ঠিকানা অনলাইন : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেছে ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আঘাতজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। মাথায় ও বুকের পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মূলত মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলেই তার মৃত্যু হয়।
১৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও শেখ ফরহাদ এই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জেলা সিভিল সার্জনের কাছে জমা দেন।
সিভিল সার্জন এএফএম মশিউর রহমান বলেন, ‘ফারদিনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তার বুকের দুই পাশে দু-তিনটি ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আমরা পেয়েছি। পাশাপাশি তার মাথায় চার-পাঁচটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
এর আগে গত ৮ নভেম্বর দুপুরে ফারদিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল।
প্রসঙ্গত, গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হন ফারদিন। ৫ নভেম্বর এ ঘটনায় তার বাবা নুর উদ্দিন রানা রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ৯ নভেম্বর তার বাবা রামপুরা থানায় বান্ধবী বুশরাকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি ডিবি তদন্ত করছে।
ফারদিন হত্যা নিয়ে সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার ডিবি জানায়, ফারদিন হত্যাকাণ্ডে এক লেগুনার চালক ও সহকারীকে তারা খুঁজছেন। ঘটনার দিন লেগুনাতে তোলা হয়েছিল ফারদিনকে। পরে লেগুনাটি যাত্রাবাড়ী থেকে নারায়ণগঞ্জের তারাবোর দিকে চলে যায়।
নতুন পাওয়া এক সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ডিবি জানায়, ফারদিন ঘটনার দিন রাত সোয়া দুইটায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর লেগুনা স্ট্যান্ডে ছিলেন। তাকে সাদা গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তি ডেকে লেগুনায় তোলেন, লেগুনায় আরও চারজন ছিলেন। পরে লেগুনাটি নারায়ণগঞ্জের তারাবোর দিকে চলে যায়।
ডিবির প্রশ্ন, যে ব্যক্তি রাত সোয়া দুইটার সময় যাত্রাবাড়ী লেগুনা স্ট্যান্ডে ছিলেন, তিনি কী করে রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তিতে যান? এর আগে র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, ফারদিনকে চনপাড়া বস্তিতে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে রায়হান নামের একজন মাদক ব্যবসায়ী জড়িত।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘সাদা গেঞ্জি পরা এক লোক ফারদিনের সঙ্গে যাত্রাবাড়ী লেগুনা স্ট্যান্ডে কথা বলেন। এরপর তিনি লেগুনায় উঠে বসেন। লেগুনায় আরও তিন-চারজন ছিল।
ফারদিনকে লেগুনায় উঠিয়ে বিশ্বরোডের দিকে যাওয়া হয়, এরপর সেটি সুলতানা কামাল সেতু পার হয়ে নারায়ণগঞ্জের তারাবোর দিকে চলে যায়। যারা ধরে নিয়ে গেছে, তারা আমাদের নজরদারিতে আছে। লেগুনার চালক ও সহকারীকে খোঁজা হচ্ছে।’
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তারাবো থেকে চনপাড়া যেতেই ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগার কথা। লেগুনার চালক নজরদারিতে। তবে আমরা এখনই কংক্রিট তথ্যে আসছি না। তারাবোর ঘটনা কি না, হত্যা কি না, সবকিছু তদন্ত করছি।’ ফারদিনের যাতায়াতের সব তথ্য নজরে এসেছে। তদন্ত শেষ না হলে বলা যাবে না বলেও জানান তিনি।
ঠিকানা/এনআই