বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে কমিশন ডিসেম্বরে : আইনমন্ত্রী

ঠিকানা অনলাইন : বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য ষড়যন্ত্রকারী কারা ছিল, তা উদ্ঘাটনে এ বছরের ডিসেম্বরেই কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

৩১ আগস্ট বুধবার জাতীয় সংসদে মন্ত্রী বলেন, ‘একটা দায়বদ্ধতা থেকে এই মহান সংসদে ঘোষণা দিতে চাচ্ছি, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের পরে এই বছর (২০২২ সাল) শেষ হওয়ার আগে আমরা কমিশন অব ডকুমেন্টস অ্যাক্টের আন্ডারে একটি কমিশন গঠন করব। সেই কমিশন এই কাজটি করে রিপোর্ট দেবে। হত্যার নেপথ্যে যারা ছিল, তাদের পরিচয় উদঘাটন করে দেবে।’

স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র থাকার কথা বরাবরই বলা হচ্ছে। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বিচারে সরাসরি খুনিদের সাজার রায় এলেও নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীরা বাইরেই থেকে গেছে। আবার খুনিদের কয়েকজন বিদেশে পালিয়ে আছেন।

এই অবস্থায় সংসদের ভেতরে ও বাইরে দাবি ওঠার পর একটি কমিশন গঠনের কথা আইনমন্ত্রী আগেও বলেছিলেন।

আগে মন্ত্রী বলেছিলেন, মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে কমিশন গঠন করা হবে, যাতে ‘ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে’ তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করা যায়।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ১৯৮১ সালে যুক্তরাজ্যে একটি অনুসন্ধান কমিশন গঠন করা হয়েছিল। তবে সে কমিশনের সদস্যদের বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হয়নি। তখন বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি ছিলেন জিয়াউর রহমান, যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন। পরে ১৯৮২ সালের ২০ মার্চ যুক্তরাজ্যের এই কমিশন তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে আইনি ও বিচার-প্রক্রিয়াকে তার নিজস্ব পথে এগোতে দেওয়া হয়নি। আর এ জন্য তখনকার সরকারই দায়ী।

নতুন করে কমিশন গঠনের পেছনে ১৫ আগস্টের ঘটনায় জিয়াকে জড়ানোর উদ্দেশ্য রয়েছে বলে বিএনপির নেতারা অভিযোগ করে আসছেন।

এ ব্যাপারে সংসদে আনিসুল হক বলেন, ‘কোনো প্রতিহিংসামূলক বা প্রতিশোধের জন্য নয়, এই কমিশনের দায়িত্ব হবে নতুন প্রজন্মকে বেইমানদের চিহ্নিত করে যাওয়া। নতুন প্রজন্ম, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা দায়বদ্ধ থাকব, আমরা যদি এই সব বেইমান, যারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, তাদেরকে নতুন প্রজন্মের কাছে চিহ্নিত করে না দিয়ে যেতে পারি।’

খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বিএনপির দাবির প্রসঙ্গ তুলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি চোখ বন্ধ করে রাজনীতি করে নাকি, চোখ খুলে দেখে না। এটা বুঝতে পারি না।’

শর্ত সাপেক্ষে কারামুক্ত খালেদার চলাফেরায় সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দু-তিন দিন আগে উনি (খালেদা জিয়া) কারও পারমিশন না নিয়েই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আজকে সন্ধ্যাবেলা কারও পারমিশন না নিয়েই আবার বাসায় ফিরে এসেছেন।’

ঠিকানা/এনআই