বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য মহসিন চলে গেলেন

স্পোর্টস রিপোর্ট : হকিতে আব্দুস সাদেক, মোহাম্মদ মহসিন আর ইব্রাহিম সাবেরের পরিচিতি ছিল ত্রিরতœ হিসেবে। সাদেক সেন্টার হাফ, মহসিন রাইট হাফ আর সাবের ছিলেন লেফট হাফে। এই ত্রয়ী নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করে নাস্তানাবুদ করে ছাড়তেন বিপক্ষকে। ঢাকা আবাহনীতে ক্যারিয়ারের বড় অংশ কাটানো মোহাম্মদ মহসিন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভীষণ প্রিয়। মহসিন নিজের পরিচয় দিতে ভালোবাসতেন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গাড়িচালক’ হিসেবে। যদিও তার চাকরিটা ছিল বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তারক্ষীর। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন তার গাড়িটা চালাতে।

জাতির জনকের এই বিশ্বাস আর আস্থাই জীবনের সেরা পাওয়া বলে মনে করতেন মহসিন। বাংলাদেশ হকির সোনালি প্রজন্মের সেই মহসিন না ফেরার দেশে চলে গেছেন গত ২ মার্চ। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্তেকাল করেন ৭১ বছর বয়সী জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়া এই ক্রীড়াবিদ। নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। একটি কিডনি বাদ দিতে হয়েছে ১৯৮৬ সালে। ওপেন হার্ট সার্জারি করাতে হয়েছে ২০০২ সালে। ২০১২ সালে হয়েছিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ। তখন থেকেই ছিলেন একপ্রকার শয্যাশায়ী। ছোট ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন আরো।

১৯৪৮ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি ঢাকার মাহুতটুলীতে জন্মগ্রহণ করেন মহসিন। ১৯৬৭ ও ’৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান হকি একাদশের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বøু প্রাপ্ত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর রাতে মহসিনের ডিউটি ছিল না। ঘটনা শোনার পর প্রচÐ মানসিক আঘাত পেয়ে নির্বাক হয়ে যান তিনি। কথা বন্ধ ছিল কয়েক মাস। বের হতেন না বাড়ি থেকেও। বঙ্গবন্ধুর সব খবর জানতেন বলে তাকে হত্যার জন্যও খোঁজা হচ্ছিল তখন। জীবন বাঁচাতে মহসিন চলে যান বিদেশে। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ সময় কাটিয়েছেন মহসিন।