বদলে যাওয়া সালমাদের নিয়ে বড় পরিকল্পনা

স্পোর্টস রিপোর্ট : করেই বদলে গেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। মাত্র এক মাসেই অসাধ্যকে সাধন করেছে। বিশেষ করে টি-২০ ক্রিকেটে এশিয়ার মুকুট ভারতের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনাই প্রমাণ করে কতটা বদলে গেছে তারা। এরপর আয়ারল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জয় ও নেদারল্যান্ডে টি-২০ বিশ্বকাপের বাছাইয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সবই নারী দলের নতুন ইতিহাস। এবার সামনে টি-২০ বিশ্বকাপ।
মাত্র তিন মাস পরেই নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সালমাদের আরো একটি মিশন। আর আসর সামনে রেখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নারী বিভাগ থেকে নেয়া হয়েছে বড় পরিকল্পনা। আগস্টের শুরুতে লম্বা সময়ের জন্য ক্যাম্পে যাচ্ছেন সালমারা। এরপর তার অংশ হিসেবে অক্টোবরেই আয়োজনের চেষ্টা চলছে দ্বিপক্ষীয় সিরিজের। এরপর বিশ্বকাপের অন্তত ১০ দিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে প্রস্তুতি নেয়ার পরিকল্পনা তো আছেই। বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন বর্তমান নারী বিভাগে দায়িত্ব প্রাপ্ত বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্টের সাবেক ম্যানেজার নাজমুল আবেদিন ফাহিম। তিনি একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, ‘প্রাপ্তিগুলো সব সময় সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। এখন আমাদের সামনে বিশ্বকাপ। হাতে ৩ মাস সময় আছে। তবে আমরা বসে থাকছি না। আগস্টের শুরুতেই লম্বা সময়ের জন্য ক্যাম্প শুরু করব। এরপর একটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা চলছে। বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ ছাড়াও আমাদের শতভাগ চেষ্টা থাকবে যেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে অন্তত ১০ দিন আগে যেতে পারি। সেখানেও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দল। মূল উদ্দেশ্য কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেয়া।’
নাজমুল আবেদিন ফাহিম নারী ক্রিকেটের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বদলে যেতে শুরু করে দলের চেহারা। বিশেষ করে সালমা, রুমানা আহমেদরা ব্যাটিং ও ফিল্ডিংয়ে দারুণ করতে শুরু করে। এরই মধ্যে এশিয়া কাপের ঠিক এক দিন আগে দলের সঙ্গে যোগ দেন ভারত থেকে আসা কোচ অঞ্জু জৈন। তবে রাতারতি কোচের কল্যাণে এমন পরিবর্তন হয়নি তা একেবারেই স্পষ্ট। কিভাবে সালমাদের এমন পরিবর্তন নাজমুল আবেদিন ফাহিম মূলত দেশের সেরা একজন কোচও। তার কাছেই দীক্ষা নেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীমরা। বিপদে পড়লেই তার শরণাপন্ন হন। তাহলে কি রুমানাদের ব্যাটিং নিয়ে তিনিও কাজ করেছেন? কিভাবে এ পরিবর্তন তা নিয়ে নাজমুল আবেদিন বলেন, ‘আসলে আমি যখন দায়িত্ব নিলাম তখন দুটি দুর্বলতা আমার চোখে পড়ে। একটি হলো ফিল্ডিংয়ে অন্যটি ব্যাটিং। কিন্তু এ দলটিই কিন্তু এখন সেখানে উন্নতি করেছে, তার মনে সমস্যা ছিল আরেকটি সেটি হলো মানসিকতায়। ওরা নিজেদের একটি ছোট দল বা খর্ব শক্তির দল মনে করত। ওরা যে চাইলে পারে সেই আত্মবিশ্বাসটিই ছিল না। ওদেরও যে ছয় মারার ক্ষমতা আছে সেটিও ওরা জানত না। চিন্তা করতো ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে ১০০ বেশি করতে পারব না। আমরা এখানে পরিবর্তন আনি প্রথম। ওদেরকে বিশ্বাস করতে শিখায় যে তোমরা পারো। যেমন ওদের যখন ছয় মারতে দিলাম তখন ওরা কিন্তু নিজেরাই চেষ্টা করে দেখেছে যে পারে। এরপর ব্যাটিং অর্ডারটাও পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল। সেটাও করা হয়েছে। এ ছাড়াও ওদের সাহসটা বেড়েছে ছেলেদের সঙ্গে খেলে। আমরা ছেলেদের সঙ্গে খেলে হার জিতের দিকে তাকিয়ে থাকিনি চেয়েছি সাহস বাড়াতে। ওরা দারুণ করেছে। সিলেটে তো পেসের বিপক্ষে অনেক ভালো করেছে।’
শুধু তাই নয়, সালমাদের এ পরিবর্তনের পেছনে আরো একটি কারণ জানান নাজমুল আবেদিন। তিনি বলেন, ‘দেখেন দলটির সবার মাঝে চেষ্টা দারুণ। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো একজন মন্দ করলে কেউ তাকে ছোট করে দেখে না। বরং পরস্পরকে সাহায্য করে দারুণভাবে। আশা করি বিশ্বকাপে ওদের উন্নতির ছাপ সবার দেখা মিলবে।’ এ ছাড়াও নয়া কোচকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের যে টিম ম্যানেজম্যান্ট কোচসহ সবাই দারুণ কাজ করছে। সবার সমস্যা নিয়ে আলাদা কাজ করা এটি দারুণ বিষয়।’