ঠিকানা ডেস্ক : এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইবার চুরির ঘটনায় নাম জড়ানোয় ‘মানহানি’ হয়েছে অভিযোগ তুলে ব্যাংকটি এ মামলা করেছে। গত ১২ মার্চ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি জালিয়াতির মাধ্যমে সুইফট লেনদেন মাধ্যম ব্যবহার করে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করা হয়। ওই অর্থ ম্যানিলাভিত্তিক আরসিবিসি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিলো। পরে সেখান থেকে ক্যাসিনোর মাধ্যমে সেই অর্থ উধাও হয়ে যায়।
আরসিবিসি বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও ভাবমূর্তির ওপর ‘অশুভ ও গণহামলা’ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি পেসো (১৯ লাখ ডলার) দাবি করা হয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভেও চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে গত ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত মাসে ফেডারেল রিজার্ভ জানিয়েছিলো, মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংককে তারা সহযোগিতা করবে। এ জন্য তারা ‘কৌশলগত সহযোগিতা’র প্রস্তাব দিয়েছিলো।
গত ৬ মার্চ ফিলিপাইনের একটি দেওয়ানি আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছে আরসিবিসি।
গত ১২ মার্চ, মঙ্গলবার, এক বিবৃতিতে আরসিবিসি বলেছে, ‘মানহানি, হয়রানি ও আরসিবিসির সুনাম, খ্যাতি ও ভাবমূর্তি নষ্টের হুমকি দিয়ে ফরিয়াদি আরসিবিসির কাছ থেকে অর্থ আদায়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বড় ধরণের ক‚টচাল ও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।’ এতে আরো বলা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আরসিবিসির কাছে যেই অর্থ নেই অথবা ঋণ নেয়নি, সেই অর্থ আদায় করা।
আরসিবিসির মামলা সময়ক্ষেপণের কৌশল : ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন-আরসিবিসি ‘মানহানির’ অভিযোগ এনে যে মামলা করেছে, তাকে সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, তাদের ওই মামলা নিয়ে আমরা মোটেও উদ্বিগ্ন নই। আমাদের টাকা উদ্ধারের জন্য সব ধরণের চেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখবো।
তিনি আরো বলেন, আরসিবিসি আক্রোশের বশবর্তী হয়ে ওই মামলা করেছে। বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য আরসিবিসির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা হওয়ার পর নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, ফিলিপাইন সরকারসহ বিভিন্ন মহল থেকে আরসিবিসিকে চাপ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের আইনি লড়াই চলছে। নিউ নিয়র্ক ফেডারেল কোর্টে মামলা শুরু করে দিয়েছি। আগামী ২ এপ্রিল মামলার ডেট আছে। তার আগে যারা এ মামলার বিবাদী পক্ষ আছে, তাদের সাথে আমরা আলোচনায় বসতে যাচ্ছি। সমঝোতার মাধ্যমে যাতে বিষয়টির সম্মানজনক সমাধান হয়, সেজন্যই আলোচনায় বসতে যাচ্ছি।