ঠিকানা রিপোর্ট: গত ৩ মে ছিলো ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রেস ফ্রিডম এবং সাংবাদিকদের ন্যায্য বেতনের দাবি করে দিবসটি সাড়ম্বরে পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মিডিয়ার স্বাধীনতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে বাংলাদেশে মিডিয়ার স্বাধীনতা কমে এসেছে এবং অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে ১৪৬। অর্থাৎ বাংলাদেশের মিডিয়ার কণ্ঠ রোধ করে রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয় শেখ হাসিনার আমলেই ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে ১৫ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক এ সংখ্যা অনেক বেশি এবং অতীতে এত বেশি সংখ্যক সাংবাদিক খুন হননি। একই সময়ে বাংলাদেশে ৯২৮ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন, ২৮৪ জন সাংবাদিক নিগৃহীত হয়েছেন, ৩৫০ জন সাংবাদিককে হুমকি দেয়া হয়েছে এবং ৮২ জন সাংবাদিকের উপর হামলা করা হয়েছে তাদের দায়িত্ব পালনের সময়।
বার্মাতেও সাংবাদিকদের অবস্থা ভাল নয়। পাকিস্তান এবং ভারতেও এবার সাংবাদিক খুন হয়েছে। ইন্দোনেশিয়াতেও সাংবাদিকদের উপর হামলা বেড়েছে। ২০১৬ সালের মে মাস থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় ৭২ জন সাংবাদিকদের হামলা হয়েছে।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্য হচ্ছে সাংবাদিকদের জন্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা যে কোনো সমাজের মৌলিক চাহিদা হলেও মধ্যপ্রাচ্যের স্বৈরাচারী শাসকদের নির্যাতনে সাংবাদিকগণ প্রায় নিশ্চুপ থাকতে বাধ্য হন। কোনো বিপদ ছাড়া মিডিয়ার প্রতিবেদকদের পক্ষে কোনো প্রতিবেদন তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এ বছরে এখন পর্যন্ত বিশ্বে ১৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ায় ২, মার্চে গাজায় ২, জানুয়ারিতে ইয়েমেনে ১ জন সাংবাদিক মারা গেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের কারাগারগুলোতে শতাধিক সাংবাদিক আটক রয়েছেন। মিসর, সৌদি আরব, বাহরাইন, আমিরাত, ইরান, লিবিয়া, সিরিয়া, তুরস্ক, কুয়েত ও মরক্কোয় কারাগারে সাংবাদিকরা আটক রয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইয়েমেন হচ্ছে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বপালন করার জন্যে খুবই বিপজ্জনক স্থান। দেশটিতে মিডিয়া চালানোর মত তহবিল সংকটও প্রকট।
এরপরও সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দুর্নীতি এবং মিডিয়ার অনুসন্ধানে নানাবিধ তথ্য-উপকরণ বেরিয়ে আসার পরও তা সহজে তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে না।