বাংলাদেশ তথা সর্বত্র মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি: মুখপাত্র

ঠিকানা অনলাইন : বাংলাদেশ তথা বিশ্বের সব জায়গায় মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি। দেশটির পক্ষে এমন অভিমত তুলে ধরেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার অনুষ্ঠিত স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস দেশটির পক্ষে এমন বক্তব্য দেন। ব্রিফিংয়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবং দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও উপস্থিত ছিলেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলাদেশ বিষয়ে প্রশ্নোত্তর হুবহু বাংলায় প্রকাশ করা হলোঃ
প্রশ্নঃ ধন্যবাদ, নেড। সংবাদপত্র বা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়মুক্তি বন্ধ করার জন্য আমরা যখন আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন করছি তখন বাংলাদেশ সরকার অন্তত ২০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তালিকা করেছে যারা দেশের বাইরে থেকে স্বাধীন সাংবাদিকতা বা বাকস্বাধীনতার চর্চা করছেন। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) অনুযায়ী কেউ প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করতে পারে না। এই আইন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কোনো পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা প্রদান করে। সবমিলিয়ে আপনার মন্তব্য কি?

নেড প্রাইসঃ আমরা এর আগেও বাংলাদেশে রাজনৈতিক চর্চার জায়গা সংকীর্ণ হয়ে যাওয়া, নাগরিক অধিকারের পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আমি আগেও যে কথাটি বলেছি তা হলো, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জন্যই এটা প্রযোজ্য যে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, তথ্যের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা – এগুলো সবই সার্বজনীন অধিকার। সার্বজনীন এই অর্থে যে এগুলো কোনও একটি নির্দিষ্ট দেশের ক্ষেত্রে অনন্য নয়।

এগুলো যে কোন জায়গায় যে কোন মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যে কোনো স্থানে, সর্বত্র এই অধিকারগুলোকে সমুন্নত রাখা এবং রক্ষা করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি। আমরা এগুলো প্রকাশ্য বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়ে থাকি, কিন্তু যখন আমাদের উদ্বেগ থাকে তখন আমরা এগুলো ব্যক্তিগতভাবেও প্রকাশ করি।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে নিয়ে আরও একটি প্রশ্ন। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোটাধিকারের দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ সমাবেশ করলেও সরকার নানাভাবে সেগুলোতে বাধার দিচ্ছে। সম্প্রতি সরকার বিরোধী দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা জনাব তারেক রহমান এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। তার স্ত্রী কেবলই একজন চিকিৎসক, রাজনীতির সাথে যুক্ত নন। তারা যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত। সরকার জনগণের কণ্ঠ নিয়ন্ত্রণের জন্য একের পর এক মামলা করছে। বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং ভোটাধিকারের দাবির বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

নেড প্রাইসঃ আমি সুনির্দিষ্টভাবে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা বা গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে কথা বলার মতো অবস্থানে নেই। তবে আমি আগে যে পয়েন্টটি উল্লেখ করেছি- গণতন্ত্রে গতিশীল আলাপ-আলোচনা, নাগরিকের অংশগ্রহণ, নাগরিক অধিকার, যুক্তি-তর্কের স্থান অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হউক বাংলাদেশ কিংবা বিশ্বের যে কোনো জায়গায়। আমরা যখন দেখবো এসকল পথ রুদ্ধ হচ্ছে, অধিকার খর্ব হচ্ছে তখন আমাদের যথাযথ উদ্বেগ সামনে নিয়ে আসতে পিছপা হবো না।

ঠিকানা/এসআর