ঠিকানা অনলাইন : অনেক নাটকীয়তার পর বাংলাদেশকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানীয় সময় ৩০ জানুয়ারি (সোমবার) রাতে আইএমএফ এর নির্বাহী বোর্ডের সভা বসে। সেখানেই বাংলাদেশের ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদন পেয়েছে।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ তার ঢাকা সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেদিন তাদের মধ্যে ঋণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে গত নভেম্বরে ঢাকায় কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠকে প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছায় আইএমএফ। সেই ঋণচুক্তির শর্তসহ খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার মধ্যেই বাংলাদেশ সফর করেন আইএমএফ এর উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
ঋণসহায়তা পেতে হলে সরকারকে আর্থিক খাত সংস্কার ও কার্যকর সুশাসন প্রতিষ্ঠার শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ। ব্যাংকে সুদহারের সীমা তুলে দেয়ার পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসাবায়নে সংস্কার আনারও তাগিদ দিয়েছিল বহুজাতিক ঋণ সংস্থাটি। ছিল রাজস্ব খাতের সংস্কার, ভর্তুকি বন্ধের মতো কঠিন শর্তও। এ অবস্থায় আইএমএফের কাছ থেকে ঋণগ্রহণ নিয়ে দোদুল্যমানতা পরিস্থিতির তৈরি হয়। অস্বস্তি কাজ করে সরকারি নানা সংস্থায়ও। এফবিসিসিআই, বিজিএমইএর মতো ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতারাও এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। অবশেষে সকল বাধা কাটিয়ে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের অর্থনীতিতে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেটি কাটাতে আইএমএফসহ দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ঋণ নেয়ার কোনো বিকল্প নেই। ঋণপ্রাপ্তিতে যত দেরি হবে, বৈদেশিক মুদ্রার সংকটও তত গভীর হবে। আইএমএফের ঋণ নিশ্চিত হলে তাতে বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা যাবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর প্রতি তৈরি হওয়া বিদেশী ব্যাংকের আস্থার ঘাটতিও কেটে যাবে।
ঠিকানা/এসআর