বাংলার গায়েন ইউএসএ : নিউইয়র্কের খায়রুল ইসলাম সবুজ চ্যাম্পিয়ন

ঢাকা অফিস : অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হলো আরটিভির সংগীতের রিয়েলিটি শো বাংলার গায়েন ইউএসএ-এর গ্রান্ড ফিনালে। এবারের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন নিউয়র্কের খায়রুল ইসলাম সবুজ। রাজধানী ঢাকার বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিওতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়নের হাতে পুরস্কার ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকসহ বিচারকমন্ডলী এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। চূড়ান্তভাবে মনোনীত ১১ প্রতিযোগী এদিন পারফরমেন্স করেন।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলার গায়েন ইউএস অনুষ্ঠান বাংলার লোকসংগীতের সঙ্গে প্রবাসী তরুণ প্রজন্মের মেলবন্ধন তৈরি করবে। তারা প্রবাসে থেকেও বাংলা গানের চর্চা করে, বাংলা গানকে এত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করলো, তা দেখে সত্যি খুবই ভালো লাগছে। আরটিভিকে ধন্যবাদ এত সুন্দর আয়োজনের জন্য।
এ সময় আরটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোরশেদ আলম বলেন, প্রবাসীদের শেকড়ে ফেরা ও বাংলা সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে এবং বিশ্বের সব মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতেই আরটিভির এই আয়োজন। আজীবন বাংলা গান ও বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসার আহ্বান জানান শিল্পীদের প্রতি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট ও আরটিভির ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিমউদ্দিন বলেন, আমি তোমাদের গান শুনে মুগ্ধ হয়েছি। অনেকেই ভালো বাংলা বলতে পারে না, কিন্তু এত সুন্দর বাংলা গান গাওয়া সত্যি অসাধারণ। বাংলার গায়েন ইউএস-এর এই আয়োজন নতুন একটি মাত্রা তৈরি করেছে। আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি উৎসব গ্রুপ এবং অন্যান্য স্পন্সর কোম্পানিকে, যারা এ আয়োজনের সাফল্যে নেপথ্য অবদান রেখেছেন। এ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বাংলা গান নিয়ে বিভিন্ন দেশে আগ্রহ সৃষ্টি হবে। আমরা চাই তোমাদের প্রতিভার মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে তোমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করো।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সহকারী মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেন, বাংলার গায়েনের প্রতিযোগীদের পারফরমেন্স, তাদের গান শুনে আমি অভিভূত। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের মধ্যে এ অনুষ্ঠান বেশ সাড়া যুগিয়েছে। তরুণ শিল্পীরা এতে অনেক অনুপ্রেরণা পাবে। আরটিভিকে এত সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
এ ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আমেরিকা ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব আরো সুদৃঢ় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরটিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবীর বাবলু বলেন, আমরা সোসাল মিডিয়ায় এক হাজারের বেশি গানের ক্লিপ পাই। সেখান থেকে বাছাই করা হয় প্রাথমিকভাবে এবং পরবর্তী কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে ফাইনাল রাউন্ড। আমরা এবার অসাধারণ কিছু তরুণ শিল্পীকে আবিস্কার করতে পেরেছি। সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করলেও তাদের পরিবেশনের মাধ্যমে বাংলা গানের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও আগ্রহ দেখতে পেয়েছি। যা আমাদের দারুণ অভিভূত করেছে। প্রতিযোগীদের পারফরমেন্সের মাধ্যমে বাংলার গায়েনের অন্ষ্ঠুানটি টেলিভিশন ও সোসাল মিডিয়ায় অনেক রেসপন্স পেয়েছি।
এ সময় আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আরটিভির বাংলার গায়েনের বাংলাদেশে প্রথম সিজনে আমরা দর্শকদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রবল আগ্রহের কারণে আমরা বাংলার গায়েন ইউএস আয়োজন করেছি। আমরা তাদের প্রতিভাকে সারাবিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরতে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছি। আমরা এখান থেকে ভালো কিছু শিল্পী পেয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, আগামীতে তারা বাংলাদেশের সংগীত জগৎকে সমৃদ্ধ করবে। আরটিভি ভবিষ্যতেও এ ধরণের আরো অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অডিশনের মাধ্যমে তিনশ’র বেশি প্রতিযোগীর মধ্য থেকে ১১ জন শিল্পীকে বাছাই করা হয়। যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত তরুণ শিল্পীদের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগসূত্র স্থাপন হয়। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাঙালি নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা সংস্কৃতি, দেশ ও মাটির সুর ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়াসে পরবর্তীতে ঢাকায় চলে কয়েক রাউন্ডের প্রতিযোগিতা। এতে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইমন সাহা, শওকত আলী ইমন ও আঁখি আলমগীর। গ্রান্ড ফিনালেতে শিল্পীরা সুরের জাদুতে তাদের অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন।
গ্রান্ড ফিনালেতে ফাস্ট রানার আপ হন নিউয়র্কের চন্দ্রা রায়, সেকেন্ড রানার আপ হন যৌথভাবে নিউইয়র্কের আলভান চৌধুরী ও বাফেলোর নাজিয়া রহমান।