ফারদিন হত্যা মামলা : ৩ কারণে আসামি বান্ধবী বুশরা

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ (২৪) খুনের ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছে তার পরিবার। বান্ধবী বুশরাকে আসামি করার পেছনে তিনটি উল্লেখযোগ্য কারণের কথা বলেছেন ফারদিনের বাবা। তাই এজাহারে বুশরার নাম উল্লেখ করে আসামি করেছেন।

বুশরাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে বুশরার পরিবার জানিয়েছে, তিনি কোনোভাবেই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন।

৯ নভেম্বর বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে রামপুরা থানায় হত্যা মামলা করেন ফারদিনের বাবা নূর উদ্দীন রানা। মামলায় একমাত্র নামীয় আসামি ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরা (২২)। বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী বুশরা একজন বিতার্কিক। চার বছর আগে ফেসবুকে ফারদিনের সঙ্গে বুশরার পরিচয় এবং বন্ধুত্ব। একসঙ্গে বিতর্ক ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে যাতায়াত ছিল তাদের।

গত শুক্রবার ফারদিন বাসা থেকে বের হয়ে বুশরার সঙ্গে রাত পর্যন্ত রাজধানীর ধানমন্ডি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, রামপুরায় ঘুরেছেন। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ। সোমবার (৭ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বুশরাকে আসামি করার প্রথম কারণ সম্পর্কে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দীন রানা বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আমার ছেলে বুশরার সঙ্গে ছিল। বুশরাকে সে তার মেসে পৌঁছে দিয়েছে। এর এক ঘণ্টা পর আমার ছেলে নিখোঁজ, তারপর লাশ হলো। তার মানিব্যাগ, হাতঘড়ি, মোবাইল সব আছে, তার মানে এটা ছিনতাইকারীর কোনো ঘটনা নয়। প্রথমত সে জন্য আমি বুশরাকে সন্দেহ করেছি। তাদের বন্ধুত্ব বা প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে কোনো ঝামেলা চলছিল। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে বুশরা কাউকে দিয়ে খুন করিয়েছে।’

দ্বিতীয় কারণ সম্পর্কে ফারদিনের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে বুশরার সঙ্গে প্রায়ই হয়তো রামপুরা যেত। স্থানীয় বখাটে কেউ হয়তো বুশরাকে পছন্দ করত বা বুশরার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। তারাও এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে পারে।’

বুশরাকে আসামি করার তৃতীয় যে কারণটি ফারদিনের বাবা বলেন সেটি হলো, ‘ফারদিন নিখোঁজের পর আমরা বাসায় থাকায় তার ল্যাপটপ ওপেন করে ফেসবুক আইডি ওপেন পাই। সেখান থেকে আমার ছোট ছেলে বুশরাকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে নক দেয়। নিখোঁজের কথাটি জানাই। কিন্তু বুশরা কোনো উত্তর দেয়নি। এরপর তার নম্বর সংগ্রহ করে অন্যভাবে ফোন করে তাকে জানানো হয়। কিন্তু সে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তাদের চার বছরের বন্ধুত্ব ঘনিষ্ঠতা, অথচ বন্ধুকে হারিয়ে তার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।’

নূর উদ্দীন আরও বলেন, ‘তাকে (বুশরা) রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করল, তখনো সে স্বাভাবিক। বন্ধুকে হারানোর কোনো অভিব্যক্তি তার মুখে ছিল না। ৭ নভেম্বর তার লাশ উদ্ধার হলো, তার পরও তার মধ্যে কোনো দুঃখবোধ দেখিনি। সে ডিবি হেফাজতে বসে বই পড়েছে, পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে। এত কাছের বন্ধু, তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে বুশরা ছিল স্বাভাবিক। তার আচার-আচরণ সন্দেহজনক। তাই তাকে আসামি করেছি।’

ঠিকানা/এনআই