ঢাকা : বন্দুকযুদ্ধের নামে মিথ্যা কথা বলে সরকার ‘বিচারবহির্ভূত’ হত্যা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গত ২৮ মে বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েক দিন ধরে মাদক সেবনকারী বা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সরকার মূলত কাদের হত্যা করছে আমরা তা জানি। বিনাবিচারে বন্দুকযুদ্ধের নামে মিথ্যা কথা বলে তাদের হত্যা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা সবাই মাদকের বিরুদ্ধে। আমরা চাই যে, দেশ পুরোপুরিভাবে মাদকমুক্ত হোক। একই সাথে আমরা দেশে ন্যায়বিচার, ন্যায়ের শাসন দেখতে চাই, আমরা ইনসাফ দেখতে চাই।
বর্তমান গণমাধ্যমের অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, যে হারে আজকে গণমাধ্যমের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, যে হারে আজকে সেন্সরশিপ আরোপ করছে, যে হারে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, তাতে সত্য বেরিয়ে আসতে পারছে না। যারা সত্যকথা বলছেন, তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে, তাদের বিভিন্নভাবে বিপদগ্রস্ত করা হচ্ছে। আমরা শুনেছি কয়েক দিন আগে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যারা সত্যকথা বলেছিলেন, নিউজ করতে গিয়েছিলেন তাদের অনেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
খালেদা জিয়াকে সরকার ‘বিভিন্ন কৌশলে’ কারাগারে আটকিয়ে রেখেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার এ জন্য এটা করছে যে তারা রাজনৈতিক দিক থেকে একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেছে। জনগণের কাছে যেতে ভয় পায়, জনগণের সামনে আসতে ভয় পায়। যে কারণে আজকে তারা (সরকার) বিরোধীদলীয় নেত্রীকে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম করে, খুন করে আজকে দেশে একটা এমন একটা ত্রাসের অবস্থা সৃষ্টি করেছে, যাকে ফ্যাসিবাদ ছাড়া অন্য কিছু বলার উপায় নেই।
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই একটা নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে, নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। আসুন আজকে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার মধ্য দিয়ে সমাজের সব পেশা ও শ্রেণির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা সবাই একযোগে আন্দোলন করি এটাই হোক আমাদের প্রত্যাশা।
বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। ইফতারে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, বরকতউল্লাহ বুলু, জয়নাল আবেদিন, শওকত মাহমুদ, উপদেষ্টা মো: শাহজাদা মিয়া, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরোয়ার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মো. তসলিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়াসহ ২০ দলীয় জোটের নেতারা।
২০ দলীয় জোটের নেতা, পেশাজীবী নেতাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা ইফতারে শরিক হন।