয়াত ছাত্রদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রধান অতিথি কৃষিবিদ ড. ফেরদৌস আলীকে মনিহা, বিশেষ অতিথি কৃষিবিদ মুজাহিদুর রহমানকে মাহিপা, বিশেষ অতিথি আব্দুল কাদের মিয়াকে মুহা কিশোরী পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। অন্যদের মধ্যে কৃষিবিদ মোজাহিদুর রহমান, আব্দুল কাদের মিয়া, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম শিরীন, প্রধান সমন্বয়ক কৃষিবিদ ড. এম এ বারী, আহ্বায়ক কৃষিবিদ এ এস এম ইমদাদুল ইমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ সুলতান মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক কৃষিবিদ সুলতান মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক কৃষিবিদ গণেশ বিশ্বাস বক্তব্য রাখেন।
সভা শেষে সভাপতি কৃষিবিদ শওকত আনওয়ার সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ২০১২ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষে পদার্পণ থেকে এ সংগঠনের যাত্রা। প্রবাসের এ সংগঠনকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করতে সকলের ঐক্য ও সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি। আগামী ২৯ জুলাই সানকীন মেডো পার্কে সংগঠনের বার্ষিক বনভোজনের দাওয়াত প্রদান করেন। উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার কাজ সমাপ্ত করা হয়। পরে সাংস্কৃতিক সম্পাদক বাবুল সরকার ও সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক কৃষিবিদ দিলারা আফরোজ লিপির পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আগত কৃষ্ণা তিথি সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে রাতের ডিনারের ব্যবস্থা ছিল।