নিজস্ব প্রতিনিধি : চিন বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সড়ক, মহাসড়ক, বড় ব্রিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ ছাড়াও পদ্মা ব্রিজ, পায়রা সমুদ্রবন্দর, দেশের দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনে তাদের বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। সামরিক খাতে অধিকাংশ ক্রয়ই হয় চীন থেকে। চীনের এই বিনিয়োগ বাংলাদেশের যোগাযোগ-অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখলেও আঞ্চলিক রাজনীতিতে এর বিভিন্নমুখী প্রভাব-প্রতিক্রিয়া সরকারকে চিন্তিত রেখেছে। বাংলাদেশ নিয়ে চীনের এই অতিমাত্রায় আগ্রহ ও বিপুল সহযোগিতার বিষয়টি প্রতিবেশী ভারত সহজভাবে নেয়নি।
চীন বাংলাদেশকে আরো দেড় লাখ কোটি টাকার সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। গত ১৮ এপ্রিল সড়ক, মহাসড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ঢাকাস্থ চীনা রাষ্ট্রদূত তার সরকারের এই আগ্রহের কথা জানান। চীনা রাষ্ট্রদূত স্বউদ্যোগী হয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেননি। মন্ত্রী তাকে সচিবালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ডেকেছিলেন। আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে ভারত সফরে যাওয়ার বিষয়ে তাকে অবহিত রাখা হয়। এ সফর নিতান্তই আন্তদলীয় এবং বিজেপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে বলে জানানো হয়।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, চীন বাংলাদেশের ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে মেট্রো রেল, ফ্লাইওভার, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু অথবা টানেল নির্মাণে আগ্রহী বলে জানানো হয়। ঢাকা শহরে আরো দুটি মেট্রো রেল ও চট্টগ্রাম শহরে দুটি মেট্রো রেল নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ও আর্থিক কারিগরি সহযোগিতার কথা জানানো হয়। চীন আর্থিক ও কারিগরি, মালামাল সরবরাহসহ পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন করে দেবে বলে জানানো হয়। মেট্রো রেল প্রকল্প জাপান বাস্তবায়ন করছে এবং ঢাকা শহরে আরো একটি মেট্রো রেল নির্মাণের প্রস্তাব এরই মধ্যে দিয়েছে বলে জানানো হয়। জাপানকে বিমুখ করতে সরকারের সীমাবদ্ধতার কথা জানানো হয়। কর্ণফুলী টানেলের মতো মাওয়া-পাটুরিয়া বা সুবিধাজনক কোনো স্থানে টানেল নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর সমান্তরাল রেল সেতু নির্মাণে সহযোগিতার প্রস্তাব করলে তাতেও সম্মতি জানানো হয়। অবকাঠামোগত নতুন কী খাতে সহযোগিতা করা যায়, তা চিহ্নিত করতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ভারত। বাংলাদেশে চীনের বিপুল বিনিয়োগে ভারত এরই মধ্যে সংশয় প্রকাশ করেছে। কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর জটিল বিষয়টি সরকার এ পর্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়ে এসেছে। চীনা কূটনীতিকে ডেকে এনে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে এ উদ্দেশ্যেই।