বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করছেন শেখ হাসিনা

প্রবাসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন

ওয়াশিংটন ডিসি : বাংলাদেশ দূতাবাসে ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ। বি-ঠিকানা।

ঠিকানা রিপোর্ট : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই ধারা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

নিউইয়র্ক : কন্স্যুলেটে ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সাদিয়া ফয়েজুন্নেসা। ছবি-ঠিকানা।

(শেষের পাতার পর) যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন, ওয়াশিংটন বংলাদেশ দূতাবাস, জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটে এবং আমেরিকার বিভিন্ন স্টেট আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ওয়াশিংটন ডিসি : বাংলাদেশ দূতাবাসে ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে বঙ্গন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান এম্বেসডর জিয়া উদ্দিন ও আইডব্লিউওসি পদক অর্জনকারী রাজিয়া সুলতানা। ছবি-ঠিকানা।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন গত ৭ মার্চ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ইউনেস্কো’র ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের উপর একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

লসএঞ্জেলেস : বক্তব রাখছেন ডা. রবি আলম। বি-ঠিকানা।

এ আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন স্থায়ী মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও উপস্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো: আরিফুল ইসলাম। অতঃপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভিডিওটি প্রদর্শন করা হয়। এরপর শুরু হয় আলোচনা পর্ব। জাতির পিতার ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ একটি জাতিকে কীভাবে বজ্রকঠিন ঐক্যের পতাকাতলে সমবেত করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণে উজ্জ্বীবিত করেছিল তা উঠে আসে আলোচকগণের বক্তব্যে। আলোচকগণ এই ভাষণের প্রেক্ষাপট, বিষয়বস্তু, সুদূর প্রসারী প্রভাবের উপরও আলোকপাত করেন।

নিউইয়র্ক : কন্স্যুলেটে ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির একাংশ। ছবি-ঠিকানা।

জাতির পিতার এই ভাষণে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একজন সুযোগ্য রাষ্ট্রনায়কের সুচিন্তিত কৌশলের সবটুকুই প্রতিভাত হয়েছে মর্মে মন্তব্য করেন বক্তাগণ। ৭ মার্চের ভাষণ যাতে সর্বদা দীপ্যমান থাকে এবং জাতির পিতার সম্মোহনী দরাজ কন্ঠ যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অনুরণিত হয় সেজন্য নতুন প্রজন্মকে ভাষণটি বার বার শোনানোর আহ্বান জানান আলোচকগণ।

নিউইয়র্ক : স্থায়ী মিশনে ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে দোয়া। ছবি-ঠিকানা।

বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে লেখক ও ইতিহাসবিদ জ্যাকব এফ ফিল্ড রচিত ‘উই স্যাল ফাইট অন দ্যা বিচেজ: দ্যা স্পীসেস দ্যাট ইন্স্পায়ার্ড হিস্ট্রি’ গ্রন্থে স্থান পাওয়া জাতির পিতার এই ভাষণ সারাবিশ্বের মুক্তিকামী মানুষকে স্বাধীনতার পথে কীভাবে প্রভাবিত করে যাচ্ছে তাও উঠে আসে আলোচনায়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রমনার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতার দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করে।

আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রগতি এবং জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা, দু’লাখ নির্যাতিত মা-বোন ও ভাষা শহীদসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে দোয়া করা হয়।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মিশনের কাউন্সিলর মো: তৌফিকুর রহমান।

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করে। অনুষ্ঠানে কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা, ঢাকা হতে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ এর ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি শব্দ গুরুত্বপূর্ণ এবং এর আবেদন কালোত্তীর্ণ। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সর্বকালের জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে ৭ মার্চের ভাষণটি প্রদর্শন করা হয় যা অনুষ্ঠানের পরও প্রচারিত হয়েছে এবং কনস্যুলার সেবা গ্রহণের জন্য আগত বাংলাদেশী-আমেরিকান ও আমেরিকানগণ গভীর আগ্রহের সাথে তা অবলোকন করেন। বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। অনুষ্ঠানে কনস্যুলেটের কর্মকর্তা ও কর্মচারি ছাড়াও কনস্যুলার সেবাগ্রহণকারী অনেক বাংলাদেশী এবং আমেরিকান নাগরিক উপস্থিত ছিলেন।

ওয়াশিংটন ডিসি : বাংলাদেশ দূতাবাসে ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ। ছবি-ঠিকানা।

ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস
ওয়াশিংটন ডি.সি: ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর যুগান্তকারি ভাষণ বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করে। রেসকোর্স ময়দানে এই ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

এই ঐতিহাসিক দিনটি উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ৭ই মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ৭ই মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ইতিহাসের একমাত্র ভাষণ যার মাধ্যমে একটা জাতি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের অমূল্য প্রামাণ্য দলিল হিসেবে তাদের ওয়ার্ল্ড মেমোরি রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভূক্ত করে স্বীকিৃতি দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে
International Women of Courage পুরস্কারপ্রাপ্ত মিয়ানমারে জন্মগ্রহণ করা বাংলাদেশী নাগরিক রাজিয়া সুলতানা। সুলতানা তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তাঁর নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আজ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পেয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মত একজন নেতা পেলে রোহিঙ্গাদের জন্মভূমি থেকে কেউ বিতাড়িত করতে পারতো না। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে চায়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষনটি প্রদর্শিত হয় এবং রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

কানাডা : কানাডা দূতাবাসে ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ। ছবি-ঠিকানা।

কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন
কানাডা : কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন হাইকমিশনের মিলনায়তায়নে গত ৭ মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ পালন করে। এ উপলক্ষে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে কানাডায় নিযুক্ত হাই কমিশনার জনাব মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ”বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ” প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্যের উপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মিয়া মোঃ মাইনুল কবির, কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) জনাব মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন ্ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে যথাক্রমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। পরবর্তিতে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ প্রদর্শন করা হয়। এর পরে ছিলো উন্মুক্ত আলোচনা। হাইকমিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনে এ অনুষ্ঠানে হাইকমিশনের কাউন্সেলর (বাণিজ্যিক) জনাব মোঃ শাকিল মাহমুদ, প্রথম সচিব অপর্ণা রাণী পাল সহ হাইকমিশনের কর্মচারীগণ এবং কানাডা নিবাসী বাংলাদেশীগণ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা পর্বে সময় টিভির সাংবাদিক জনাব শরীফ ইকবাল, আশ্রম পত্রিকার সম্পাদক জনাব কবির চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব রাশেদা নেওয়াজ, বাকাওব এর সভাপতি জনাব শাহ বাহাউদ্দিন শিশির, অধ্যাপক ওমর সেলিম শের এবং মুক্তিযোদ্ধা জনাব শিকদার মতিয়ার রহমান বক্তব্য রাখেন। তারা জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে এর ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এই ভাষণের তাৎপর্য উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বক্তাগন ভবিষ্যত প্রজন্মের নিকট এই ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরা এবং প্রবাসে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে হাইকমিশনার ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন এবং এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ভাষণকেই বাঙ্গালির মুক্তির ডাক হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ৭ই মার্চের ভাষণের দিক নির্দেশনার পথ ধরেই ৯ মাসের রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধে লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক জাতির পিতার ৭ ই মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতির মাধ্যমে এই অসামান্য ভাষণকে বিশ্বের শোষিত, বঞ্চিত ও মুক্তিকামী মানুয়ের অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে স্বীকৃতি দানের কথা বলেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জিত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কথা বর্ণনা করে বাংলাদেশকে বিশ্বের দররারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে উল্লেখ করেন। মান্যবর হাইকমিশনার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতিৃত্বে বাংলাদেশকে ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ১৯৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে পরিণত করার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি এবং প্রবাসে বাংলাদেশের শুভেচ্ছা দূত হিসাবে বর্ণনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ’রূপকল্প ২০২১’ এবং ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন, ফারহানা আহমেদ চৌধুরী এবং রাশেদা নেওয়াজ সমবেত কন্ঠে একটি দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। পরিশেষে উপন্থিত সকলের জন্য আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ
ঠিকানা রিপোর্ট : ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকার রেসকোর্স মাঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। যে ভাষণে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণাসহ সব নির্দেশনা দিয়ে বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য ‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলার’ আহ্বান জানিয়ে বলেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এবং বাঙালিরা পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে। এবং তারপর থেকে প্রতিবছর ৭ মার্চ বাঙালিরা যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করে থাকে। এবারো তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউ ইয়র্ক স্টেট ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল-সংগঠন ৭ মার্চ বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে উদযাপন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ : যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ৭ মার্চ ঠিক ঐদিনই উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে বিশেষ দোয়া, মোনাজাত ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কৃষক লীগ নেতা মাওলানা সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যবৃন্দ ও অন্যান্য শহীদদের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন।

এরপর এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ৭ মার্চের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা। আলোচনা সভায় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আকতার হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। মঞ্চে উপবিষ্ট ও অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তৃতা করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ বশরাত আলী, শামসুদ্দিন আজাদ ও লুৎফুল করিম, উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, কোষাধ্যক্ষ মনসুর খান, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রবাসীকল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলী, উপ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেক, কার্যকরী সদস্যদের মধ্যে সামছুল আবদীন, আলী হোসেন গজনবী, আবদুল হামিদ, মুক্তিযোদ্ধা শরাফ সরকার, নিউ ইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আতিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোশের্দা জামাল, সাইফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা কফিল চৌধুরী, যুবলীগের সভাপতি তারিকুল আলম প্রমুখ এবং আমন্ত্রিত বক্তা অধ্যাপক হুসনে আরা।

বক্তারা সবাই ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের পর আর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রয়োজন পড়ে না। ৭ মার্চের ভাষণের সুগভীর তাৎপর্যের কারণেই ইউনেস্কো এই ভাষণটিকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের’ স্বীকৃতি দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
বক্তারা বলেন, এই ভাষণের পর অন্য কারো স্বাধীনতার ঘোষণার দাবি নেহায়েতই হাস্যকর।

নিউ ইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ
গত ৮ মার্চ, শুক্রবার, নিউ ইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ ৭ মার্চ উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। তার আগে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ইমাম কাজী কাইয়্যুম।
পরে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান মিয়া। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল। প্রধান বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ আজাদ। আরো বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মুনির হোসেন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়–য়া ও অন্যান্যরা।

লসএঞ্জেলেস : অনুষ্ঠানে সুধীর একাংশ। ছবি-ঠিকানা।

লস এঞ্জেলেসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত
লস এঞ্জেলেস থেকে তপন দেবনাথ : যথাযথ মর্যাদা এবং গুরুত্বের সাথে লস এঞ্জেলেসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামী লীগ গত ৭ মার্চ সন্ধ্যায় লস এঞ্জেলেসের বাংলাদেশি অধ্যুষিত অনুপনা রিয়া অডিটরিয়ামে দিবসটি পালন করে। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপত্বিতে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও পবিত্র গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠের সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি বড় পর্দায় দেখানো হয়। সিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহতাব উদ্দিন টিপুর তত্ত্বাবধানে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’ চলচ্চিত্রটি দেখানো হয়। বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন চৌধুরী- যিনি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের সময় তাঁর পিছনে দাঁড়ানো ছিলেন ঢাকা থেকে টেলিফোনে অনুষ্ঠানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।
৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব, কীভাবে একটি ভাষণ একটি মহাকাব্যে পরিনত হল এবং সেই ভাষণটিই কীভাবে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র হয়ে দেখা দিল সে বিষয়ে সারগর্ব বক্তব্য রাখেন ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার রবি আলম, মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান পটল, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোস্তাইন দারা বিল্লাহ, দিরার আহমেদ, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ফিরোজ আলম, সহসভাপতি নাজমুল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি সোহেল রহমান বাদল, সৈয়দ একরামূল হক বাবু, শেখ পলাশ, আজিজ মোহাম্মদ হাই, আশিষ কুমার ঘোষ প্রমুখ।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক টি জাহান কাজল। তাকে সহযোগিতা করেন আলী আহমেদ পারিস। অনুষ্ঠানে প্রচুর লোক সমাগম হয়।